পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - দ্বিতীয় খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৩৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪০ . ভারতবর্ষ। গােত্রের পরিচয় দিয়া থাকেন; যেমন শান্ডিল্য ঋষির বংশধরগণ শান্ডিল্য গােত্র, বাৎস্য ঋষির বংশধরগণ বাৎস্য গােত্র, বসিষ্ঠ ঋষির বংশধরগণ বসিষ্ঠ গােত্র, ইত্যাদি। ভিন্ন ভিন্ন গ্রন্থে গোত্রের সংখ্যা ভিন্ন ভিন্ন রূপ দৃষ্ট হয়। কোনও গ্রন্থে চব্বিশটা, কোনও গ্রহে আটত্রিশটা, কোনও গ্রন্থে বিয়াল্লিশটা এবং কোনও গ্রন্থে কোটী গােত্রের উল্লেখ আছে। সে সকল দেখিয়া মনে হয়, বংশে যে যে প্রধান পুরুষ জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন, কালক্রমে তাহারাই গােত্র-প্রবর্তক ঋষি মধ্যে গণ্য হন। আশ্বলায়ন সূত্রে গােত্র-প্রবর্তক আট জন প্রধান ঋষির নাম দৃষ্ট হয়; যথা - ভৃগু, অঙ্গিরস, অত্রি, বিশ্বামিত্র, কশ্যপ, বসিষ্ঠ, অগস্ত্য। সে স্থলে গৌতমকে এবং ভরদ্বাজকে অঙ্গিরস গােত্রের শাখার মধ্যে গণ্য করা হইয়াছে। উক্ত আট গোত্র হইতে যে সকল গােত্রের উৎপত্তি হইয়াছে, কমলাকর ভট্টের “নির্ণয়-সিন্ধু" গ্রন্থে তাহার বিশদ তালিকা দৃষ্ট হয়। সেই তালিকা অনুসারে বুঝিতে পারা যায়-কশ্যপ হইতে পাচটা গােত্রের উৎপত্তি হইয়াছে -১) কাশ‍্যপ (২) নৈধ্রুব, (৩) শান্ডিল‍্য, (৪) রেত, (৫) লৌগাখ্য; বসিষ্ঠ হইতেও ঐরূপ পাঁচটা গােত্রের উদ্ভব,-(৩) বাসিষ্ঠ, (২) কৌন্ডিণ‍্য, (৩) ঔপমন্যু, (৪) পারাশর ও (৫) জাতুকর্ণ; অগস্ত্য হইতে আগস্ত্য, সােমভব, যজ্ঞভব, সামভব, দ্বারভব, ইধ্মভব, সম্ভব; ভৃগু হইতে জামদগ্নি, বিদ, অরিষ্টসেন, শাল্ক, মৈত্রেয়ু, বৈনের, সৌনিক প্রভৃতি; অত্রি হইতে আত্রেয়, ধনঞ্জয়, বাদভূতক, মৌদগল‍্য প্রভৃতি। আঙ্গিরস হইতে গৌতম শাখায় বামদেব, দীর্ঘতমস, ঔশনস প্রভৃতি দশটী গােত্র; কেবল অঙ্গিরস শাখা হইতে হারীত কান্ব প্রভৃতি ছয়টা গোত্র ; ভরদ্বাজ শাখা হইতে ভরদ্বাজ, গার্গ্য ঋক্ষ প্রভৃতি চারিটী গােত্র; এবং বিশ্বামিত্র হইতে কুশিক, ধনঞ্জয়, লােহিত প্রভৃতি দশটী গােত্র উৎপন্ন হইয়াছে। মৎস্যপুরাণে ভৃগু-বংশেই অনুন‍্য নব্বই জন গােত্র-প্রবর্তক ঋষির নাম দৃষ্ট হয়। সেই সমস্ত গােত্রের প্রবর একরূপ। অঙ্গিরস বংশেরও চৌত্রিশ জন গােত্র-প্রবর্তক ঋষির নাম মৎস্যপুরাণে লিখিত আছে; সেই চৌত্রিশ জনেরও প্রবর এক। ঐরূপ অত্রি-বংশে, ভৃগু-বংশে, বসিষ্ঠ-বংশেও গােত্র প্রবর্তক ঋষির সংখ্যা অনেক দৃষ্ট হয়। যাহাদেয় প্রবরে ও গােত্রে মিল আছে, সেই ঋষিগণের মধ্যে বিবাহাদি কাৰ্য নিষিদ্ধ। এই সকল বিষয় আলাে- চনা করিলে বেশ বুঝিতে পারা যায়, মূলে এক পুরুষ হইতেই বিভিন্ন গােত্রের এবং শাখার সৃষ্টি হইয়া আছে। দ্বিতীয় প্রবর। প্রবর ও গােত্র প্রায় এক-অর্থজ্ঞাপক। তবে পার্থক্য এই যে-গোত্র-শব্দে বংশ-প্রবর্তক একজন প্রধান পুরুষকে বুঝাইয়া থাকে। কিন্তু প্রবর শব্দে বংশের বা বংশের সহিত সম্বন্ধযুক্ত অপর বংশের প্রধান প্রধান, দুই, তিন, গয়চারি বা পাঁচ পুরুষ পর্যন্ত নির্দিষ্ট হয়। প্রথমে ব্রাহ্মণগণ গােত্র বলিয়াই পরিচয় দিতেন। কিন্তু কালক্রমে, ক্ষত্রিয়াদি বর্ণ, পুরােহিতের গােত্রানুসারে আপনাদের গোত্র-পরিচয় প্রদান করিতে আরম্ভ করেন। তাহার ফলে কেবলমাত্র গােত্র বলিলে বক্তা কোন বংশজ, তা বুঝিবার পক্ষে বিঘ্ন ঘটে সুতরাং প্রবরের প্রবর্তন হয়। হংস গোত্র একটি পরিলক্ষিত ও অপরাহ্ন গোত্র। গোত্রে গোত্র