পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - সপ্তম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

እ © ভারতবর্ষ। সমাসীন হইয়াছে, তখনই তাহার মুলে ধৰ্ম্মের প্রভাব বিদ্যমান রহিয়াছে। র্যাহাতে ধর্শ্বের যাদৃশী উন্মাদন, যিনি যাদৃশ ধৰ্ম্মভাবের অধিকারী, তিনি তদনুরূপ প্রতিষ্ঠা-সম্পন্ন। উত্থানপতনের ও প্রতিষ্ঠা-অপ্রতিষ্ঠার ইতিবৃত্তের যে অঙ্কেই দৃষ্টিপাত করি না কেন, সৰ্ব্বত্রই ঘৰ্ম্মধর্শ্বের স্বন্দ্বে অধৰ্ম্মের অধঃপতনের এবং ধর্মের অভু্যদয়ের এই অভিনব দৃপ্ত প্রত্যক্ষীভূত হয়। প্রাচীন ভারতের অতি প্রাচীনকালের ইতিবৃত্তে ধৰ্ম্মধর্শ্বের দ্বশ্বে ধৰ্ম্মের জয় ও অধৰ্ম্মের ক্ষয় অতি উজ্জ্বল অক্ষরে অঙ্কিত রহিয়াছে। গীতায় শ্ৰীভগবান বলিয়াছেন,—“পরিত্রাণায় সাধুনাম্ বিনাশায় চ দুষ্কতাম্। ধৰ্ম্ম-সংস্থাপনার্থায় সস্তবামি যুগে যুগে " క్గా সকল যুগের সকল ইতিহাসেই এ উক্তির সার্থকতা পরিলক্ষিত হয়। মগধের পূর্ব-প্রতিষ্ঠার অবসানে, নন্দরাজগণের কু-শাসনে, অধৰ্ম্মের অভু্যুথানে, যখন ধৰ্ম্মের গ্লানি সংঘটিত হইয়াছিল, পৈশাচিক তাণ্ডব-নর্তনে মেদিনী যখন কম্পান্বিত হইয়াছিলেন, অত্যাচার-প্রপীড়িত নরনারীর করুণ আৰ্ত্তনাদে গগন যখন বিদীর্ণ হইতেছিল ; চন্দ্রগুপ্ত সে বিভীষিকা দূর করেন । তাহারই প্রভাবে, পুৰ্ব্বাশার ললাটে আবার উষার আলোক ফুটিয়া উঠে । কিন্তু চন্দ্রগুপ্তের সে প্রতিষ্ঠার মুল কি ? কোন শক্তি-প্রভাবে তিনি বিচ্ছিন্ন রাজশক্তি-সমূহকে একস্থত্রে সংগ্রথিত করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন ? কি গুণে তৎপ্রবর্তিত শাসন-শৃঙ্খল জনসাধারণের প্রাণস্পশা হইয়াছিল ? চন্দ্রগুপ্তের ধৰ্ম্মপ্রাণতাই সে সকলের মুলীভূত নহে কি ? ধৰ্ম্মনিষ্ঠার যে বীজ চন্দ্রগুপ্তের হৃদয়ে উপ্ত ছিল, অকুকুল অবস্থায় স্নিগ্ধ-বারিনিষেকে সে বীজ বিশাল মহীরুহে পরিণত হইয়াছিল। চন্দ্রগুপ্ত বুঝিয়াছিলেন,—জনহিতসাধন ধৰ্ম্ম-সাধনের অন্যতম উপায়, জনাস্তুরাগ-আকর্ষণ শাসন-নীতির প্রধানতম উদেপ্ত। জৈনধৰ্ম্মের সেই সুপ্রতিষ্ঠার দিনে, নিষ্কাম-কৰ্ম্মের সেই স্নিগ্ধতার ফলে, চন্দ্রগুপ্তের প্রতিভা-কুসুম অচিরে প্রস্ফুটিত হইয়া উঠিল । রাজচক্রবর্তী চন্দ্রগুপ্ত সংসারাশ্রমে থাকিয়াও তাৎকালিক জৈনযতিগণের ন্যায় সৰ্ব্বত্যাগী হইলেন, ধৰ্ম্মসাধনে জীবন-মন উৎসর্গ করিয়া জনহিতব্ৰত গ্রহণ করিলেন, ধৰ্ম্মের উন্মাদনায় উন্মত্ত হইয়া তিনি ধৰ্ম্মরক্ষায় প্রবৃত্ত হইলেন । তাই ভারতের ইতিহাসে চন্দ্রগুপ্তের প্রতিষ্ঠা আজিও অক্ষুঃ রহিয়াছে । চাণক্যের অর্থশাস্ত্র রাজচক্ৰবৰ্ত্তী চন্দ্রগুপ্তের স্মৃতি যেরূপ উজ্জ্বল করিয়া রাখিয়াছে, গ্রীকদূত মেগাস্থিনীসের ভ্রমণ-বৃত্তত্তেও তাহার স্মৃতি সেইরূপ চিরসমুজ্জ্বল রহিয়াছে। তাৎछfब्र८६छ কালিক ভারত-সাম্রাজ্যের রাজধানী পাটলিপুত্র নগরে- মেগাস্থিনীস জ:, কিছুদিন অবস্থিতি করিয়াছিলেন। সে সময় চন্দ্রগুপ্তের স্বশাসনে ভারত-সাম্রাজ্য উন্নতির উচ্চ-চুড়ায় সমান্ধঢ় হইয়াছিল। প্রত্যক্ষদর্শী মেগাস্ক্রিনীসের ইতিবৃত্তে তাই চন্দ্রগুপ্তের শাসন-প্রণালী বিশেষভাবে পরিবর্ণিত হইয়াছে। কি কারণে কি সূত্রে সিরীয় রাজদূত মেগাস্থিনীস সুদূর পাটলিপুত্র নগরে আগমন করিয়াছিলেন, আর কি প্রয়োজনেই বা তিনি চন্দ্র গুপ্তের রাজসভায় অবস্থান করিতেছিলেন, তদ্বিষয় পুৰ্ব্বেই আমরা আলোচনা করিয়াছি। মহাবীর আলেকজাণ্ডার বিশ্ববিজয়ে সঙ্কল্প করিয়ছিলেন বটে ; কিন্তু তিনি মৃত্যুর কবল হইতে মুক্তি লাভ করিতে সমর্থ হন নাই । ৩২৩