পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৫২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেদের আদি-তত্ত্ব। ২৯ জ্ঞানের উপযুক্ত স্থির করিয়া, দর্শনকার দেবগণের মোক্ষেচ্ছা এবং বিগ্রহ-ধারণ-শক্তি প্রতিপাদন করিয়াছেন। যদ্যপি দেবগণ শরীরযুক্ত হইলেন, তাহা হইলে বহুসংখ্যক যজ্ঞে এককালে র্তাহাদের গমন অসম্ভব হইবে। যেহেতু এক ইন্দ্র ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন যজ্ঞে এককালে সশরীরে গমন করিতে পারেন না। এ আপত্তির দুই প্রকার উত্তর হইতে পারে। যথা—প্রথমতঃ, দেবগণ ভিন্ন ভিন্ন শরীর ধারণ করিতে পারেন এবং সশরীরে ভিন্ন ভিন্ন যজ্ঞে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে উপস্থিত হইতে সমর্থ। উত্তরনৈষধচরিতে যখন ইন্দ্র নলরাজকে বর প্রদান করেন, তিনি বলিয়াছিলেন,—“হে মল! তুমি যদি যজ্ঞ কর, তাহ হইলে আমি সশরীরে সে যজ্ঞস্থলে গমন পূর্বক তোমার প্রদত্ত আহুতি গ্রহণ করিয়া, নাস্তিকদিগের দৰ্প চূর্ণ করিব।” দ্বিতীয়তঃ, যেহেতু দেবগণের উদ্দেশ্যে যজ্ঞ নিম্পন্ন হইয়া থাকে, তখন অনেক ব্যক্তি এককালে এক দেবতাকে উদ্দেশ করিয়া আহুতি দিতে পারেন, তাহাতে কোনও দোষ ঘটিতে পারে না । একজন ব্রাহ্মণকে এককালে বহুসংখ্যক ব্যক্তি প্রণাম করিতে পারেন । অতএব দেবগণের শরীর ধারণ বিষয়ে কোনও আপত্তি ঘটিতে পারে না । বেদান্ত-দর্শনের প্রথম অধ্যায়ের প্রথম পাদের দ্বিতীয় স্থত্রে জন্মাদ্যস্য যতঃ’ এই বাক্য দ্বারা সমস্ত জগতের ব্ৰহ্ম হইতে উৎপত্তি নির্ণীত হইয়াছে এবং তৃতীয় পাদের অষ্টাবিংশ সূত্রে অতঃ প্রভবাৎ প্রত্যক্ষণকুমানাভ্যাং’-এ উক্তি দ্বারা বৈদিক শব্দ হইতে দেবগণ উৎপন্ন হইয়াছেন, পরিস্ফুট হইল। আবার রুদ্র, আদিত্য, ইন্দ্র, মরুৎ প্রভৃতি দেবতার নাম বেদে দৃষ্ট হয়। কোনও বিষয়ের উৎপত্তি ন হইলে কি তাহার নাম হইতে পারে ? দেবদত্তের পুত্র না জন্মিলে কি তাহার নাম যজ্ঞদত্ত হইতে পারে ? সুতরাং দেবগণ উৎপত্তিযুক্ত এবং অনিত্য ; তৎসংযোগে বেদও অনিত্য এবং অপ্রমাণ হউক। এ বিষয়ে দর্শনকার এবম্বিধ সিদ্ধান্ত করিয়াছেন যে, আকৃতি ( Species ) এবং ব্যক্তি (Individual) দুইটী বিভিন্ন পদার্থ। ব্যক্তি অনিত্য, যথা—গবাদি ; এবং আকৃতি নিত্য, যথা— গোজাতি। দেবজাতি নিত্য ; কিন্তু ইন্দ্র-আদিত্যাদি দেবগণ ব্যক্তি মাত্র এবং অনিত্য । বেদে আকৃতির কথা উক্ত হইয়াছে, ব্যক্তির কথা নাই ; সুতরাং কোনও বিরোধ হইবার সস্তাবনা নাই। ব্ৰহ্মা হইতে বেদের উৎপত্তি ; বেদ ব্ৰহ্মকাৰ্য্য। “শাস্ত্রযোনিত্বাৎ’ এই সূত্রে ঋগ্বেদাদি শাস্ত্রের সর্বজ্ঞ ব্ৰহ্ম হইতে উৎপত্তি নির্দিষ্ট হইয়াছে। এই সূত্রের ভাস্তে শঙ্করাচাৰ্য্য লিখিয়াছেন,—‘মহৎ ঋগ্বেদাদি শাস্ত্রের প্রদীপের স্তায় সৰ্ব্বাৰ্থ-ভাসকত। শক্তি দৃষ্ট হয়। ইহা ৰিবিধ বিদ্যা দ্বারা বৰ্দ্ধিত এবং সৰ্ব্বজ্ঞকল্প। ঈদৃশ শাস্ত্রের সর্বজ্ঞগুণবিশিষ্ট সৰ্ব্ববিৎ ঈশ্বর ব্যতীত অন্ত প্রণেতা কি সম্ভবে ? সুতরাং বেদশাস্ত্র ব্ৰহ্ম হইতে উৎপন্ন হইয়াছে।" মীমাংসা-দর্শনের মত হইতে বেদান্ত-দর্শনের মত এই পৰ্য্যস্ত বিভিন্ন যে, মীমাংসা-দর্শনে ব্ৰহ্মা হইতে বেদের উৎপত্তি বিষয়ে কীেনও উল্লেখ ब्रांडें । किड़ বেদান্ত-দর্শনের উহাই প্রতিপাদ্য । মীমাংস বলেন,—শব্দ নিত্য বলিয়। শব্দরাশি বেদ BBB S BB BBB BBBSSSBBBBSBB BBBS BB BB BBB BBB S BBBBBBB মতে বেদের নিত্যত্ব কেবলমাত্র এককল্পস্থায়ী, চিরকাল মহে।” ফলে, বেদান্তও বেদকে নিত্য বলিয়া স্বীকার করিলেন ; বেদান্তও বেদের কাল-নির্দেশে সমর্থ হইলেন না।