পড়িলে মুক্তা জন্মে। কিন্তু ইহা সত্য নয়। আমাদের গায়ের কোনো জায়গায় আঘাত লাগিলে যেমন সেইখানে রক্ত জমা হয়, ঝিনুকদের শরীরের ভিতরকার পর্দায় কোনো রকম উত্তেজনা আসিলে ঠিক সেইপ্রকারে রস বাহির হয়। এই রস জমাট বাঁধিয়া ক্রমে মুক্তা হইয়া দাঁড়ায়। বালির কণা বা অন্য কোনো ছোট জিনিস দেহের ভিতরে আট্কাইলেও পর্দার উত্তেজনা হয়।
আমাদের দেশের পুকুরের পাঁকের মধ্যে গুগ্লি পাওয়া যায়। কয়েকটি গুগ্লি ধরিয়া কাঁচের পাত্রের জলে ছাড়িয়া দিয়ো এবং জলের তলায় বালি ছিটাইয়া রাখিয়ো। এই অবস্থায় গুগ্লির অনেক চাল-চলন তোমরা দেখিতে পাইবে। ইহাদের মাথার উপরে শিঙের মত দুইটা শুঁয়ো থাকে এবং তাহারি পিছনে আরো দুইটি শুঁয়োর মাথায় দু’টা কালো চোখ থাকে। গুগ্লিদের পা নাই। দেহের তলাকার একখণ্ড চেপ্টা মাংসই ইহাদের পা। মাংসপিণ্ড হইলেও তাহাতে অনেক মাংসপেশী লাগানো থাকে এবং খোলার মধ্যেও একটা দড়ির মত মোটা মাংসপেশী লাগানো দেখা যায়। ইচ্ছা করিলেই ঐ-সকল পেশীর জোরে তাহারা মুখ চোখ পা এবং শুঁয়ো খোলার মধ্যে টানিয়া লইতে পারে।
ডাঙায় যে-সকল শামুক বেড়ায় তাহারা ধীরে ধীরে চলিতে থাকিলে পিছনে এক রকম ভিজে দাগ রাখিয়া যায়।