পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৯০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨ & ૦ ভারতবর্ষ | ভূ ইয়। বা সামন্ত-রাজগণ জমিদার’ আখ্যা লাভ করেন। সঙ্গে সঙ্গে ভূম্যধিকারীর বা জমিদারের সংখ্যাও বাড়িয়া যায় ; ভৌমিক বা সামন্ত-রাজগণের যে ক্ষমতা ছিল, জমিদারগণের ক্ষমত। তাহার অপেক্ষ। অনেক কমিয়া আসে। তবে, তখনও জমিদারগণ সৈন্যদল রক্ষা করিতে পারিতেন। জমিদারীর সুশৃঙ্খলা-রক্ষায় এবং আবশুকমত বাদসাহের সহায়তায় সেই সৈন্যদল নিযুক্ত হইত। আইন-ই-আকবরী গ্রন্থে প্রকাশ,—‘ভূইয়া-প্রথ৷ পরিবর্তিত হওয়ার পরও বাঙ্গণলার জমিদারগণ সৈন্যদল পোষণ করিতে পারিতেন । তাহাদের অধীনে তখনও ২৩, ৩৩০ জন অশ্বারোহী, ৮,০৯,১৫০ জন পদাতিক, ১৭০টা হস্তী ৪,২৬০টা কামান, ৪,৪০০ খানি রণতরী রাখার ব্যবস্থা ছিল । এখন ভারতবর্ষের অধিকাংশ করদ-মিত্র রাজন্ত যে ক্ষমতার অধিকারী, বাঙ্গালার ভূস্বামিগণ তখনও সেই শক্তির অধিকারী ছিলেন । তখন, কোনও প্রদেশে কোনরূপ বিপ্লব উপস্থিত হইলে, বঙ্গের প্রতিনিধিশাসনকৰ্ত্তার ইঙ্গিতক্রমে, বাঙ্গালার ভূস্বামিবৰ্গই সেই বিপ্লব দমন করিতেন। মুসলমানশাসনের শেষ সময় পর্য্যন্ত সেই প্রথা অব্যাহত ছিল । অৰ্দ্ধবঙ্গেশ্বরী মহারাণী ভবানীর রাজত্বকালে সীতারাম রায় প্রভৃতির সহিত যুদ্ধে এ প্রথারই অনুসরণ দেখিতে পাই । সীতারাম রায় যখন মহম্মদপুরে স্বাধীন-হিন্দু-রাজত্ব প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হন, বাঙ্গালার তাৎকালিক সুবেদার মুর্শিদ-কুলি-খার পক্ষ-অবলম্বনে নাটোর-রাজধানী হইতে দেওয়ান দয়ারাম রায় তখন সসৈন্তে মহম্মদপুরে গমন করেন। সীতারাম রায়ের সহিত যুদ্ধে প্রথমে নবাবের সৈন্যদল প্রমাদ গণিয়ছিল ; কিন্তু নাটোরের সৈন্যদল গিয়া সীতারাম রায়কে পরাজিত ও বন্দী করিতে সমর্থ হয় । দয়ারাম রায় প্রভৃতির কৌশলে সীতারাম রায় বন্দী ও হৃতসৰ্ব্বস্ব হইলেও র্তাহার বীরত্ব-থ্যাতি বঙ্গের ইতিহাসে জাজ্জ্বল্যমান সীতারাম থাকিবে । সীতারাম যখন প্রতিষ্ঠান্বিত হইয়া উঠিলেন, তখন যশোহররায় । প্রদেশ বারটী চাকলায় বিভক্ত ছিল। তাহার প্রতি চাকৃলায় এক একজন পরাক্রমশালী ভূস্বামী প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। সেই ভূস্বামিগণ প্রত্যেকেই স্বাধীনতা অবলম্বনে প্রয়াসী হন;– প্রত্যেকেই বাদসাহকে রাজস্ব-প্রদানে অস্বীকার করেন । বাদসাহ বাহাদুরসাহের এবং ফেরোক্সাহের সময়ে ঐ প্রদেশের এইরূপ অবস্থা ঘটিয়াছিল। তখন বাদসহ, সেই সকল অবাধ্য ভূস্বামিগণকে বশীভূত করিবার জন্ত, সীতারাম রায়ের সাহায্য গ্রহণ করিয়াছিলেন। সী তারাম বাহুবলে সেই দ্বাদশ চাকুলায় আপন আধিপত্য বিস্তার করেন। ফলে, বাদসাহ উহাকে স্বাদশ চাকুলার অধিপতি রাজা’ বলিয়া স্বীকার করিয়া লন। ইহাতে বলদৃপ্ত হইয়া সীতারাম রায় বাঙ্গালার নবাবের প্রধান্ত উড়াইয়। দিতে চান। সুতরাং নবাবের সহিত র্তাহার বিষম সমর উপস্থিত হয় । নবাবের সৈন্তদল সীতারাম রায়ের সহিত যুদ্ধে পুনঃপুনঃ পরাজিত হওয়ার পর, নবাবের জামাতা আবু তরাব নবাব-পক্ষের সৈন্ত-পরিচালনার ভার প্রাপ্ত হন । কিন্তু সীতারাম রায়ের সেনাপতি মেনহোতী, যুদ্ধে আবু তরাবকে পরাজিত করেন এবং তাহার ছিন্ন-মস্তক আনিয়া সীতারাম রায়কে উপহার দেন। এই অপমান-জনক বিষম সমরের বিষয় স্মরণ করিয়া, প্রতিশোধপ্রবৃত্তি নিবৃত্তির জন্য, নবাব মুর্শিদ-কুলী-ধ। সীতারাম-দমনে বঙ্গের ভূস্বামিবগের সহায়তা