পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৩০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\రిe : ভারতবর্ষ | প্রবাহিত । অশোক-তরু পল্লব-পুষ্পে স্বশোভিত। নবীন পল্লব-মধ্যস্থিত চুতাছুরে শ্রীর-পংক্তি বিন্যস্ত হইল। কণিকার পুষ্প, গন্ধশূন্ত হইয়াও, বর্ণশোভায় দিক্‌ পুলকিত করিয়৷ তুলিল। ফুটনোয়ুথ পলাশ-পুষ্প বনস্থলী-রূপ নায়িকার অঙ্গে বসন্তসমাগমে নখ-ক্ষতের ন্যায় প্রতীয়মান হইতে লাগিল । তিলক-পুষ্প-সংলগ্ন ভ্রমরপংক্তি বসন্তলক্ষ্মীর অঞ্জনের ন্যায় শোভা পাইল ; আর, তাহার চুত-প্রবাল-রূপ ওষ্ঠ, লাক্ষা রস-সন্নিত বালারুণ-কিরণে অমুরঞ্জিত হইল । পিয়াল-তরু-মঞ্জরীর পরাগ-কণা-সমূহ মদমত্ত হরিণীগণের নেত্রে নিপতিত হওয়ায় তাহার। সমীর-প্রবাহের বিপরীত দিকে প্রধাবিত হইতে লাগিল । নবোদগত চুতাঙ্কুর আস্বাদে কণ্ঠস্বর মধুরতর হইলে পুংস্কোকিলগণ মধুরস্বরে মানিনী রমণীগণকে মান পরিত্যাগে বাধ্য করিল। ভ্রমর-ভ্রমরীগণ পুষ্প হইতে পুষ্পান্তরে মধুপান করিয়া, পরস্পর পরস্পরের অল্পগমন করিতে লাগিল। মৃগগণ শৃঙ্গ-স্বারা মৃগীগণের গাত্র কণ্ডয়ন করিলে, উহারা স্পৰ্শমুখে নয়ন নিৰ্মীলন করিয়া রহিল। পদ্মপরাগ-সুরভিত সরোবর-সলিল গণ্ডষে গ্রহণ করিয়া করিণীগণ করিবরের গাত্রে নিক্ষেপ করিতে লাগিল । মৃণালাৰ্দ্ধভাগ ভক্ষণানন্তর অপরাদ্ধভাগ লইয়। চক্রবাকৃ চক্রবাকীকে সাদরে প্রদান করিল। কিন্নর-কিল্লরীগণ সঙ্গীতে প্রবৃত্ত হইয়। নানাভাবে প্রেমাবেশে পরস্পর বিভোর হইয়া পড়িল । কেবল জীবজন্তু বলিয়। নহে ,--বসন্ত-সমাগমে উদ্ভিজ্জ গণেরও ব্যাকুলতা বৃদ্ধি পাইল । পুষ্পস্তবক-রূপ স্তন-বিশিষ্ট পল্লব-রূপ ওষ্ঠ-সম্বলিত লতাবধু-সকল আনত-শাখা-রূপ বাহু-দ্বারা তরুদিগকে আলিঙ্গন করিতে লাগিল । কবি এইরূপে বসন্ত-সমাগমের যে বর্ণনা করিয়াছেন, সংক্ষৈপে আমরা তাহ বিবৃত করিলাম বটে ; কিন্তু ঐ বর্ণনার মধ্যে যে কি কবিত্ব কি কুঁতিত্ব কি অলঙ্কার কি উপমার সমাবেশ আছে, তাহার কিছুই দেখাইতে পারিলাম না । "মলয়ানিল প্রবাহিত”–এই একমাত্র উক্তি কবির কাব্যে কিরূপভাবে ব্যক্ত হইয়াছে, তাহা বুঝাইতেছি। তাহাতে আলোচ্য বিষয়ের কতকটা আভাস পাওয়া যাইতে পারিবে । ঐ সম্বন্ধের শ্লোকটী এই,—“কুবেরগুপ্তাং দিশমুঞ্চরশেী গন্তুং প্রবৃত্তে সময়ং বিলঙ্ঘ্য । দিগ দক্ষিণ গন্ধবহং মুখেন বালী কনিশ্বাসমিবোৎসসর্জ ॥” অর্থাৎ,—“উষ্ণরশ্মি সূৰ্য্যদেব, কুবের যে দিকের অধিপতি, সেই উত্তর দিকের প্রতি গমনোদ্যত হইয়া অসময়ে দক্ষিণ দিককে পরিত্যাগ করিলেন, তাহাতে দক্ষিণ-fদক অকারণে পরিত্যক্ত মহিলার স্থায় দীর্ঘনিশ্বাস-রূপ মলয়-বায়ু আপন মুখ হইতে পরিত্যাগ করিল।” এ বঙ্গানুবাদেও ঠিক ভাবগ্রহণ হইল না । এই শ্লোকের ভাবগ্রহণ করিতে হইলে, সংস্কৃত ‘দিকৃ’ শব্দ যে স্ত্রীলিঙ্গ, তাহা স্মকুণ করিতে হইবে স্বৰ্য্য উষ্ণ প্রকৃতি-সম্পন্ন । তাহার উষ্ণ-প্রকৃতি ক্ৰোধ স্থচনা করিতেছে । অর্থাৎ, তিনি যেন অকারণে ক্রোধাম্বিত হইয়া স্বনায়িক দক্ষিণ-দিককে পরিত্যাগ করিয়া চলিয়াছেন, এবং কুৎসিত পুরুষ কুবেরের রক্ষিত উত্তরদিকের প্রতি আসক্ত হইয়া উত্তরায়ণে উত্তরদিকে ঢলিয়া পড়িতেছেন । আর, তাহাতে তদন্তুগত-প্রাণ। দক্ষিণ-দিক ক্ষোভে বিষাদে দীর্ঘনিশ্বাস পরিত্যাগ করিতেছেন । সেই দীর্ঘনিশ্বাসই—মলয়-পবন । এই উপমায় সূর্যোর দক্ষিণায়ন পরিত্যাগ করিয়া উত্তরাষণে অগ্রসর হওয়ার ভাব জ্ঞাপন করিতেছে ; সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণ দিক হইতে মলয় বায়ু প্রবহ