পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৭৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

83, o ভারতবর্ষ । পঞ্চতন্থের ও চিতোপদেশের পর, বেতাল-পঞ্চবিংশতি, কথাসরিৎসাগর, শুকসপ্ততি, বৃহৎকথা, প্রভৃতি গল্প-গ্রন্থ-সমুহের নাম উল্লেখযোগ্য। বেতাল-পঞ্চবিংশতি বিক্রমাদিত্যের সিদ্ধিলাভবিষয়ক উপাখ্যান-মুলক। ঐ গ্রন্থ অনুসারে অবগত হওয়া যায়-বিক্রমীবেতাল-পঞ্চবিংশতি। দিত্যের পূর্বে উজ্জয়িনীর যিনি রাজা ছিলেন, তাহার নাম—শষ্ণু। শঙ্কুর মৃতুর পর বিক্রমাদিত্য উজ্জয়িনীর সিংহাসন অধিকার করেন। সেই সময় একজন যোগী আসিয়া তাঙ্গকে সিদ্ধি-লাভের পথ দেখাইবার লোভে প্রলুব্ধ করিয়াছিলেন। সন্ন্যাসীর একটী নির্দিষ্ট সাধনা-স্থান ছিল । দুই ক্রোশ দূরস্থিত শিরিষ-বৃক্ষে লম্বিত একটা শব আনয়ন করিবার জন্ত সন্ন্যাসী বিক্রমাদিত্যকে আদেশ করেন । শব-আনয়ন-কালে বিক্রমাদিত্য কোনরূপ বাক্য উচ্চারণ না করেন, তাহার প্রতি সন্ন্যাসীর এইরূপ উপদেশ থাকে । কিন্তু একটা বেতাল সেই শবটি অধিকার করিয়া ছিল । বিক্রমাদিত্য বৃক্ষ হইতে শবটকে নামাইয়া লইয়া যখন যোগীর নিকট আসিতেছিলেন, সেই সময়ে বেতাল তাঙ্গার অনুসরণ করে এবং নানারূপ গল্প ফাদিয়া বসে । এক একটা গল্প বলিয়া গল্পচ্ছলে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিয়া, বিক্রমাদিত্যের নিকট বেতাল উত্তব-প্রার্থী হয়। বিক্রমাদিত্য যেই প্রশ্নের উত্তর দেন, শব তাহার হস্তম্বলিত হইয়া, পুনরায় সেই বৃক্ষে গিয়া সংলগ্ন হয়। এইরূপে বেতাল, পঞ্চবিংশতি গল্পের অবতারণা কবে এবং বিক্রমাদিত্য তাহার যথাযথ উত্তর দেন । তখন সস্তুষ্ট হইয়া বেতাল তাহাকে সন্ন্যাসীর নিগুঢ় উদ্দেশ্বের বিষয় বিবৃত কবে । সন্ন্যাসী তাহাকে হত্যা করিয়া স্বয়ং সিদ্ধিলাভ করিবেন, সঙ্কল্প কবিয়াছিলেন। বেতালের নিকট সেই সন্ন্যাসীর নিগুঢ় অতিপ্রায় জানিতে পারিয়া বিক্রমাদিত্য খড়্গাঘাতে সন্ন্যাসীকে নিহত করেন । তাহাতে, বেতালের উপদেশ অনুসাবে, বিক্রমাদিত্যের সিদ্ধিলাভ ঘটে । স্থূলতঃ, ইহাই বেতাল-পঞ্চবিংশতির বর্ণনীর বিষয়। তবে বে ভাল-কথিত গল্পে ও প্রশ্নে অনেক নীতিশিক্ষা পাওয়া যায়। এরূপ সরল শিক্ষাপ্রদ কৌতুহলোদ্দীপক গল্প অতি অল্পই আছে ; তাই এই গ্রন্থ বহু বৈদেশিক ভাষায় অনুদিত হইয়াছে। বেতাল পঞ্চবিংশতি গ্রন্থের রচয়িতা বলিয়া তিন জন গ্রন্থকারের নাম উল্লিখিত হইয়া থাকে ;–বেতালভট্ট, শিবদাস, জস্তুল্লদত্ত । ইহাদের মধ্যে শিবদাসভট্টের নামই বিশেষভাবে উল্লিখিত হয়। বেতাল পঞ্চবিংশতি গ্রন্থে একটা বিশেষ সময়ের রীতি-নীতির ও আচার-ব্যবহারের পবিচয় পাওয়া যায় । বেতাল-পঞ্চবিংশতির পরই কথাসরিৎসাগরের প্রসঙ্গ উল্লেখযোগ্য। কথাসরিৎসাগর—কাশ্মীব-দেশীয় পণ্ডিত সোমদেব কর্তৃক সংস্কৃত ভষায় লিখিত হয়। পৌত্র চর্ষদেবের অকাল-মৃত্যুতে রাস্ত্রী স্বৰ্য্যবর্তী অধৈৰ্য্য হন। র্তাহাকে সাস্বনা দিবার জন্ত পণ্ডিত সোমদেব ঐ গল্পগুলি লিপিবদ্ধ করেন। কথিত হয়, কথাসরিৎসাগরের গল্পাংশ, দক্ষিণাত্যে প্রচলিত পৈশাচী ভাষায় লিখিত বৃহৎকথা নামক গ্রন্থের সার-সঙ্কলনে গ্রথিত হইয়াছিল। গ্রন্থের উপক্রমণিকায় কথাসরিৎসাগর । লিখিত আছে,-পাণিনির সমালোচক ও চন্দ্রগুপ্তের মন্ত্রী কাত্যায়ন এই কথাসরিৎসাগরের গল্প গুলির প্রবর্তৃয়িতা। তাহার নিকট হইতে একজন পিশাচ কর্তৃক ঐ গল্পগুলি দাক্ষিণাত্যে প্রচাবিত হয়। গুণাঢ্য উহ পৈশাচী ভাষায় লিপিবদ্ধ করিয়াছিলেন। রামায়ণ-মহাভারতের গল্প, পুৰাণের বহু গল্প, পঞ্চতন্ত্রের অনেক উপাখ্যান, বেতাল