পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৩১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বাধীন বঙ্গের স্বাধীন নৃপতি । ७०१ রামাবতী-পালরাজবংশের শেষ রাজধানী। রামপালের কনিষ্ঠ পুত্ৰ মদনপালের রাজ্যকালেও রামাবতী গৌড়রাজ্যের রাজধানী ছিল । খৃষ্টীয় ষোড়শ শতাব্দীতে রামাবতী নগরী বিদ্যমান ছিল-আবুল ফজলের ‘আইনি আকবরিতেও’ তাহার উল্লেখ আছে। রামাবতী স্থাপনের পর রামপালদেব উৎকল ও কলিঙ্গ জয় করিয়াছিলেন । প্ৰকাশ,-রামপালের একজন সেনাপতি কামরূপ জয় করিয়াছিল। " t বুদ্ধবয়সে রামপালদেব জ্যেষ্ঠপুত্র রাজ্যপালদেবের হস্তে রাজ্যভার অৰ্পণ করিয়া রামাবতীতে বাস করিয়াছিলেন। রামপাল ৬৪ বৎসর গৌড়ের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন। রামপালের তিন পুত্রের মধ্যে জ্যেষ্ঠপুত্র রাজ্যপাল পিতার জীবিতকালেই লোকান্তরগমন করেন । রামপালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুত্ৰ কুমারপাল ও মদনপাল যথাক্রমে গৌড়ের সিংহাসনে जभनौन्म झुन् । কুমারপালের রাজা হইবার কিছু পরেই নববিজিত কামরূপ রাজ্যে সামন্তরাজ তিঙ্গদেব বিদ্রোহী হইয়াছিলেন । উৎকালরাজ অনন্তবৰ্ম্মা চোড়িগঙ্গ গৌড়রাজ্য আক্রমণ করিয়াছিলেন। কমৌলিতে আবিস্কৃত বৈদ্যদেবের তাম্রশাসন হইতে অবগত হওয়া যায় যে,-রামপালদেবের মন্ত্রী বোধিদেবের পুত্ৰ বৈদ্যদেব কুমারপালের মন্ত্রী ছিলেন। বৈষ্ঠদেবের তাম্রশাসনে কুমারপালের রাজ্যাকালের ঘটনাবলির মধ্যে সৰ্ব্বপ্রথমে দক্ষিণ-বঙ্গে নীে-যুদ্ধের উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়। এই সময়েই বোধ হয় অনন্তবৰ্ম্মা চোড়গঙ্গের সাহায্যে বিজয়সেন দক্ষিণ-বঙ্গ অধিকার করিয়া লন। কুমারপালদেব অল্পকাল রাজত্ব করিবার পর পরলোক গমন করেন । কুমারপালের মৃত্যুর পর গোপালদেব গৌড়ের সিংহাসনে অধিরোহণ করিয়াছিলেন। তিনি শৈশবেই গুপ্ত-ঘাতকের হস্তে নিহত হন । কুমারপালদেবের স্ত্রী বা অন্য কোনও পুত্রের নাম এ পৰ্যন্ত জানা যায় নাই। তঁহার কোনও শিলালিপি বা তাম-শাসন ও আজি পৰ্য্যন্ত পাওয়া যায় নাই । তৃতীয় গোপালদেবের মৃত্যুর পর রামপালদেবের কনিষ্ঠ পুত্ৰ মদনপাল গৌড়-সিংহাসন লাভ করেন । মদনপাল বোধ হয় শিশু ভ্রাতুষ্পপুত্রকে হত্যা করিয়া সিংহাসন-লাভের পথ প্রশস্ত করিয়াছিলেন । তৃতীয় গোপালদেবের রাজত্ব-কালের একখানি শিলালিপি রাজসাহী জেলায় আবিষ্কৃত হইয়াছে। কিন্তু তােহা নানারূপ ভুল-ভ্ৰাস্তিতে পূর্ণ বলিয়া এবং একরূপ দুৰ্বোধ্য হওয়ায় তাহার অনুবাদ একেবারে অসম্ভব হইয় পড়িয়াছে। ke 米 বিবিধ প্ৰসঙ্গ । মদনপালের রাজত্ব-কালে পাল-সাম্রাজ্যের সীমা অত্যন্ত ক্ষুদ্র হইয়া পড়িয়াছিল। মাত্র মগধের পুর্বাংশ তখন পালরাজগণের অধীন ছিল। তৃতীয় গোপালদেবের লোকান্তরের পরই বৈদ্যদেব কামরূপের স্বাধীন রাজা বলিয়া ঘোষিত হন । রাঢ় এবং বঙ্গের অন্যান্য অনেক অংশ পূর্বেই বিজয়সেনের হস্তগত হইয়াছিল। এক্ষণে বিজয়সেন ক্রমে গঙ্গা পার হইয়া বরেন্দ্ৰ-ভূমির দক্ষিণাংশ অধিকার করিলেন।