পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/২১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২১ e ভারতবর্ষ। লোকাস্তর গ্রহণের সময় তাহার বয়ঃক্রম বিংশতি বৎসরের অধিক হয় মাই। নবদ্বীপের পশ্চিমাংশে ক্রোশাধিক ব্যবধানে মাউগাছি-গ্রাম তাহার জন্মস্থান। বৃন্দাবন দাস ঠাকুর নবদ্বীপের মাহাষ্ম্যের ও গৌরবের বিষয় এইরূপ ভাবে লিথিয়া গিয়াছেন ;– “নবদ্বীপের সম্পত্তি কে বৰ্ণিবারে পারে। একেক ঘাটে লক্ষ লক্ষ লোক স্বান করে ॥ বিবিধ বয়সে এক জাতি লক্ষ লক্ষ । সরস্বতী প্রসাদে সভে মহাদক্ষ । সতে মহা অধ্যাপক করি গৰ্ব্ব ধরে । বালকেহো ভট্টাচাৰ্য্য সনে কক্ষ্য করে । নানাদেশ হইতে লোক নবদ্বীপে যায়। নবদ্বীপে পঢ়িলে সে বিদ্যারস পায় ॥ রম-দৃষ্টিপাতে সৰ্ব্বলোক মুখে বসে। ব্যর্থ কাল যায় মাত্র ব্যবহার রসে ॥” কেবল নবদ্বীপ নহে ;—নবদ্বীপ যখন রাজধানী ছিল, নবদ্বীপের পারিপাশ্বিক স্থান-সমূহ অধিকাংশই তখন সমৃদ্ধি-সম্পন্ন হইয়া উঠিয়াছিল। নবদ্বীপ হইতে—নবদ্বীপ হইতেই বা বলি কেন—সপ্তগ্রাম হইতে গৌড় পর্য্যন্ত গঙ্গাতীরবর্তী নগর-গ্রাম-সমূহ বাণিজ্য-বিতবে বিদ্যার গৌরবে গৌরবান্বিত হইয়া উঠিয়াছিল। গঙ্গাতীরবর্তী প্রাচীন গ্রাম-সমূহের ধ্বংসাবশেষের প্রতি দৃষ্টিপাত করিলে আজিও সে নিদর্শন কিছু-না-কিছু প্রাপ্ত হওয়া যায়। শাস্তিপুর, কালন, সমুদ্রগড়, পূৰ্ব্বস্থলী, দাইহাট, কাটোয়া, মুর্শিদাবাদ প্রভৃতির সহিত কত প্রাচীন স্মৃতি বিজড়িত রহিয়াছে। ঐ সকল স্থানের ও উহাদের নিকটবৰ্ত্তী বহু গ্রামের প্রাচীন অট্টালিকা-সমূহের বহু ভগ্নস্তৃপ প্রভৃতির প্রতি দৃষ্টি করিলে, কত পুরাতন কথাই মনে পড়ে ! বৰ্দ্ধমান-জেলায় পূৰ্ব্বস্থলী থানার পশ্চিমাংশে অনতিদূরে চন্দ্রকেতু রাজার রাজধানীর ভগ্নাবশেষ চিহ্নিত হইয়া থাকে । ঐ অঞ্চলের লোকের মৃত্তিকাদি খননের সময় ‘চন্দ্রকেতু রাজার মুদ্রা পাইয়াছিল বলিয়াও জনা যায । কেহ কেহ অনুমান করেন, এই চন্দ্রকেতু রাজাই গ্রীকদিগের নিকট “সান্দ্রোকোট্টাস (Sandrocottas) নামে অভিহিত হইয়াছিলেন। ‘চন্দ্রকেতু হইতেই ঐরুপ উচ্চারণ সম্ভবপর। যাহা হউক, ঐ রাজধানী এখন মাত্র মৃত্তিকাস্তুপে পর্য্যবসিত । উহার বাণিজ্যাদিরও কোন চিহ্ন এখন অনুসন্ধানে পাওয়া যায় না। বাঙ্গালাব প্রাচীন কবিগণের গ্রন্থে বাঙ্গালার বহু প্রাচীন বাণিজ্য-কেন্দ্রের বিবরণ লিপিবদ্ধ আছে। তাহার কোনও কোনও স্থান এখনও নির্দেশ করা যাইতে পারে। কবিকঙ্কণের চণ্ডী-কাব্যে ধনপতি সদাগরের বাসস্থান উজানী (উজবেনি, উজয়ান ) নগর বলিয়া বলিত আছে৭ সে নগর এককালে অতি সমৃদ্ধিশালী রাজধানী ছিল । রাজা বিক্রমকেশরী সেই নগরে রাজত্ব করিতেন । কবিকঙ্কণ-বিরচিত চণ্ডী-কাব্যে উজানি-নগরের ও রাজা বিক্রমকেশরীর মাহাত্ম্য-কথা কিরূপ পরিবর্ণিত আছে, নিয়ে পাঠ করিয়া দেখুন ;– “উজানী-নগর, অতি মনোহর, বিক্রমকেশরী রাজা । করে শিবপূজা, উজানীর রাজা, কৃপাময়ী দশভূজা ॥ যেন রঘুরাজা, তেন পালে প্রজী, কর্ণের সমান দাতা । যুধিষ্ঠির বাণী, শুকদেব জগনী, প্রসন্না মজলা মাত ॥ মহা ধনুৰ্দ্ধর, निदा कट्लरुद्र, মারদ সমান গানে ।