পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৯১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বঙ্গের গৌরব-বিভব । ९ ** ২•৮ পৃষ্ঠায় ) পাইয়াছি। তবেই বুঝা যায়, তাহদের সময় পৰ্য্যন্ত বঙ্গদেশের আধুনিকত্বের বিষয় কাহারও মনে উদয় হয় নাই। কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয়, অধুনা ঐ মতই প্রবল । মহাভারতের উক্তিতে ঐ ভ্রান্ত মত কিসে উৎপন্ন হইল, তাহার কারণও অকুসন্ধান করিয়া ন পাওয়া যায়, এমন নহে। কালীপ্রসন্ন সিংহের অনুবাদে পূৰ্ব্বোক্ত অংশের পর লিখিত আছে,—“তখন লোমশ কহিলেন, মহারাজ ! এই সমস্ত প্রদেশকেই লোকে কলিঙ্গ বলিয়া নির্দেশ করে ; এই স্থানে স্রোতস্বতী বৈতরণী প্রবাহিত হইতেছে;” ইত্যাদি । এই অংশের “এই সমস্ত প্রদেশকেই” বাক্যে যত বিভ্ৰম আনয়ন করিয়াছে। কিন্তু উহার পূৰ্ব্বে যে ভখন’ শব্দ দ্বারা ‘কলিঙ্গ-দেশে উপনীত হওয়ার পর’ অর্থ সূচিত হইতেছে, তৎপ্রতি কাহারও লক্ষ্য পড়িতেছে না । বিভ্রম এইরূপেই ঘটিয়া থাকে । ‘রাজতরঙ্গিণীতে ললিতদিত্যের সমুদ্র-দর্শন-বিষয়ে যাহ। বর্ণিত আছে, তাহাতেও গৌড়-রাজধানীর নিয়েই য়ে সমুদ্র ছিল—এমন বুঝা যায় না। রাজতরঙ্গিণীর বঙ্গানুবাদ হইতে এতদ্বিষয়ক কয়েক পংক্তি উদ্ধৃত করিতেছি ; যথা,—“গৌড়মণ্ডল হইতে অগণিত দন্তিদল যেন নৃপতির রাজলক্ষ্মীর পৰ্য্যাঙ্কবাহী হস্তীর মিত্রতায় অকৃষ্ট হইয়। র্তাহার আশ্রয় গ্রহণ করিলেন । র্তাহার অগ্রগামী সৈন্যগণ পূৰ্ব্ব-সমুদ্রে উপস্থিত হইল। যুদ্ধগজবৃন্দ তাহাদের কর দ্বার সাগরের তরঙ্গমালারূপ কেশরাশি আকর্ষণ করিয়া যেন তাহাকে গ্রহণ করিল। তিনি বনরাজিশুমল সমুদ্রতীরমাগে দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হইতে লাগিলেন ও র্তাহার রিপুকুল অসিধারা-পথে পতিত হইয়া শমন-ভবনে গমন করিল।” রাজতরঙ্গিণীর এক ‘গৌড়মণ্ডল’ শব্দেই বুঝাইয়। দিতেছে—কেবল রাজধানীটি নহে—সমগ্র ‘গৌড়দেশ’ । গৌড়দেশ বা বঙ্গদেশের পরেই তে সমুদ্র ! গৌড়দেশ হইতে র্তাহারা সমুদ্রতীরে উপনীত হইয়াছিলেন, এ বাক্যে প্রাচীন গৌড় বা মালদহের নিয়ে সমুদ্র ছিল প্রতিপন্ন হয় না । ললিতাদিত্যের বঙ্গদেশ আক্রমণের অব্যবহিত পরেই বা সমসময়ে পাল-বংশ প্রতিষ্ঠান্বিত হন। পূৰ্ব্ববঙ্গের অনেক স্থানেই র্তাহীদের কীৰ্ত্তি-স্মৃতি আজিও লোপ পায় নাই । দেশ যদি সমুদ্রগর্ভেই নিমগ্ন থাকিবে, তাহা হইলে পাল-বংশীয় নৃপতিগণের পূর্ববঙ্গে রাজধানী স্থাপনের কি সস্তাবনা ছিল ? এইরূপ, ললিতাদিত্যের গৌড়-জয়-কাহিনী প্রচারের কয়েক বৎসর পরে, নবদ্বীপ যে সেন বংশের রাজধানী-রূপে পরিণত ও গৌরবান্বিত হইয়াছিল, তাহতেই বা কি প্রমাণ পাই ? ফলতঃ বিবিধ যুক্তি স্বারাই সপ্রমাণ হয়, ললিতাদিত্যের সময়েও বঙ্গদেশের অস্তিত্ব ছিল। অপর যুক্তি—মেগাস্থিনীসের পাটলিপুত্র-দর্শন । মেগাস্থিনীস প্রকৃত কথা কি লিখিয়াছিলেন, তাহ অনুসন্ধান করিয়া পাওয়া মুকঠিন। র্তাহার মূল-গ্রন্থ বিলুপ্ত হইয়াছে। সেই লুপ্ত গ্রন্থের অংশ-বিশেষ অনুবাদিত হইয়া জৰ্ম্মাণ-ভাষায় প্রকাশিত হয়। তাহাই জাবার নকলের নকল হইয়া ইংরাজী প্রভৃতি ভাষায় স্থান লাভ করিয়াছে । অপিচ, এ অবস্থায়ও মেগাস্থিলীসের বিবরণ যাহা পাওয়া যায়, তাহা অসম্পূর্ণ। দক্ষিণ-বঙ্গের বর্ণনাব্যপদেশে মেগাস্থিলীস বলিয়া গিয়াছেন বলিয়া প্রকাশ-কলিঙ্গ-দেশ সমুদ্রের নিকটে অবস্থিত ; মান্দু এবং মাল্পিগণ উত্তরাংশে বাস করে ; গঙ্গারিদেশ গঙ্গার মোহনঞ্জ অবস্থিত ; মোদো-কলিঙ্গ গঙ্গাস্তবস্ত্রী একটা দ্বীপ-বিশেষ। এ বর্ণনা হইতে কি বুৰিক্ষে