পাতা:পোকা-মাকড়.pdf/১৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
স্নায়ুমণ্ডলী
১৬১

নির্দ্দিষ্ট জায়গায় থাকে। কিন্তু যাহাদের কান পায়ের গোড়ায় এবং নাক শুঁয়োর আগায়, এরকম পতঙ্গও অনেক পাওয়া যায়। আবার এ-রকম পতঙ্গ অনেক আছে, যাহাদের নাক বা কান শরীরের কোন্ জায়গায় লুকাইয়া রহিয়াছে, তাহার সন্ধানই পাওয়া যায় না; অথচ তাহারা আমাদেরি মত শব্দ শুনিতে পায় এবং গন্ধ শুঁকিয়া খাবার সংগ্রহ করে।

 পতঙ্গদের স্নায়ুমণ্ডলীও আমাদের স্নায়ুমণ্ডলীর তুলনায় দেহে উল্‌টা রকমে সাজানো আছে। মেরুদণ্ড-যুক্ত প্রাণীদের প্রধান স্নায়ুর তারগুলি শাখা-প্রশাখা ছড়াইয়া পিঠের দিকে থাকে, কিন্তু পতঙ্গের স্নায়ু শরীরের নীচের দিকে ছড়ানো দেখা যায়। চিংড়ির স্নায়ুর কথা তোমরা আগেই শুনিয়াছ। পতঙ্গের স্নায়ু চিংড়ির স্নায়ুরই মত। দুইটা মোটা স্নায়ুর সূতা ইহাদের দেহের তল দিয়া আগাগোড়া বিস্তৃত থাকে এবং এই সূতার প্রত্যেকটি হইতে অনেক ছোট সূতা বাহির হইয়া দেহে ছড়াইয়া পড়ে। আবার মাঝে মাঝে ঐ-সকল স্নায়ুর সূতা জটলা পাকাইয়া স্নায়ুর কেন্দ্রের সৃষ্টি করে। এই সকল কেন্দ্র দিয়া কতকটা মস্তিষ্কের কাজ চলে। পতঙ্গদের মাথার আসল মস্তিষ্ক খুব ছোট। দেহের তলার সেই মোটা স্নায়ুর সূতা হইতে কয়েকটি সরু সূতা বাহির হইয়া মাথার এক জায়গায় একত্র হয় এবং তাহাই কোনো রকমে মস্তিষ্কের কাজ চালায়। পতঙ্গের শুঁয়ো ও চোখ এই মস্তিষ্কের সহিত যুক্ত থাকে।