পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩২ ভারতবর্ষ । ঈশ্বর-প্রণীত এবং প্রমাণ ।” বৈশেষিক মতের আলোচনায় পরবৰ্ত্তিকালে যে সকল গ্রন্থ সুচিত হইয়াছে, তন্মধ্যে তর্কসংগ্রহ এবং উদয়ণাচার্য্যের ‘কুসুমাঞ্জলি’ বিশিষ্ট । উভয় গ্রন্থেই বেদকে ঈশ্বরের বাক্য বলিয়া প্রতিপন্ন করা হইয়াছে । ফলতঃ, বৈশেষিক মতে বেদ ঈশ্বর-প্রেরিত এবং মহাজনগৃহীত, সুতরাং প্রামাণ্য । যাহা ঈশ্বর-প্রেরিত ও অভ্রান্ত, তাহার আদি কে নির্ণয় করিবে ? জগৎপাতা জগদীশ্বরের যেমন আদি-নির্ণয় হয় না, বেদ-শাস্ত্রেরও আদি-তত্ত্ব তদ্রুপ অপরিজ্ঞাত। তর্কের আধার দর্শন-শাস্ত্র-সমূহ নানারূপ তর্কজাল বিস্তার করিয়া ও সে আদি-তত্ত্ব নির্ণয় করিতে অসমর্থ হইয়াছেন । তবেই বুঝা যায়,—বেদ কত কালের ! যেমন দৰ্শন-শাস্ত্রে দেখিলাম, বেদের আদি-নির্ণয়ে দৰ্শন-শাস্ত্র পরাভূত হইয়াছেন,ব্রাহ্মণ আরণ্যক, উপনিষৎ– সৰ্ব্বত্রই সেই ভাব পরিদৃষ্ট, স্মৃতি-পুরাণাদির মধ্যেও সেই ভাবই প্রত্যক্ষীভূত । শতপথ ব্রাহ্মণের বিভিন্ন স্থানে প্রজাপতি ব্ৰহ্মকেই বেদের o: স্বষ্টি-কৰ্ত্তা বলিয়া ঘোষণা করা হইয়াছে। “ব্রহ্ম এব প্রথমমস্থজত ত্রয়ীমেব বিদ্যাং” ( ৬১৷১৪ ) । অর্থাৎ,—ঋক, যজুঃ, সাম—ত্রয়ী বিদ্যা ব্ৰহ্মই স্বজন করেন । বেদ নিত্য চিরস্থায়ী ও সৰ্ব্ব পদার্থের আকর,—এবহুপ্রকার উক্তিও শতপথ ব্রাহ্মণে উক্ত আছে । ( ১০৪২২১ ) তৈত্তিরীয় ব্রাহ্মণেও দেখিতে BBBSBBBB BBB BBBBB BBBBSBBB BBBBBB BBBB SBBBBS উপনিষদের মধ্যে ছান্দোগ্য উপনিষদে প্রজাপতিকেই বেদের স্বষ্টিকর্তা বলিয়া নির্দেশ করা হইয়াছে। সে মতে, “অগ্নেঃ ঋচঃ বায়োর্যজুংষি সাম আদিত্যাৎ ।” প্রজাপতি অগ্নি হইতে ঋগ্বেদ, বায়ু হইতে যজুৰ্ব্বেদ এবং আদিত্য হইতে সামবেদ নিঃস্থত করেন।’ ফলতঃ, স্বষ্টির আদি-কাল হইতেই বেদের বিদ্যমানতা—সকল শাস্ত্রই এক বাক্যে ঘোষণা করিয়া গিয়াছেন। বেণার্থ স্মরণ করিয়া যে সকল শাস্ত্র-গ্রন্থ মহর্ষিগণ রচনা করিয়া গিয়াছেন, তাহাই স্মৃতি নামে অভিহিত। স্মৃতি বেদের অনুসারী। বেদের অমুসারী বলিয়াই স্মৃতি ধৰ্ম্মশাস্ত্র । মকু-স্মৃতি সম্যকৃরূপে বেদের অনুসরণ করিয়াছেন বলিয়া, সকল স্মৃতির মধ্যে মমু-স্মৃতির প্রাধান্ত । মহর্ষি বৃহস্পতি সে কথা স্পষ্টই ঘোষণা করিয়া গিয়াছেন ; —“বেদার্থোপনিবন্ধিত্বাৎ প্রাধান্তং হি মনোস্থতং । মম্বর্থ বিপরীতা তু যা স্মৃতি সান শস্ততে।” মকু-সংহিতায় চারি বেদেরই উল্লেখ আছে । মকু স্পষ্টতঃই বলিয়া গিয়াছেন,--"বেদ অপৌরুষেয়, অপ্রমেয় এবং নিত্য।’ যিনি মানবগণের আদি-পুরুষ বলিয়। পরিচিত, তিনিই যখন বেদের এইরূপ প্রাধান্ত খ্যাপন করিয়া গিয়াছেন,—র্তাহার সময়েই যখন বেদের আদিনির্ণয় হয় নাই, তখন বেদ-বৰ্ণিত ইতিবৃত্তের অনুসন্ধান করিতে যাওয়া বা তাহার কালাকাল নির্ণয় করিতে প্রয়াস পাওয়া—খৃষ্টতার পরিচয় সন্দেহ নাই। যে দেশের সাহিত্য পৃথিবীর প্রাচীনতম সাহিত্য বলিয়া প্রতিপন্ন হয়, আর যে দেশের সাহিত্যের আদিতত্ত্ব-নির্ণয়ে সকলের সকল গবেষণা পর্যুদস্ত হইয়া আছে, সে দেশের সভ্যতা—সে দেশের প্রাধান্ত-- সে দেশের ঐশ্বৰ্য্য-গৌরব যে কতকাল পূৰ্ব্বের, কে তাহার ইয়ত্ত করিবে ? । এই পরিচ্ছেদের উদ্ধৃতাংশ Vরমানাথ সরস্বতীয় ঋগ্বেদ-সংহিতা হইতে সংগৃহীত হইল।