পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/২০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতবর্ষ। : מלכי প্রকাশ-পর্তুগীজগণের অত্যাচারেই সপ্তগ্রামে বণিকগণের গতিবিধি বন্ধ হইয়াছিল। মোগল-সম্রাট আকবরের রাজত্বকালেই সপ্তগ্রাম বন্দর বন্ধ হইবার উপক্রম হয়। ইহার পর, পর্তুগীজের দিল্লীর বাদসাহের নিকট হইতে ছগলীতে স্থায়ী বন্দর প্রতিষ্ঠার অনুমতি পান। সপ্তগ্রামের সম্যক পতন—সেই হইতেই । যে সপ্তগ্রামের সহিত প্রাচীন রোমের বাণিজ্য-সম্বন্ধ ছিল, সমুদ্রপথে সংবাহিত পণ্যাদি যে সপ্তগ্রামের মধ্যস্থতায় ভারতের বিভিন্ন জনপদে বিস্তৃত হইয়া পড়িত, পৌরাণিক সময় হইতে আরম্ভ করিয়া পর্তুগীজগণের হুগলী-বন্দর প্রতিষ্ঠার দিন পৰ্য্যন্ত যে সপ্তগ্রামকে ইউরোপীয়গণ ভারতের বাণিজ্য-কেজ বলিয়া নির্দেশ করিয়া গিয়াছেন, * এখন সে সপ্তগ্রামের কি অবস্থা-বিপৰ্য্যয় ঘটিয়াছে, চিন্তা করিতেও কষ্ট হয় । সপ্তগ্রাম-ত্রিবেণীর ধ্বংসাবশেষের মধ্যে জাফর-খণর সমাধি, উদ্ধারণ-দত্তের মন্দির, রঘুনাথ দাসের পাট, সপ্তগ্রাম-দুর্গের ভগ্নস্তৃপ, জমাল-উদিনের সমাধি প্রভূতি কয়েকটি ক্ষীণ-স্মৃতি-চিহ্ন মাত্র বিদ্যমান আছে ; আর অাছে একট প্রবাদ-বাক্য— “গাঙ্গীর কুড় ল নড়ে চড়ে পড়ে না।” জাফর খার ( গাজীর ) সমাধির পূৰ্ব্বভাগে প্রস্তরসংলগ্ন একখণ্ড লৌহ দৃষ্ট হয়। ঐ লৌহখণ্ড কতকাল হইতে দোদুল্যমান রহিয়াছে, কেহই বলিতে পারেন না। ঐ লৌহখণ্ড গাঙ্গীর কুড়ল' নামে পরিচিত। ত্রিবেণীর পূৰ্ব্ব-চিহ্ন কি আর আছে ? ত্রিবেণীর গঙ্গাতীরে যে বাধাঘাট দৃষ্ট হয়, ঐ ঘাট রাজা মুকুন্দদেব কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। মুকুন্দদেব উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নৃপতি । ১৫৫২ খৃষ্টাব্দে তিনি সিংহাসন লাভ করেন । সে হিসাবে সাড়ে তিন শত বৎসরের অধিক কাল এই ঘাট নিৰ্ম্মিত হইয়াছে । কিন্তু ঘাটটা এখনও হতশ্ৰী হয় নাই । সপ্তগ্রাম পরিত্যক্ত হইলে, হুগলী হুগলী, জাকিয় উঠে । সপ্তদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে হুগলীর বাণিজ্য-সমৃদ্ধির চুচুড়া বিষয় ইংরেজগণ প্রত্যক্ষ করিয়াছিলেন। টমাস বাউরে জাহাজের প্রভৃতি । অধ্যক্ষ-রূপে এদেশে আসেন। ১৬৬৯ খৃষ্টাব্দ হইতে ১৬৭৯ খৃষ্টাব্দ পর্য্যস্ত দশ বৎসর কাল তিনি অর্ণবপোতাদির গতিবিধির তত্ত্বাবধারণ করিতেন। তিনি বঙ্গোপসাগর-সমীপন্থ জনপদ-সমূহের ভৌগোলিক বিবরণ লিপিবদ্ধ করেন । র্তাহার সেই গ্রন্থে হুগলীর এবং বাঙ্গালার নানাস্থানের বাণিজ্যের বিষয় নিম্নলিখিতরূপে পরিবর্ণিত আছে ৷ ‘হুগলী-সহরে, বালেশ্বরে এবং পিপলী বন্দরে নবাবের ও কয়েক জন বণিকের অনুন কুড়িখানি সুবৃহৎ অর্ণবপোত ছিল। সেই অর্ণবপোতের সাহায্যে তাহার • প্রতিবৎসর সমুদ্রপথে বাণিজ্য করিতেন। কতকগুলি পোত সিংহল-দ্বীপের দিকে বাণিজ্য করিতে যাইত ; কতকগুলি পোত টানাসরি বা টেনাসারিম-দ্বীপের দিকে পরিচালিত হইত ; ঐ সকল অর্ণবপোতে র্তাহারা প্রধানতঃ হস্তী আনয়ন করিতেন। এতদ্ব্যতীত মালদ্বীপপুঞ্জের অন্তর্গত দ্বাদশ সহস্র দ্বীপে বৎসরে ছয় সাত বার ঐ সকল অর্ণবপোত গতিবিধি করিত। সেই দ্বীপপুঞ্জ হইতে কড়ি ও নারিকেল-দড়ি আসিত এবং নানা

  • “It was known to Romans ... It was the great mart of Bengal to which an the sea-bourne trade was brought."—Marshman's History qf Bengal, vide lso Hunter's statistical Account of Bengal, Vol. iii, and Journal of the Asiatic Society of

Bengal for 1847 and 1909,