পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৬২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>。や ভারতবর্ষ । পিডিয়া গ্রন্থে এবং ‘পিয়ান-ই-টিয়ান' নামক অন্ততর চীনাভাষার এনসাইক্লোপিডিয়া’ গ্রন্থে এ বিবরণ লিপিবদ্ধ আছে । মা-তুয়ান-লিনের গ্রন্থে, পশ্চিম-ভারতের ছয় জন শ্রমণ ( সমস্ত এবং আর পাঁচ জন ) এই সময় চীন দেশে গিয়াছেন বলিয়া অবগত হওয়া যায়। কিন্তু অন্যান্য গ্রন্থে ষোলটী পরিবারের ও সমন্তের গমনের কথাই লেখা আছে । এই ঘটনার পর ৯৬৮ খৃষ্টাব্দ হইতে ৯৭৫ খৃষ্টাব্দের মধ্যে আরও বহু শ্রমণ চীনদেশে উপনীত হন। র্তাহার। সম্রাট-সকাশে বহু-বৌদ্ধধৰ্ম্মগ্রন্থের পাণ্ডুলিপি প্রদান করিয়া সম্রাটের প্রতি আকর্ষণ করিয়াছিলেন । তাহদের মধ্যে য়াং-কিযে-কোয়াং-লো? ( য়াং-কিয়ে-সোঁ-লো ) নামক জনৈক শ্রমণ সম্বন্ধে বিভিন্ন উক্তি দেখিতে পাওয়া যায়। তিনি পূৰ্ব্ব-ভারতের কোন ও রাজার পুত্র বলিয়। পরিচিত । এ বিষয়ে বিশেষ মতান্তর নাই। তবে কেহ বলেন,—তিনি বৌদ্ধধৰ্ম্ম-প্রচারক ছিলেন। কেহ বলেন,—তিনি রাজপুত্র,সম্রাটের সহিত সখ্যস্থাপন জন্য চীনে গিয়াছিলেন। ‘য়াং-কিয়ে-কোয়াং-লে| ধৰ্ম্মসংক্রান্ত কতকগুলি পাণ্ডুলিপি চীন-সম্রাটকে উপহার দেন। সেই পাণ্ডুলিপিগুলি ‘ফান-কিয়া’(সংস্কৃত বা পালি ) ভাষায় লিখিত ছিল । ইহার পর র্যাহারা চীনে ধৰ্ম্ম-প্রচারোদ্দেশ্যে গমন করিয়াছিলেন, তাহাদের মধ্যে শ্ৰীভোজ-রাজ্যের জনৈক বৌদ্ধ-শ্রমণ বিশেষ প্রসিদ্ধিসম্পন্ন। বৌদ্ধধৰ্ম্ম-সংক্রান্ত গ্রন্থ চীনাভাষায় অনুবাদ জন্য ৯৮৩ খৃষ্টাব্দে তিনি সম্রাট কর্তৃক আমন্ত্রিত হইয়। চীন-দেশে গিয়াছিলেন । ইহার পর (৯৮৪ খৃষ্টাব্দ হইতে ৯৮৬ খৃষ্টাব্দে ) ‘লো-হু-না’ (বৌদ্ধ-প্রচারক রাহুল’ চীনাদিগের উচ্চারণে 'লো-ছ-ন’ নাম পরিগ্রহ করেন বলিয়া প্রতিপন্ন হয়) ধৰ্ম্মপ্রচারব্যপদেশে চীনদেশে গমন করিয়া প্রতিষ্ঠাপন্ন হইয়াছিলেন । ৯৯৬ খৃষ্টাব্দে একদল বৌদ্ধশ্রমণ চীনে উপনীত হন । র্তাহার একখানি বাণিজ্য-পেতে ভারতবর্ষ হইতে যাত্রা করিয়াছিলেন। সম্রাটকে উপহার দিবার জন্য র্তাহার কয়েক প্রকার ঘণ্টা, বুদ্ধদেবের প্রতিমূৰ্ত্তি ও তালপত্রে লিখিত কয়েকখানি পুথি লইয়া গিয়াছিলেন। বৌদ্ধধৰ্ম্ম-সংক্রান্ত সেই পুথিগুলি এবং উপহৃত দ্রব্যাদি পাইয়া সম্রাট বিশেষ পরিতুষ্ট হন । ইহার পর, ১০২৪, ১০২৭, ১০৩৪ ও ১০৩৬ খৃষ্টাব্দে বৌদ্ধধৰ্ম্মপ্রচারকগণের চীনদেশে গমনের পরিচয় পাওয়৷ যায়। এই সময় প্রধানতঃ সকলেই বৌদ্ধধৰ্ম্মসংক্রান্ত পুস্তকাদি লইয়। গিয়াছিলেন । ১৯৩৪ খৃষ্টাব্দে নয় জন শ্রমণের চীনদেশে গমনের বিষয় মা-তুয়ান-লিন উল্লেখ করিয়া গিয়াছেন । চীনাদিগের উচ্চারণে র্তাহীদের একজনের নাম—‘সেন-চিং’ রূপ পরিগ্রহ করিয়া আছে। তিনি ‘সুযশ’ বলিয়৷ অধুন। এ দেশে পরিচিতি হইতেছেন। ‘সুযশ’— শ্রমণের গুণবাচক পরিচয় । তাহার সঙ্গী অপর কাজনের নাম ও ঐরূপ বিশেষণমূলক। একজন ধৰ্ম্মপর, একজন গৌরবময়, ইত্যাদি । সম্রাট-সকাশে গমন করিয় তাহার। সংস্কৃত-ভাষায় লিখিত কতকগুলি বৌদ্ধধৰ্ম্ম-গ্রন্থ উপহার দিয়াছিলেন । তাহদের উপহৃত আর আর সামগ্রীর মধ্যে বুদ্ধদেবের অস্থি, বুদ্ধদেবের দন্ত ও বোধিসত্ত্বের প্রতিমূৰ্ত্তি বিশেষ উল্লেখ-যোগ্য। সেই সকল উপহারের বিনিময়ে শ্রমণগণকে সম্রাট রেশমী বস্ত্রাদি উপহার প্রদান করিয়াছিলেন। পরবর্তিকালে বৌদ্ধ-প্রচারকগণের গতিবিধির আর বিশেষ কোনও উল্লেখ দেখা যায় না। খৃষ্টীয় একাদশ শতাব্দীতে ভারতে বৌদ্ধধৰ্ম্মের প্রভাব ক্ষীণ হইয়া