পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৩০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sobo ভারতবর্ষ । বৈদেশিকগণ প্ৰবেশ করিতে সমর্থ হয় নাই। পরে একাদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে, গজনীর মামুদের আক্রমণে, ভারতের সেই সাম্যে বৈষম্য আনয়ন করে। পাঁচ শতাব্দীকােল ভারত নিরাপদে তাহার বিভিন্নমুখী উন্নতি সাধনে যত্নবান হয়। এই পাঁচ শত বৎসরের মধ্যে, মৌৰ্য্য-সম্রাট চন্দ্ৰগুপ্ত বা অশোকের ন্যায় অথবা গুপ্ত-নৃপতিগণের বা হর্ষের ন্যায় পরাক্রমশালী এমন কোনও রাজার পরিচয় প্ৰাপ্ত হই না, ভারতের একছত্ৰ সম্রাট বলিয়া র্যাহার নাম উল্লেখ করিতে পারি। এই সুদীর্ঘ সময়ের মধ্যে, ৮৪০-৮৯০ খৃষ্টাব্দের মধ্যে, কনৌজের মিহিরভোজ একবার উত্তর ভারত আয়ত্ত করিয়াছিলেন, শুনিতে পাই । কিন্তু তঁাহার রাজত্বের বা তঁহার পরিচায়ক কোনও ঐতিহাসিক সাক্ষ্যের সন্ধান পাই না । তখন ভারত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্ৰ খণ্ড-রাজ্যে বিভক্ত হইয়া পড়িয়াছিল। সেই সকল খণ্ড-রাজ্য স্বাধীনতা অবলম্বনে স্ব স্ব প্রাধান্য প্রতিষ্ঠায় পবস্পর দ্বন্দ্বে নিযুক্ত ছিল। তখন কলিঙ্গ, কামরূপ, কাশ্মীর, নেপাল, উজ্জয়িনী, মধ্যভারত, সিন্ধ, পাঞ্জাব প্ৰভৃতি বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জনপদের পরিচয় পাই । আর সেই সকল জনপদ প্ৰাধান্য-প্রতিষ্ঠার অন্তর্বিপ্লবে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন ও হীন-বলা হইয় পড়ে । একতাই যে শক্তি-সঙ্ঘ-শক্তিই যে প্রতিষ্ঠার মূল সূত্র, তখন তাহারা সে নীতি-সুত্ৰ হারাইয়া ফেলিয়াছিলেন। র্তাহারা ভুলিয়া গিয়াছিলেন যে,-নগণ্য হইলেও বহু তৃণের সমবায়ে যে রজ্জ্ব নিৰ্ম্মিত হয়, সে রজজুর দ্বারা মত্তহস্তীকেও বন্ধন করা যাইতে পারে । সজঘ-শক্তির অভাবেই ভারত শত্রুর পদানত হয়। অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হিন্দু রাজ্যের বিচ্ছিন্নতা নিবন্ধন আরব, তুরস্ক, আফগান প্রভৃতি জাতি অনায়াসে বা অল্পায়াসে তাঁহাকে পুনঃপুনঃ বিপৰ্য্যস্ত করিতে থাকে। সাহিত্য-সম্পাদই দেশের উন্নতির নিদর্শন। গুপ্তগণের রাজত্ব-কালে যে আদর্শ-সাহিত্যের স্বষ্টি হইয়াছিল ;-এ সময় সে আদর্শ-সাহিত্যের সম্পূর্ণ অভাব দেখিতে পাই । বিভিন্ন খণ্ডরাজ্যে সাহিত্যের উন্নতি-কল্পে উৎসাহ-দানের ক্রটি ছিল না। সত্য ; কিন্তু কালিদাস প্ৰভৃতির আদশ, সে সময় অল্পই পরিলক্ষিত হয় । এইরূপে ক্রমে সাহিত্যের অবনতি হইতে থাকে । ধৰ্ম্ম-সম্পর্কেও সেই একই ভাব প্রত্যক্ষ করি। বৌদ্ধধৰ্ম্মের প্রসার তখন ক্রমেই খৰ্ব্ব হইয়া আসিতেছিল । কেবলমাত্র মগধে পাল-বংশের ধৰ্ম্মপালের এবং তঁাহার বংশধরগণের পৃষ্ঠপোষকতায় বৌদ্ধ-ধৰ্ম্ম দ্বাদশ শতাব্দী পৰ্য্যন্ত আপনার অস্তিত্ব বজায় রাখিতে সমর্থ হইয়াছিল। পরিশেষে বৌদ্ধধৰ্ম্ম বিলুপ্ত হইয়া হিন্দুধৰ্ম্মের সঙ্গে মিশিয়া গেল। আর হিন্দুধৰ্ম্মের সহিত অঙ্গে অঙ্গ মিশাইয়া, হিন্দুধৰ্ম্মের অসংখ্য শাখা-প্ৰশাখার স্বষ্টি করিল। সাহিত্যে এবং ধৰ্ম্মে অবনতির সঙ্গে সঙ্গে সমাজ-নীতির, শিল্প-সৌন্দৰ্য্যের এবং কারুচাতুৰ্য্যেরও অবনতি সঙ্ঘটিত হইল। ফলতঃ, হৰ্ষবৰ্দ্ধানের লোকান্তরে খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দী হইতে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যে, ভারতের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সমাজনৈতিক বিবিধ পরিবর্তন সংঘটিত হইল। ভারত ক্ৰমশঃ অবনতির পথে অগ্রসর হইতে লাগিল । muuhungumu i monumu