পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৬৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতবর্ষ । سيراماري মহাবীরচরিত অপেক্ষা ও উত্তররাম-চরিতের কবিত্ব অধিকতর প্রস্ফুট। উত্তররামচরিতের আরম্ভ–লঙ্কা হইতে প্রত্যাবর্তনের পর রামসীতা সিংহাসনে সমারূঢ় ; আমঙ্গেচ্ছাসে রাজভবন উচ্ছ,সিত। প্রথম অঙ্কে প্রথম দৃশুে রাম-সীতা সিংহাসনে উপবিষ্ট । কন্ধুকী আসিয়া অষ্টাবক্র ঋষির আগমন সংবাদ প্রদান করিল। ঋষির আগমনউত্তররামচরিত। সংবাদ শ্রবণ মাত্র সীতাদেবী কছিলেন,—“আৰ্য্য ! তাহাকে অবিলম্বে এখানে আনয়ন করাই বিধেয় ।” ঐীরামচন্দ্র তৎক্ষণাৎ অষ্টাবক্র ঋষিকে তাঙ্গাদের সম্মুখে আনয়ন করিতে কঞ্চকীকে আদেশ কছিলেন । অষ্টাবক্র ঋষি কুলগুরু বশিষ্ঠ দেবের নিকট হইতে আগমন করিয়াছিলেন । বশিষ্টদেব যজ্ঞকার্য্যে ব্ৰতী থাকায় রাজ্যভিষেক উৎসবে উপস্থিত হইতে পারেন নাই ; তাই অষ্টাবক্রের দ্বারা সংবাদ পাঠাইয়াছিলেন ও আশীৰ্ব্বাদ জানাইয়াছিলেন। ধশিষ্ঠের পক্ষ হইয়া অষ্টাবক্র জ্ঞাপন করেন,—মহর্ষি জানাইয়াছেন, আপনি প্রজাপালনে যশস্বী হইলেই আমরা পরম লাভবান হইব । ফলতঃ, স্ত্রীরামচন্দ্র আদর্শ প্রজাপালক বলিয়া প্রসিদ্ধিলাভ করুন, ইহাই সকলের ঐকান্তিক কামনা । বশিষ্ঠ প্রভৃতির ঐরূপ আকাঙ্ক্ষার পরিচয় পাইয়া শ্রীরামচন্দ্র তাহাতে উত্তর করিলেন,— “স্নেহং দয়াঞ্চ সখ্যঞ্চ যদি বা জানকীমপি । আরাধনায় লোকানাং মুঞ্চতো নাস্তি মে ব্যথা ॥” এষ্ট উত্তরট কবি এমনই কৌশলে ব্যক্ত করিয়াছেন যে, এই উক্তিতে যুগপৎ খ্রীরামচন্দ্রের চরিত্র এবং ভবিষ্যৎ ঘটনার আলেখ্য চিত্রিত হইয়া আছে। ঐ দুষ্ট পংক্তিই নাটকের প্রাণস্বরূপ। বুঝিতে পারা যায়, উছাতেই কবি প্রকারান্তরে বলিয়া দিলেন, কি অবস্থা হইতে কি ঘটনা সংঘটিত হইবে । অষ্টাবক্র প্রস্থান করিলে, লক্ষ্মণ কতকগুলি চিত্রপট লইয়া রামসীতার সন্নিধানে উপস্থিত হইলেন ; কহিলেন,—“আৰ্য্য ! সেই চিত্রকর এই চিত্রপটসমূহ অঙ্কিত করিয়াছেন । ইহাতে আপনার অতীত জীবনের ইতিহাস বিবৃত হইয়াছে।’ এই বলিয়া লক্ষ্মণ এক-একথানি চিত্ৰপট দেখাইতেছেন, আর সেই চিত্রপটের বিষয় বুঝাইয়া দিতেছেন। এক একটী চিত্রপটের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া স্ত্রীরামচন্দ্রের ও সীতাদেবীর মনে কত ভাবেরই উদয় হইতেছে। কখনও অতীত দুঃখের কাহিনী স্মরণ করিয়া তাহদের নয়ন অশ্রুল্লাবিত হইতেছে ; কখনও বা শ্রীরামচন্দ্রের শৌর্য্য-বীর্য্যের বিষয় অবগত হইয়া সীতাদেবী আনন্দে উৎফুল্ল হইতেছেন। এই সময়ে শ্রীরামচন্দ্রের চরিত্রে তাহার মহত্ত্বের একটা উজ্জল চিত্র প্রকটত দেখি। চিত্রের বিষয় বর্ণন করিতে করিতে করিতে লক্ষ্মণ একবার ঐরামচন্দ্রের প্রশংসা-কীৰ্বন করিলেন। আত্ম-প্রশংসা-শ্রবণে একটু যেন বিরক্তি বোধ হইল। ঐ রামচন্দ্র তাই আক্ষেপ করিয়া কহিলেন,—“বহুতরং দ্রষ্টব্যমন্ততে দর্শয় -দেখাইবার জিনিষ আরও অনেক আছে ; তৎসমুদায় দেখাইয়া যাও ।” যে চিত্র প্রসঙ্গে ত্রীরামচন্দ্রের ঐরূপ আক্ষেপেক্তি প্রকাশ পায়,—সে চিত্র ভার্গবের পরাজয়-সংক্রান্ত। লক্ষ্মণ দেখাইতেছেন,—‘আৰ্য্য ! এই একটা দ্রষ্টব্য জিনিষ দেখুন। এই দেখুন-ভগবান ভার্গব । ভার্গবের নাম শুনিয়াই সীতাদেবী সসন্ত্রমে কহিলেন,—“ইহঁাকে দেখিলে হৃৎকম্প উপস্থিত হয়।’ লক্ষ্মণ তাহাতে উত্তর দিলেন,–কিন্তু এই দেখুন, আৰ্য্য কি ভাবে তাহার দর্প চূর্ণ করিতেছেন ? এবম্বিধ প্রশংসা