পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

X o ভারতবর্ষ | প্রাচীন-ভারতের গৌরবের-ঐশ্বর্য্যের প্রকৃষ্ট পরিচয়—তাহার সাহিত্য । কিন্তু সে সাহিত্যে সেই স্মৃতিই উজ্জ্বল নহে কি ? ভারতের অতীত সাহিত্যের অভ্যস্তরে ঐ যে কোটিস্বৰ্য্যের জ্যোতিঃ বিচ্ছুরিত হইতেছে, তাহাতে অন্ধজনেরও দৃষ্টি-শক্তি ཤྭ༽ཝཱ་ বিকাশ-প্রাপ্ত হয়। স্মৃতির বহির্ভূত দূর অতীতের ইতিহাস দিবা-মানদণ্ডের গণ্ডীর মধ্যে নিবদ্ধ কৱ৷ कधनहे সম্ভবপর নহে । কাল অনন্ত ; কাল-সমুদ্রের অনন্ত-বক্ষে অনন্ত বিক্ষেত অহৰ্নিশ সমুথিত হইতেছে। সংসারে এমন কোনও অদ্বিতীয় ধী-শক্তি-সম্পন্ন ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করেন নাই, যিনি সেই অনন্ত-বিক্ষোভের অনন্ত-লীলা লিপিবদ্ধ করিয়। রাখিতে সমর্থ হন। সহস্রাধিক বর্ষের বিক্ষোভের বিষয় লিপিবদ্ধ করিতেই ইতিহাস পর্যুদস্ত ; অনন্ত-কোটি কল্পের অনন্ত-কোটি বিক্ষোভ-কাহিনী কে লিপিবদ্ধ করিতে সমর্থ হইবে ? সীমাবদ্ধ ধ্যান-ধারণার গণ্ডীর মধ্যে অসীম অনন্তকে ধারণা করিতে অসমর্থ হইয়াই, ঐতিহাসিকগণ ভারতের ইতিহাস নাই? বলিয়। মনে করেন । কিন্তু সত্যই কি প্রাচীন ভারতের ইতিহাস নাই ? ভক্ত বলিয়াছেন,—“আকাশ যদি পত্র হয়, সমুদ্র যদি মসীপাত্র হয়, তাহা হইলেও ভগবানের মহিম লিখিয়া শেষ করা যায় ভারতের না ।” ভারতের ইতিহাস সম্বন্ধেও অনেকটা সেই উক্তিই প্রযোজ্য । ইতিহাস ভারতের ইতিহাস কি ? ভারতের ইতিহাসই তো—ভগবন্মহিমা-ঘোষণা ! ङ् ि? যখনই ধর্মের মানি হইয়াছে, যখনই অধৰ্ম্মের অভু্যত্থান ঘটিয়াছে, আর যখনই শ্ৰীভগবান ধৰ্ম্মরক্ষার জন্য আবির্ভূত হইয়াছেন, তখনই ভারতের সাহিত্যে ভারতের ইতিহাস বিকাশ পাইয়াছে। আধুনিক সাহিত্যে যে সকল ইতিহাস বিকাশ-প্রাপ্ত হইতেছে, তৎসমুদায়ও প্রধানতঃ বিপ্লবের ইতিহাস—সংঘর্ষের ইতিহাস । তবে পার্থক্য—এখন রাজা, রাজ্য, ঐশ্বৰ্য্য লইয়া দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষ উপস্থিত হয় ; কিন্তু প্রাচীন-ভারতের ইতিহাসে সে দ্বন্দ্ৰ— ধৰ্ম্মের প্রাধান্য স্থাপন ভিন্ন অন্ত কিছুই নহে। পৃথিবীর প্রাচীনতম সাহিত্য—বেদের প্রতি দৃষ্টিপাত করুন ; দেখিবেন—ধৰ্ম্ম ও অধৰ্ম্মের সংঘর্ষে ধর্মের বিজয়-দুন্দুভি বাজিয়৷ উঠিয়াছে! ব্রাহ্মণে, আরণ্যকে, উপনিষদে—সৰ্ব্বত্রই সেই দুন্দুভি-নিনাদ । মহর্ষি বাক্ষ্মীকি রামায়ণে যে বীণা-ধ্বনির ঝঙ্কার তুলিয়াছেন, তাহাতেই বা কি মূর্ছনায় কি স্বর-লহরী উথিত হইয়াছে ? শ্ৰীমদ্ভগবদগীতায় হৃষীকেশ পাঞ্চজন্ত-নিনাদে ব্যোম প্রতিধ্বনিত করিয়া কি বাণী ঘোষণা করিতেছেন ? তন্ত্রে, পুরাণে, মহাভারতে—প্রাচীন ভারতের আর আর প্রাচীন ইতিহাসে—কি নিদর্শন প্রকটিত রহিয়াছে ? সকলেরই লক্ষ্য,—অধৰ্ম্মের বিক্ষোভবিদূরণে ধর্মের প্রতিষ্ঠা-স্থাপন। তাহাই কি ভারতের ইতিহাস নহে ? সত্য-ত্রেতা-দ্বাপর-কলি-যুগ-চতুষ্টয়-বিভাগ—কি শিক্ষণ প্রদান করে ? সত্যে মৎস্যকূৰ্ম্ম-বরাহ-নৃসিংহ-বামন, ত্রেতায় ভার্গব-স্ত্রীরাম, দ্বাপরে নরনারায়ণ বাসুদেব, কলিযুগে पूर्ण বুদ্ধ-কষ্কি প্রভৃতি যে অবতার-সমূহের বিবরণ শাস্ত্র-গ্রন্থাদিতে লিপিবদ্ধ \g রহিয়াছে, তাহাতেই বা কি বুঝিতে পারি ? বুঝিতে পারি না কি— . " ভারতের ইতিহাসের এক একটি স্তর—সেই এক একটি অবতার-তত্ত্বে প্রকটিত । অবতার-তত্ত্ব পর্য্যালোচনা করিলে, আমরা বুঝিতে পারি,–সংসার যখন