পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>b点 ভারতবর্ষ । বংশের সেনাপতি ভট্টারক বিদ্যমান ছিলেন। তোরমানের মুদ্রাদির কাল-গণনার বিষয় আলোচনা করিয়া, তিনি ৩১৯ খৃষ্টাব্দে ঐ সকল মুদ্রার কাল-নির্দেশ করেন । ১৮৮০ খৃষ্টাব্দে পুনরায় জেনারেল কানিংহাম এই প্রসঙ্গের আলোচনায় প্ৰবৃত্ত হন। তখন তিনি সিদ্ধান্ত করেন,-১৬৭ খৃষ্টাব্দ হইতে গুপ্ত-কাল গণনা আরম্ভ হয় ; কিন্তু ১৬৬-৬৭ খৃষ্টাব্দে ঐ কালের সূচনা। তঁহার এই সিদ্ধান্তের প্রধান অবলম্বন-সমুদ্র-গুপ্তের রাজত্ব-কাল। দুইটী কারণে জেনারেল কানিংহাম সমুদ্র-গুপ্তের রাজত্বকাল-গণনার প্রতি বিশেষরূপে নির্ভর করিয়া থাকেন। প্রথম-সমুদ্র-গুপ্তের লিপিতে দৈবীপুত্র, শাহী, শাহানুশাহী অর্থাৎ ইয়েচি, ইন্দোসিদীয়, কনিক্ষ, হবিস্ক, বাসুদেব এবং তঁহাদের বংশধরদিগের নিকট হইতে করগ্রহণের বিষয় উল্লিখিত আছে। তাহাতে প্ৰতিপন্ন হয়, কনিক্ষ প্ৰভৃতি সমুদ্রগুপ্তের এবং তঁহার পরবৰ্ত্তিগণের সমসাময়িক ছিলেন। দ্বিতীয়-চীনাদিগের গ্ৰন্থ-পত্রে ২২০ খৃষ্টাব্দ হইতে ২৮০ খৃষ্টাব্দের মধ্যে ‘ইয়ে-চি’ জাতি চীনের সম্রাটকে নিহত করিয়া তাহদের সেনাপতিকে সিংহাসনে প্ৰতিষ্ঠিত করে। উভয় ঘটনাব সমালোচনায় জেনারেল কানিংহাম সিদ্ধান্ত করেন,-“ইয়ে-চি” সম্রাট নিহত হইবার পূর্বে সমুদ্র-গুপ্ত সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন। আর সে হিসাবে, সমুদ্রগুপ্তের পিতা প্ৰথম চন্দ্ৰ-গুপ্তের বিদ্যমানত খৃষ্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দীর শেষভাগে সপ্ৰমাণ হয়। এস্থলে কানিংহাম চীনাদিগের গ্ৰন্থ-পত্রের অনুসরণে গুপ্ত-বংশেব কাল-নিরূপণে প্ৰয়াস পাইয়াছেন। কিন্তু অন্যান্য প্রত্নতত্ত্ববিদের মতে,-গুপ্ত-কালের দ্বারা চীনাদিগের কাল-গণনাপদ্ধতির সংশোধন করাই সমীচীন। যাহা হউক, সপ্তম শিলাদিত্যের “এলিনা’ দানলিপিতে ১৬৪ খৃষ্টাব্দ হইতে ১৮০ খৃষ্টাব্দের মধ্যে গুপ্ত-কাল নির্দিষ্ট আছে। পূর্বোক্ত সিদ্ধান্তের অনুসরণে, ১৮০ খৃষ্টাব্দ হইতে ২০০ খৃষ্টাব্দের মধ্যে কানিংহাম গুপ্ত-কাল নির্দেশ করিয়াছেন। এই আলোচনা-প্রসঙ্গে অধ্যাপক ভাউদজির মন্তব্যের প্রতি কানিংহামের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়। তদনুসারে এবং বুদ্ধ-গুপ্তের ইরান-স্তম্ভলিপির অনুসরণে, কানিংহাম ১৬৬-৬৭ খৃষ্টাব্দে গুপ্ত-কালের সুচনা ধরিয়া ১৬৭-৬৮ খৃষ্টাব্দে কাল-গণনার আরম্ভ নির্দেশ করেন। কিন্তু তাহাতে মহারাজ হস্তিনের ও সংক্ষোভের লিপি-বর্ণিত ‘মহাবৈশাখ, মহা-অশ্বায়ুজ ও মহাচৈত্র সংবৎসরের সহিত সামঞ্জস্য রক্ষিত হয় না। তাই পুনরায় তিনি মত-পরিবর্তনে বাধ্য হন। এইরূপ, সকল বিষয়ের সামঞ্জস্য সাধন জন্য কানিংহাম ১৬৩ খৃষ্টাব্দের পরিবর্তে ১৭৩ খৃষ্টাব্দ গুপ্ত কালের প্রারম্ভ স্বীকার করেন। কিন্তু কানিংহামের এ সিদ্ধান্তও যে প্ৰমাণসাপেক্ষ, পরবর্তী আলোচনায় তাহ প্ৰতিপন্ন হইবে। কানিংহাম স্থলবিশেষে আলবারুণির সিদ্ধান্তের অনুসরণ করিয়াছেন। সেই অনুসরণের ফলে তিনি ৩১৯ খৃষ্টাব্দে বহলভী-রাজ্যে গুপ্ত-বংশের উচ্ছেদের বিষয় স্বীকার করেন । সে মতে বুঝা যায়,-বহুলভী-বংশের সেনাপতি ভট্টারক সে সময়ে সৌরাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠাপন্ন ছিলেন। তিনিই সৌরাষ্ট্র হইতে গুপ্ত-গণকে বিতাড়িত করেন। তদনুসারে স্কন্দ-গুপ্তের মৃত্যুর পর, ৩১৯ খৃষ্টাব্দে, বান্ধবী-সংবতের প্রবর্তন সাব্যস্ত হয়।