পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৬৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতবর্ষ । 8סלא অবস্থায় পাইয়া শকুন্তলা প্রতিপালন করিয়াছিলেন । শকুন্তলা পতিগৃছে যাইতেছেন বুঝিয়া, সে যেন পথ আবরোধ করিয়া দাড়াইল। শকুন্তলা তাহাকে অনেক করিয়া বুঝাইলেন ; বুঝাইয়া রোদন করিতে করিতে কহিলেন,—“আমার পিতা মহর্ষি কশ্ব তোমার বিষয় চিন্তা কfরবেন ; তুমি ব্যাকুল হইও না ;-জাশুমে প্রত্যাবৃত্ত হও ।’ অবশেষে, শিস্যদ্বয় সহ শকুন্তলাকে পতিগৃহে প্রেরণ সময়ে মহর্ষি উপদেশ দিলেন, “শুশ্ৰুষস্ব গুরূন কুরু প্রিয়সর্থীবৃত্তিং সপত্নীজনে ভর্তুৰ্ব্বিপ্রকৃতাপি রোষণতয়া মাষ্ম প্রতীপং গমঃ। ভূয়িষ্ঠং ভব দক্ষিণ পরিজনে ভোগেবলুৎসেকিনী যান্ত্যেবং গৃহিণীপদং যুবতয়ে বামাংকুলাস্যধয়ঃ ॥” “পতিগৃহে গমন করিয়া গুরুজনের সেবা-শুশ্রুষায় ব্ৰতী হইবে । সপত্নীগণের প্রতি প্রিয়সখীর স্তায় ব্যবহার করিবে। পতি তিরস্কার করিলেও কদাচ ক্রুদ্ধ হইবে না বা তাহার প্রতিকুলাচরণ করিবে না। আপনার সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের প্রতি লক্ষ্য না করিয়া, পরিজনগণের সুখের প্রতি সৰ্ব্বদা দৃষ্টি রাখিবে । এইরূপ আচরণ করিলেই যথার্থ গৃহিণীপদবাচ্য হইতে পারিবে । ইহার বিপরীত আচরণে কুলের পীড়াদায়িনী হইতে হইবে।” ইহার পর, পিত কশ্বের, মাতা গৌতমীর ও সর্থীগণের নিকট বিদায় লইয়া, শাঙ্গ রব ও শারদ্বত নামক কথের শিস্যদ্বয়ের সমভিব্যাহারে শকুন্তলা পতি-গৃহে গমন করিলেন । পতিগৃহে গমন-কালে শকুন্তলা সখীদ্বয়ের উপদেশ-ক্রমে অভিজ্ঞান-রূপ রাজপ্রদত্ত অঙ্গুরী সঙ্গে লইয়। গেলেন । শিষ্যগণ সহ শকুন্তলা রাজ-সমীপে উপনীত হইলে, দুৰ্ব্বাসার অভিশাপক্রমে রাজা শকুন্তলাকে চিনিতে পারিলেন না । শকুন্তলার অভিজ্ঞান-অঙ্গুরীয়ক রাজধানীতে আগমন-কালে জলমধ্যে নিপতিত হয় । সুতরাং শকুন্তলা সে অভিজ্ঞান-অঙ্গুরীয়ক প্রদর্শনেও সমর্থ হইলেন না। রাজা দুষ্মন্ত কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হইয়া শকুন্তলা শোকাভিভূত হইয় পড়েন। সেই সময়ে অঙ্গরার ন্যায় আকৃতি-বিশিষ্ঠ তেজোসম্পন্ন স্ত্রী-মূৰ্ত্তি আসিয়া, . তাহাকে অজ্ঞাত-অজানিত দেশে লইয়া যায়। শকুন্তল অদৃশু হইলে, এক ধীবরের নিকট রাজকৰ্ম্মচারীরা সেই অঙ্গুরীয়ক প্রাপ্ত হন । ধীবর মৎস্যের উদরে সেই অঙ্গুরীয়ক প্রাপ্ত হইয়াছিল। তখন অঙ্গুরীয়ক-দৃষ্টে রাজার পূর্ব-স্মৃতি জাগরুক হয়। রাজা দুষ্মন্ত শকুন্তলার জন্য ব্যাকুল হইয় পড়েন। কখ-শিষ্যদ্বয় যখন শকুন্তলাকে সঙ্গে লইয়। রাজার নিকট উপস্থিত হন, রাজা দুষ্মন্ত তখন বলিয়াছিলেন,—“ইহঁাকে যে কোন কালে বিবাহ করিয়াছি, তাহা স্মরণ হয় না । সুতরাং কিরূপে এই গর্ভবতী কামিনীকে গ্রহণ করিয়া অক্ষত্রিয় বলিয়া হই!” ইহার পর শকুন্তল অদৃগু হইলে রাজা যখন ধীবরপ্রদত্ত অঙ্গুরীয়ক দেখিতে পাইলেন, তখন একে একে সকল কথা তাহার স্মৃতি-পথে জাগিয়া উঠিল । অঙ্গুরীয়ক-দৃষ্টে বিদুষকের সহিত রাজার কথোপকথনে র্তাহার অনুশোচনা পরিস্ফুট। রাজা কছিলেন,—“যখন তপোবন হইতে রাজধানীতে প্রত্যাবৃত্ত হই, প্রিয়া বাষ্পাকুললোচনে কহিতে লাগিলে-আযাপুত্র! আবার কত বিলম্বে আমাকে স্বরণ করিবেন ? আমি তখন প্রিয়ার কোমল কর-পল্লব ধরিয়া বলিলাম,—“আমার নামাঙ্কিত এই অঙ্গুরীয়ক