পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।
১০৭

বিপিনবাবু―ব্যবসার এই রকম নিয়ম। যা গেল তা আবার দুনো হয়ে ফিরে আস্‌তে পারে, কি বল অবলাকান্ত?

 শৈল। রসিক দাদার রসিকতা আজকাল একটু শক্ত হয়ে আসছে।

 রসিক। গুড় জমে যে রকম শক্ত হয়ে আসে। কিন্তু বিপিন বাবু কি ভাব্‌চেন বলুন দেখি?

 বিপিন। ভাব্‌চি কি ছুতো করে বিদায় নিলে আমাকে বিদায় দিতে আপনাদের ভদ্রতায় বাধবে না।

 শৈল। বন্ধুত্বে যদি বাধে?

 বিপিন। তা হলে ছুতো খোঁজবার কোন দরকারই হয় না।

 শৈল। তবে সেই খোঁজটা পরিত্যাগ করুন, ভাল হয়ে বসুন।

 রসিক। মুখখানা প্রসন্ন করুন বিপিন বাবু! আমাদের প্রতি ঈর্ষা করবেন না। আমি ত বুদ্ধ, যুবকের ঈর্ষার যোগ্যই নই। আর আমাদের সুকুমারমুর্ত্তি অবলাকান্ত বাবুকে কোন স্ত্রীলোক পুরুষ বলে জ্ঞানই করে না। আপনাকে দেখে যদি কোন সুন্দরী কিশোরী ত্রস্ত হরিণীর মত পলায়ন করে থাকেন তাহলে মনকে এই বলে সান্ত্বনা দেবেন যে, তিনি আপনাকে পুরুষ বলেই মস্ত খাতিরটা করেছেন। হায়রে হতভাগ্য রসিক, তোকে দেখে কোন তরুণী লজ্জাতে পলায়নও করে না!

 বিপিন। রসিকবাবু আপনাকেও যে, দলে টান্‌চেন অবলাকান্তবাবু! এ কি রকম হল?

 শৈল। কি জানি বিপিনবাবু―আমার এই অবলাকান্ত নামটাই মিথ্যে—কোন অবলা ত এ পর্য্যন্ত আমাকে কান্ত বলে বরণ করে নি।

 বিপিন। হতাশ হবেন না, এখনো সময় আছে।

 শৈল। সে আশা এবং সে সময় যদি থাক্‌ত তাহলে চিরকুমারসভায় নাম লেখাতে যেতুম না!