পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৮৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఫిe ভারতবর্ষ । সরস্বতী নদীর উত্তরে এই দক্ষিণ-প্রয়াগ অবস্থিত। এই স্থানে গঙ্গা-যমুনা পৃথক হইয়াছেন। প্রয়াগ স্বানে যে ফল, এখানে স্নান করিলেও সেই অক্ষয় পুণ্য লাভ হয়। “ইয়ং মুক্তবেণীতি কথ্যতে প্রয়াগে যুক্তবেণী ।” যে বঙ্গদেশকে অপবিত্র বলিয়া মনুসংহিতার প্রক্ষিপ্ত শ্নোকে ঘোষণা করা হইয়াছে, বুঝিয়া দেখুন, সেই বঙ্গদেশের কত মাহাত্ম্য ! এই ত্রিবেণীমাহাত্ম্য স্মরণ করিলে, বেদ-বণিত আর্য্য-ঋষিগণের লীলা-নিকেতন গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতীয় মধ্যবর্তী প্রদেশ—এই বঙ্গদেশ বলিয়াই স্পৰ্দ্ধা করিতে পারি না কি ? পাৰ্ত্ত রঘুনন্দনোক্ত যে প্রছায়-নগরের বা প্রদায়-হ্রদের নাম দেখিলাম, তাহাতেও বঙ্গদেশের এক প্রাচীন স্থতি মনোমধ্যে জাগরুক হয়। প্রদ্যুম্ন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত নগর-প্রদ্যুম্ন-নগর সংজ্ঞা লাভ করে । প্রদ্যুম্ন—শ্ৰীকৃষ্ণের জংশাবতার। স্বয়ং কামদেবও প্রদ্যুম্ন নামে অভিহিত হন। আবার রুক্মিণী-গর্ভে প্রছায় নামে বাসুদেবের এক পুত্রসন্তান জন্ম গ্রহণ করেন। যেখানে ত্রিবেণীসঙ্গম, তাহার সন্নিকটে ঐ সকল দেবতার অধিষ্ঠানই সম্ভবপর। র্ত্যহাদের অধিষ্ঠানভূত স্থানই তাহাদের পুণ্য-স্মৃতি বক্ষে ধারণ করিয়া ছিল বুঝা যায়। কিন্তু এখন সে স্থান অনুসন্ধান করিয়া পাওয়া দুঃসাধ্য। তবে প্রাচীন পুথি-পত্র হইতে অবগত হওয়া যায়, বর্তমান পাণ্ডুয়। (পেড়ে। ) পূৰ্ব্বে প্রদ্যুম্ন-নগর নামে পরিচিত ছিল। পাণ্ডুয়ার দক্ষিণে ত্রিবেণী অবস্থিত বলিয়া এবং উহার পূর্ব-নাম প্রদ্যুম্ন-নগর জানিয়া, অধুনা ঐ স্থানকেই প্রস্থ্যম্ন-নগর বলিয়া নির্দেশ করা হয়। কিন্তু প্রচু্যয়-হ্রদ বা সরোবর কোথায় ছিল, অনুসন্ধান করিয়া পাওয়া যায় না। ফলতঃ, যেমন ত্রিবেণী-তীর্থের অবস্থানে, তেমনই প্রত্যুম্ন-নগরের বিদ্যমানে—দেবাধিষ্ঠানে—বঙ্গদেশ পুণ্যপূত ছিল । কবিকঙ্কণ-বিরচিত চণ্ডীকাব্যেও ত্রিবেণীর সমৃদ্ধির, বাণিজ্যের ও পুণ্যমাহায্যের এইরূপ পরিচয় পাওয়া যায় ; “বামদিকে হালিসহর দক্ষিণে ত্রিবেণী । যাত্রীদের কোলাহলে কিছুই না শুনি ॥ লক্ষ লক্ষ লোক এককালে করে স্নান । বাস হেম তিল ধেনু দ্বিজে দেয় দান ॥ গর্ভে বসি শিবপূজা করে কোনজন। রজতের সিপে কেহ করয়ে তৰ্পণ ॥ শ্ৰাদ্ধ করে কোন জন জলের সমীপে। সন্ধ্যাকালে কোন জন দেয় ধূপদ্বীপে । ত্রিবেণী তীর্থের চূড়ামণি । আশ্রম করিয়া তথি, করে স্বান ধনপতি, তরি পুরে নানা ধন কিনে ৷” ক্ষেমানন্দ ও কেতকাদাস বিরচিত ‘মনসার ভাসান’ কাব্যে ত্রিবেণী-সন্নিহিত কালীদহের উল্লেখ আছে। কবিদ্বয়ের বর্ণিত নেত। ধোপানীর পাট, ত্রিবেণীর সন্নিকটে জাজিও চিহ্নিত হইয় থাকে । ‘মনসার ভাসান’ – বেহুলার উপাখ্যান বঙ্গদেশের অনেক কবি অনেক ভাবে বিবৃত করিয়া গিয়াছেন। র্তাহাদের বর্ণনায় প্রায়ই র্তাহাদের আপন-আপন বাসস্থানের সমীপবৰ্ত্তী জনপদের চিত্র অঙ্কিত হইয়াছে। ক্ষেমানন্দ ও কেতকাদাসের বর্ণনা হইতে টাঙ্গ সদাগরের বাসস্থানের যে নিদর্শন পাই, তাহাতে বৰ্দ্ধমান-বিভাগের কোন গওগ্রামে চাদ সদাগরের বসতি ছিল বলিয়। প্রতিপন্ন হয়। সেই গ্রামের নাম-চম্পকনগর । এই চম্পকনগর ও চাদ সদাগরের সহিত প্রাচীন বাঙ্গালার ষে এক অভিনৰ স্থতি বিজড়িত হইয়া আছে, সে প্ৰতি কতকাল পূৰ্ব্বের,তাই,নির্ণীত ন হইলেও, কখনই লোপ পাইবে নু। সৰ্পদষ্ট মৃত্তগড়ি