পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গুপ্ত-প্ৰাধান্যের প্রাকালে ভারতের বাণিজ্য । ዓ¢ রোম প্রভৃতি-পৃথিবীর ইতিহাসে যাহারা সভ্য সমুন্নত জনপদ বলিয়া প্ৰসিদ্ধি-সম্পন্ন ; সেই সভ্য-দেশেও ভারতের প্রভাবের-ভারতের শ্রেষ্ঠত্বের যথেষ্ট নিদর্শন আজি পৰ্যন্ত বর্তমান য়াহিয়াছে! এককালে পৃথিবীর সর্বত্ৰ ভারতেব আধিপত্য বিস্তৃত হইয়াছিল, এককালে পৃথিবীর সর্বত্র বাণিজ্য-সুত্রে ভারতের গতিবিধি ছিল,-“পৃথিবীর ইতিহাসের’ আলোচনায় আমরা পুনঃপুনঃ প্ৰদৰ্শন করিয়াছি। * ব্যক্ষ্যমাণ-প্রসঙ্গে আমরা গুপ্ত-বংশের অভু্যদয়ের প্রাক্কালে ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থার কিঞ্চিৎ আভাস প্রদানের প্রয়াস পাইতেছি। 镰 অর্ণবপোতের কথা । আলেকজাণ্ডারের সমসাময়িক বাণিজ্য-প্ৰভাবের পরিচয় চন্দ্ৰগুপ্তাদির প্রসঙ্গে পরিবর্ণিত হইয়াছে।। ৩২৫ পূর্ব-খৃষ্টাব্দে মহাবীর আলেকজাণ্ডার ভারতে আগমন করেন। তখন নীেবাহিনীর, অর্ণবযানের প্রাচুৰ্য্যের অবধি ছিল না। ইতিহাস সে সাক্ষ্য প্ৰদান করিতেছে। তখন আলেকজেণ্ডারের সৈন্যদল অর্ণবপোতের সাহায্যে সিন্ধুনদ পাের হইয়াছিল। সিন্ধু-নদের ‘হাইডাসপাস’ ( Hydespas) নামক অন্যতম শাখা পার হইবার সময় আলেকজাণ্ডারের সৈন্যগণ অসংখ্য নৌবাহিনীর সাহায্য প্ৰাপ্ত হইয়াছিল। সিন্ধু-নদের মোহানায় এবং পারস্য উপসাগরে গতিবিধি সময়ে আলেকজাণ্ডারের নীেসেনাপতি নিয়ার্কাস অসংখ্য তীর্ণবপোতের সহায়তা লাভ কবিয়াছিলেন। ভারতীয় শিল্পিগণের নিৰ্ম্মিত, ভারতীয় নাবিকগণে। পরিচালিত, সেই সকল পোতে র্তাহার আট সহস্র সৈন্য, কয়েক সহস্ৰ অশ্ব এবং বহুতর রসদাদি সংবাহিত হইয়াছিল। এরিয়ান, কাটিয়াস, ডিওডোরাস প্রভৃতি ঐতিহাসিকগণ এতদ্বিষয় সপ্ৰমাণ কবিয়াছেন। তঁহাদের কেহ বা আট শত, কেহ বা এক সহস্র ভারতীয় পোতের উল্লেখ করিয়া গিয়াছেন । 瑞 মৌৰ্য-প্ৰাধান্যে উৎকর্ষ। মৌৰ্য-সম্রাট চন্দ্রগুপ্তের ও অশোকের এবং তঁহাদের বংশধরগণের রাজত্বকালে, ভারতের বাণিজ্য উন্নতির উচ্চ চূড়ায় সমাসীন হইয়াছিল। চাণক্যের ‘অর্থশাস্ত্রে’ এবং অশোকের লিপিপ্ৰভৃতিতে তাহার অশেষ নিদর্শন বিদ্যমান। মৌৰ্য-বংশের রাজত্বকালে গ্রীকদূত মেগাস্থিানীস কিছুকাল ভারতে অবস্থান করিয়াছিলেন। র্তাহার বর্ণনায় প্ৰকাশ,-তৎকালে মৌৰ্য্যগণের পোতনিৰ্ম্মণালয়ে সমুদ্রগামী অর্ণববোত ও যুদ্ধতরণী প্ৰভৃতি নিৰ্ম্মিত হইত ; আর পোত-নিৰ্ম্মাণ-জন্য বেতনভোগী কৰ্ম্মচারী ও শিল্পিকারিকর প্রভৃতি নিযুক্ত ছিল। পণ্যব্যবসায়ী বণিকগণ ব্যবসা-বাণিজ্য উপলক্ষে পোতাধ্যক্ষের নিকট হইতে ভাড়া লইতেন। ষ্টাবোর ইতিবৃত্তেও বণিকগণকে পোত ভাড়া দেওয়ার বিষয় বিশেষভাবে উল্লিখিত আছে। চন্দ্রগুপ্তের রাজত্বকালে, মহামতি চাণক্য বৈদেশিকগণের যে সুচারু ব্যবস্থা করিয়াছিলেন,

  • ‘পৃথিবীর ইতিহাস’, ‘ প্রথম খণ্ড, ১৬ ও ৪৬৪ পৃষ্ঠা ; দ্বিতীয় খণ্ড, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ; তৃতীয় খণ্ড, ৬৮-৪৭• পৃষ্ঠা এবং চতুর্থ খণ্ড, ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ প্রভৃতি দ্রষ্টব্য।