পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৪৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 a ভারতবর্ষ। ছিলেন । আৰ্য্যভট্ট প্রভৃতি পরবর্তী জ্যোতিৰ্ব্বিদগণ ও গণিতাচাৰ্য্যগণ সেই প্রাচীনেরই অনুসরণে যশস্বী হইয়া আছেন। বরাহমিহিরাচাৰ্য্য ‘বৃহৎসংহিতা’, ‘বৃহজ্জাতক’, ‘লঘুজাতক’, ‘পঞ্চসিদ্ধান্ত’ প্রভৃতি দ্বারা জ্যোতিষের অঙ্গ অনেক পরিমাণে পরিপুষ্ট করিয়া যান। ভাস্করাচার্য্যের সিদ্ধাস্তশিরোমাণ’ প্রভৃতিও এ পক্ষের উন্নতির প্রধান নিদর্শন । গণিত, জ্যোতিষ প্রভৃতির প্রসঙ্গে ( পৃথিবীর ইতিহাস তৃতীয় খণ্ডে ) এ সকল বিষয় বিস্তৃতভাবে আলোচিত হইয়াছে। আয়ুৰ্ব্বিজ্ঞান বিষয়ে চরক, সুশ্রুত, বাগভট, অষ্টাঙ্গহৃদয় প্রভৃতি গ্রন্থ-সমূহ দেদীপ্যমান। আয়ুৰ্ব্বেদ-প্রসঙ্গে সে আলোচনাও (তৃতীয় খণ্ড পুথিবীর ইতিহাসে ) প্রত্যক্ষ করুন। কলাবিদ্যার তথ্যানুসন্ধান করিলে, নৃত্য, নাট্য, সঙ্গীত প্রভৃতির সঙ্গে সঙ্গে স্থাপত্যের পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায়। ইতিহাস, জীবনচরিত প্রভৃতির বিষয় পূৰ্ব্বেই উল্লেখ করিয়াছি ; তথাপি আরও দুই একটি প্রসঙ্গের উত্থাপন করিতেছি । যাহারা বলেন,—একমাত্র “রাজতরঙ্গিণীই এ দেশের ইতিহাসের চরম আদর্শ, র্তাহারা নিশ্চয়ই সংস্কৃত-সাহিত্যের গ্রন্থ-সমুদ্র আলোড়ন করিবার অবসর পান নাই। অষ্টাদশ-পুরাণের প্রত্যেক পুরাণেই ইতিহাসের জন্য বিশেষ বিশেষ কয়েকট পরিচ্ছেদ নিদিষ্ট আছে। ‘রাজাবলী’ নামে প্রায় প্রতি রাজবংশেরই বিবরণ লিপিবদ্ধ ছিল, প্রমাণ পাওয়া যায়। সিংহলের ‘মহাবংশ’ কি পরিচয় প্রদান করিতেছে ?” জীবনচরিত বিষয়ে রামায়ণ, মহাভারত এবং পুরাণাদি ভিন্ন যে অনেক গ্রন্থ ছিল, তাহার বিশিষ্ট প্রমাণ আছে । এক শঙ্করাচার্য্যেরই কত জীবনচরিত কত ভাবে লিখিত হইয়াছিল । শ্রীচৈতন্যদেবের জীবনচরিতেরও * অবধি নাই । বিক্রমাদিত্যের ও শালিবাহনের জীবনচরিত পাওয়া যায়। জৈনদিগের ও বৌদ্ধদিগের আচাৰ্য্যগণের পরিচয়মূলক গ্রন্থ আছে। হর্ষচরিত প্রভৃতির বিষয় পূৰ্ব্বেই উল্লেখ করিয়াছি। এইরূপ দেখিতে গেলে,—এইরূপ অনুসন্ধান করিলে, দেখিতে পাওয়া যায়,— ভারতবর্ষে সংস্কৃত-সাহিত্যের জ্যোতিঃতে সকল দিকই উদ্ভাসিত হইয়া আছে। কেবল এ দেশে নহে ; সংস্কৃত-সাহিত্যের সেই জ্যোতিঃ অন্য দেশকেও জোতিষ্মান করিয়া রাখিয়াছে। রাশিচক্রের আবিষ্কার—ভারতবর্ষের, ইহা আমরা পূৰ্ব্বেই প্রতিপন্ন করিয়াছি। গ্রীসে সেই রাশিচক্র অমুস্থত। এমন কি, অনেক শব্দ পৰ্য্যস্ত সামান্ত রূপাস্তরে সেখানে পরিগৃহীত হইয়াছে। গ্রীসের কেন্দ্রন ( Kentron )—সংস্কৃত ‘কেন্দ্র’ শব্দের রূপান্তর ; ‘ডায়ামেট্ৰন' ( Diametron ) সংস্কৃত ‘যামিত্র' শব্দ হইতেই পরিগৃহীত হইয়াছে । কেহ কেহ ‘রোমকসিদ্ধাস্ত, ও ‘হোরাশাস্ত্র নাম দেখিয়া ভারতবর্ষকে রোমের ও গ্রীসের অনুসরণকারী বলিয়া নির্দেশ করিয়া গিয়াছেন। কিন্তু ভারতবর্ষ হইতেই ‘রোম’ নামের উৎপত্তি এবং এ দেশেরই হোরা শব্দ পাশ্চাত্যে পরিগৃহীত,—এ সকল বিষয় আমরা পূৰ্ব্বেই প্রমাণ করিয়াছি। ‘গুলভ-স্বত্রে জ্যামিতির বীজ অন্য দেশে রোপিত হওয়ার বিষয় এবং লীলাবতী হইতে বীজগণিত, আৰ্য্যভটীয় হইতে গণিত-তত্ব বিভিন্ন দেশে প্রচারিত হইয়াছিল, সপ্রমাণ হয় । ফলতঃ, ভারতের সাহিত্য-সম্পদের নিকট কোনও দেশ কখনই প্রতিযোগিতায় সমর্থ হয় নাই ; ভারতবর্ষ সৰ্ব্ব বিষয়ে সৰ্ব্ব সময়ে সকলেরই গুরুস্থানীয় ছিল । 懶 馨 導