পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৬১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

షిe ভারতবর্ষ । উহাকে ঐ নামে প্রথমে অভিহিত করিয়াছিলেন বলিয়া প্রমাণ পাওয়া যায় । “তাপ’ এবং ‘রাবণ” এই দুই শব্দের সংযোগে তাপ্রোবেণ’ নামের উৎপত্তি । “তাপ’ শব্দে দ্বীপ বুঝায়। ‘রাবণের পরিচয় হিন্দুমাত্রেই অবগত আছেন। রাবণের “তাপ’ বা দ্বীপ—এই অর্থে ‘তাপ্রোবেণ’ নামের স্বষ্টি,— ইহাই পণ্ডিতগণের অনুমান • টলেমি বলেন,—এই দ্বীপ পূৰ্ব্বে “পালোসিমুণ্ডি’ (Paloesimundi) নামে পরিচিত ছিল ; কিন্তু তাহার সময়ে ঐ দ্বীপ সালিস’ (Salice) নামে পরিচিত হয় । দ্বীপের অধিবাসিগণ ঐ দ্বীপকে ‘সালোই’ ( Saloe ) নামে অভিহিত করিত। তাহ হইতে ক্রমশঃ সেলান’ বা ‘সিলোন’ (Selan or Ceylon) সূচিত হয়। হিন্দুগণ ঐ দ্বীপকে ‘সিংহল দ্বীপ বলিয়া অভিহিত করিয়াছেন। ঐ দ্বীপেক্ষ্ম প্রাচীন নাম যে “পালোসিমুণ্ডি’ ছিল, ‘প্লিনি’ তাহার পোষকতা করিয়া গিয়াছেন ; তবে তাহার সময়ে উহ। তাপ্রোবেণ’ নাম পরিগ্রহ করিয়াছিল বলিয়া বুঝিতে পারা যায়। আমেরিকা মহাদেশ আবিষ্কারের পূৰ্ব্বে তাপ্রেবেণ' পৃথিবীর বিপরীত অংশে অবস্থিত নুতন মহাদেশরূপে প্লিনির গ্রন্থে পরিবর্ণিত হয়। সেই দূর অতীতকালে উহা বাণিজ্যের ও সভ্যতার কেন্দ্রস্থান বলিয়া পরিগণিত হইত। ‘কসমাস সিংহলকে সেলান’-দ্বীপ বা ‘সেরেন?-দ্বীপ নামে অভিহিত করিয়া গিয়াছেন। তাহার সময়ে সিংহলে বাণিজ্য-সম্পদের বিষয় পূর্বে (এই খণ্ডের ১০৬ পৃষ্ঠায় ) উল্লেখ করিয়াছি। অধ্যাপক হীরেণ বলেন,—“আলেকজাণ্ডারের ভারত আগমনকালে এবং টলেমিগণের সমসময়ে লঙ্কা-দ্বীপ বাণিজ্যের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল ; আলেকজাণ্ডারের সময়েই তাপ্রোবেণ’ একটী দ্বীপ বলিয়া পরিচিত হয় । প্লিনি, আলেকজাওরের সমসাময়িক প্রাচীন ঐতিহাসিকগণের মত উদ্ধত করিয়া পূৰ্ব্বোক্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছেন। ফলতঃ, ৫ •• পূৰ্ব্ব-খৃষ্টান্ধ হইতে ৫-০ খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত লঙ্কা-দ্বীপ হিন্দুবণিকগণের প্রসিদ্ধ বাণিজ্য-স্থান ছিল । ঐ স্থান হইতে সুদুর আফ্রিকার ‘আডিউল বম্বরে, ইয়ামেনে, মালবারে, পূৰ্ব্ব-উপদ্বীপে এবং চীনদেশে বাণিজ্য চলিত। লঙ্কাদ্বীপের সহিত অষ্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য-সম্বন্ধ এই সময় বিদ্যমান ছিল ' : এরিয়ানের গ্রন্থে লস্কাদ্বীপের ষে বিবরণ দৃষ্ট হয়, তাহাতে বুঝা যায়, লঙ্কা-দ্বীপের উত্তরাংশ মুসভ্য ছিল। ঐ দ্বীপ হইতে পশ্চিমে ইটালি পৰ্য্যন্ত এবং পূৰ্ব্বে চীন পৰ্য্যন্ত বাণিজ্য চলিত । টলেমির বর্ণনায় লঙ্কাদ্বীপের কয়েকটা প্রধান বন্দরের পরিচয় পাওয়া যায় ; যথা,—তালাকোরি, মোচুক্তি, আযুরোগ্রামমূ, মেয়োগ্রামন ইত্যাদি । লঙ্কা-দ্বীপের প্রাচীন গৌরব-বিভবের বিষয় চিন্ত৷ করিতে গেলে, কত কথাই মনে হয় । মনে হয়,—এই কি সেই স্বর্ণ-লঙ্ক ? কি বিভবৈশ্বর্ষ্যের মহিমায় ইহার নাম স্বর্ণ-পুরী হইয়াছিল ? প্রত্নতত্ত্বায়ুসন্ধিৎসুগণের কেহ কেহ জকুমান করেন,—বৰ্ত্তমান সিলোন বা লঙ্কা-দ্বীপ রাবণের সে স্বর্ণ-পুরী লঙ্কা নহে । সে লঙ্কা সমূদ্রের অতলতলে নিমজ্জিত হইয়াছে ; তাহার ধ্বংসাবশেষ মাত্র এখন লঙ্কা-দ্বীপ নামে পরিকীৰ্ত্তিত হইতেছে । তদনুসারে কেহ কেহ অষ্ট্রেলিয়া মহাদ্বীপকে রাবণের লঙ্ক৷ বলিয়। প্রতিপন্ন করিবার প্রয়াস পাইতেছেন। সে হিসাৰে সিংহল এবং লঙ্কা দুইট স্বতন্ত্র Asiatic Researches, Vol. V. vide Professor Heeren's Historicat Researckes, Vol. 11.