পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৭৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8.98 ভারতবর্ষ। প্রদেশের শলাতুর গ্রাম তাহার জন্মস্থান ; তাহার মাতার নাম—সাক্ষী-দেবী। পাটলিপুর নগরে বর্ষ উপাধ্যায়ের নিকট তিনি বিস্তাশিক্ষা করিতে আসেন। কিন্তু গুরুগৃহে দীর্ঘকাল বাস করিয়াও কোনও সুফল লাভ হয় না । সুতরাং তিনি হিমালয় প্রদেশে গমন করিয়া দেবাদিদেব মহাদেবের তপস্তায় রত হন । তাহার তপস্তায় সন্তুষ্ট হইয়া মহাদেব তাহাকে বিদ্যাদান করেন। পতঞ্জলির মহাভাষ্য, নন্দিকেশ্বর কৃত কারিক ও পাণিনীয়-শিক্ষা প্রভৃতি বহু প্রাচীন গ্রন্থে তাহার এই দেবাসুগ্ৰহলাভের বিষয় লিখিত আছে । আট অধ্যায়ে বিভক্ত বলিয়া পাণিনির ব্যাকরণ অষ্টাধ্যায়ী-স্বত্র নামে প্রসিদ্ধ। প্রতি অধ্যায় চারি ভাগে বা পাঙ্গে বিভক্ত। গ্রন্থে প্রায় চারি সহস্ৰ স্বত্র আছে। ম্যাক্সমুলার, বোলিং, লাসেন, বুলার প্রভৃতি পণ্ডিতগণ পাণিনিকে খৃষ্ট-পূৰ্ব্ব চতুর্থ শতাব্দীর গ্রন্থকার বলিয়া নির্দেশ করিয়াছেন। গোল্ডইকারের মতে তিনি খৃষ্ট-জন্মের ছয় শত বৎসর পূৰ্ব্বে বিদ্যমান ছিলেন। কিন্তু স্বক্ষ-গণনাক্রমে পাণিনির বিদ্যমান-কাল খৃষ্টজন্মের সহস্ৰ বৎসর পুৰ্ব্বে নির্দিষ্ট হয়। ডক্টর ভাণ্ডারকর পাণিনিকে খৃষ্ট-পূৰ্ব্ব অষ্টম শতাব্দীর বলিয়া প্রতিপন্ন করিয়াছেন। • পাণিনির ব্যাকরণ স্বত্রকারে গ্রথিত । সুতরাং পরবর্তিকালে টকা ব্যাখ্যা প্রভৃতির দ্বারা উহার স্বত্রসমূহ বিশদীকৃত করা হইয়াছে। বাৰ্ত্তিক, মহাভাষ্য, পরিভাষা প্রভৃতি নামে সেই সকল ব্যাখ্যা পরিচিত। পাণিনি-স্থত্রের প্রথম ব্যাখ্যাকৰ্ত্তা বলিয়া কাত্যায়ন প্রসিদ্ধ। কাত্যায়নের ব্যাথার নাম—বাৰ্ত্তিক । সেই বাৰ্ত্তিক ব্যাখ্যার উপর, পতঞ্জলি মহাভাষ্য রচনা করেন। এই কাত্যায়ন ও পতঞ্জলি সম্বন্ধে নানা মতান্তর আছে এবং তাঁহাদের বিভিন্ন নাম পরিকল্পিত হহয়া থাকে। পতঞ্জলিকে গোনদ এবং কাত্যায়নকে বররুচি, মেধাজিৎ ও পুনৰ্ব্বসু প্রভৃতি নামেও অভিহিত করা হইয়াছে । সুত্র, বাৰ্ত্তিক ও মহাভাৰ্য্য—এক হিসাবে এই তিন লহঁয়াই পাণিনির ব্যাকরণ। পতঞ্জলির মহাভাষ্ণুের ‘ভাষ্যপ্রদীপ’ নামে একটী টীকা আছে। কৈয়ট নামক জনৈক পণ্ডিত ঐ টীকা রচনা করেন। পাশ্চাত্য-পণ্ডিতগণ, কৈয়টকে খৃষ্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীর পণ্ডিত ও কাশ্মীরদেশের অধিবাসী বলিয়া নির্দেশ করিয়া গিয়াছেন । কৈয়ট যে ‘ভাষ্য-প্রদীপ রচনা করিয়া যান, নাগোজী ভট্ট এবং ঈশ্বরানন্দ তাহার টীকা প্রণয়ন করেন। নাগোজী ভট্টের টীকার নাম—পরিভাষেন্দুশেখর ; ঈশ্বরানন্দের টীকার নাম— ভাষ্যপ্রদীপবিবরণ। পতঞ্জলির মহাভাস্থ্যের উপর ভর্তৃহরি যে টীকা লিখিয়া যান, তাহার নাম—বাক্যপদীয় । তিনি শ্লোকে ঐ টীকা লিখিয়াছিলেন । এই সকল এবং অস্তান্ত বহু টকা, ভাষ্য, উপটক, উপভাষা প্রভৃতির বিষয় আলোচনা করিলে, ব্যাকরণের বিষয়ে কিরূপ গবেষণা চলিয়াছিল, তাহ বেশ প্রতীত হয়। অষ্টাধ্যায়ী ভিন্ন পাণিনি আরও দুই তিন খানি গ্রন্থ রচনা করেন। সেই গ্রন্থ কয়েক খানির নাম-ধাতুপাঠ, লিঙ্গান্থশাসন, শিক্ষা-গ্রন্থ প্রভৃতি। পাণিনির ব্যাকরণ অবলম্বনে যে সকল গ্রন্থ পরবর্তিকালে রচিত হয়, তন্মধ্যে পুরুষোত্তমদেবের ভাষাবৃত্তি’, ভট্টজী দীক্ষিতের শক্ৰকৌস্তুভ ও সিদ্ধাস্তকৌমুদী,নাগেশ

  • Max Muller's Ancient Sanscrut Literature, Dr. Bothlingk's Pamini, Prof. Lassen's

Indische Alterthumskunde, Goldstucker's Panini, Dr. Bhandarker's Article in the Journal of the Bombay Braneh of the Royal Asiatic Society, 1885,