পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৫৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

83 ভারতবর্ষ | অনুভব করে। ইথিওপিয়া অধিকার-ভুক্ত হইলে, পুৰ্ব্বাভিমুখে ভারতবর্ষের দিকে অগ্রসর হওয়ার পক্ষে নৌবাহিনীর আবখ্যকতা অনুভূত হয়। মিশরের অধিবাসীরা এ পর্য্যস্ত নৌ-যানাদির ব্যবহারে অনভ্যস্ত ছিল । আপন অধ্যবসায়ের প্রভাবে সিসোষ্ট্রস এই সময়ে নৌবাহিনীর স্বল্প করিলেন। তিনিই মিশরে প্রথম নৌবাহিনীর স্বষ্টিকৰ্ত্ত বলিয়া প্রখ্যাত। চারি শত অর্ণবপোতে সে নৌবাহিনী সংগঠিত হইয়াছিল। জায়ব সাক্ষর হইতে সেই নৌবাহিনী পূৰ্ব্বাভিমুখে অগ্রসর হইয়া মহাসমুদ্রে উপস্থিত হয়। সেই মহাসমুদ্র তৎকালে ইরিথিয়ান সমুদ্র নামে অভিহিত হইত। ইরিথিয়ান সমুদ্র দিয়া, মহাদেশের উপকূলভাগ অনুসরণ করিয়া, সেই নৌবাহিনী ভারতবর্ষে উপনীত হয়। সৈনিকদল-সহ সিসোষ্ট্রেস ভারতবর্ষে অবতরণ করিতে পারিয়াছিলেন কিনা,তদ্বিষয়ের কোনও প্রমাণ নাই। কিন্তু ডায়ডোরাসের বর্ণনায় প্রকাশ–সিসোষ্ট্রিসেব সৈন্যদল ভারতবর্ষে অবতরণ করিয়াছিল ; সমগ্র ভারতবর্ষ আপনাদের অধিকারে অনিয়াছিল ; এবং সিসোষ্ট্রিস ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রদেশে আপনার বিজয়-স্তস্ত প্রোথিত করিয়াছিলেন । সে বর্ণনায় আরও প্রকাশ,— কেবল ভারতবর্ষ নহে , সমুদ্রের এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পৰ্য্যন্ত সমগ্র দেশ সিসোট্রিসের অধিকারে আসিয়াছিল। সিসোষ্ট্রস আপনার অধিকৃত দেশ-সমূহে যে বিজয়-স্তস্ত-সমূহ প্রোথিত করিয়াছিলেন,সেই স্তম্ভ-গাত্রের খোদিত লিপিতে আপনার সৈন্যদলের বীরত্ব-কাহিনী এবং বিজিত জাতির ভীরুতার ও কাপুরুষতার বিষয় লিখিয়। রাখিয়া যান। সিসোষ্ট্রসের এই অভিযান সম্বন্ধে নানা বাদ-প্রতিবাদ উত্থাপিত হয়। এক পক্ষ বলেন,—“ডায়ডোরাসের বর্ণনা অতিরঞ্জিত। যে সময় সিসোষ্ট্রিস যুদ্ধযাত্রা করেন, বর্ণনায় প্রকাশ,—তখন এক সহস্র সাত শত মিশরীয় যুবক সেনাপতি-পদে অধিষ্ঠিত হইয়াছিলেন । কিন্তু মিশরের তাৎকালিক অধিবাসীর অনুপাত অনুসারে হিসাব করিতে গেলে, এক দিনে এতাধিক শিশুর জন্ম হওয়৷ অসম্ভব। যদি চল্লিশ বৎসর বয়সের সময় মিশরাধিপতি সিসোষ্ট্রস ভারত-অভিষানে অগ্রসর হন, অীর তাহার জন্মদিনে যাহার। জন্মগ্রহণ করিয়াছিল, তাহদের মধ্যে যদি সতের শত ব্যক্তি জীবিত থাকে, তাহ হইলে, সাধারণ জন্ম-মৃত্যুর পরিমাণ অনুসারে হিসাব করিতে হইলে, বলিতে হয়—সিসোষ্ট্রিসের জন্মদিনে মিশরে অন্ততঃ পাচ সহস্র পুরুষের জন্ম হইয়াছিল । সুতরাং ঐ অনুপাতে সে দিন পাচ সহস্ৰ বালিকারও জন্ম হওয়া সম্ভবপর। যে রাজ্যে এক দিনে দশ সহস্র বালক-বালিকার জন্ম হয়, সে রাজ্যের লোক-সংখ্য চারি কোটীর কম হইতে পারে না । কিন্তু যে সময়ের কথা বলা হইতেছে, সে সময়ে মিশরে চারি কোটী লোকের বসতির বিষয় কখনই বিশ্বাস করা যায় না।’ এই হেতুবাদে প্রত্নতত্ত্বায়ুসন্ধিৎসুগণের কেহ কেহ সিসেদ্ভিসের ভারত-আক্রমণের কাহিনী উপকথা বলিয়। অনুমান করেন। কিন্তু কোনও কোনও ঐতিহাসিক এ বৃত্তান্ত একেবারে অলীক বলিয়া মনে করেন না । তাহার। বলেন,-“এক ডায়ডোরাস নয়, ডায়ডোরাসের পূর্ববর্তী হেরোডোটাসও আপন গ্রন্থে লিগোষ্ট্রিসের দিগ্বিজয়-কাহিনীর উল্লেখ করিয়। গিয়াছেন। হেরোডোটাসের বর্ণনায় স্পষ্টতঃ ভারতবর্ষের নাম উল্লিখিত হয় নাই। হেরোডোটাস লিখিয়া গিয়াছেন,-“লিসোট্রলের ণেYবাহিনী মহাসমুদ্র-পথে পুৰ্ব্বাভিমুখে অগ্রসর হইয়। যে প্রদেশে উপনীত হুইয়াছিল,