পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৮
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।

 অক্ষয়। তোমরা কাছাকাছি থাক্‌লে মনটা এইখানেই মারা যায়, দূরে যিনি আছেন সে পর্য্যন্ত আর পৌঁছায় না! না ঠাট্টা নয়, পালাও। এখনি লোক আস্‌বে—ঐ একটী বই দরজা খোলা নেই, তখন পালাবার পথ পাবে না।

 নৃপ। এই সন্ধে বেলায় কে তোমার কাছে আস্‌বে?

 অক্ষয়। যাদের ধ্যান কর তারা নয় গো তারা নয়!

 নীর। যার ধ্যান করা যায় সে সকল সময় আসে না, তুমি আজকাল সেটা বেশ বুঝ্‌তে পারছ কি বল মুখুজ্জেমশায়! দেবতার ধ্যান কর আর উপদেবতার উপদ্রব হয়।

 “অবলাকান্ত বাবু আছেন?” বলিয়া ঘরের মধ্যে সহসা শ্রীশের প্রবেশ। “মাপ করবেন” বলিয়া পলায়নোদ্যম। নৃপ ও নীরর সবেগে প্রস্থান।

 অক্ষয়। এস এস শ্রীশ বাবু!

 শ্রীশ। (সলজ্জভাবে) মাপ করবেন।

 অক্ষয়। রাজি আছি কিন্তু অপরাধটা কি, আগে বল!

 শ্রীশ। খবর না দিয়েই―

 অক্ষয়। তোমার অভ্যর্থনার জন্য ম্যুনিসিপালিটির কাছ থেকে যখন বাজেট স্যাংশন করে নিতে হয় না তখন না হয় খবর না দিয়েই এলে শ্রীশ বাবু!

 শ্রীশ। আপনি যদি বলেন, এখানে আমার অসময়ে অনধিকার প্রবেশ হয় নি তা হলেই হল!

 অক্ষয়। তাই বল্লেম! তুমি যখনি আসবে তখনি সুসময়, এবং যেখানে পদার্পণ করবে সেই খানেই তোমার অধিকার, শ্রীশবাবু স্বয়ং বিধাতা সর্ব্বত্র তোমাকে পাস্‌পোর্ট দিয়ে রেখেছেন। একটু বোস অবলাকান্ত বাবুকে খবর পাঠিয়ে দিই! (স্বগত) না পলায়ন করলে চিঠি শেষ করতে পারব না!

(প্রস্থান)