পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৬
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।

 শ্রীশ। এবং হতভাগ্য শ্রীশ যেন কুঞ্জদ্বারের কাছে এসে উঁকি ঝুঁকি না মারে।

 পূর্ণ। দুর হোক্ গে শ্রীশ বাবু, তোমার সেই আবাহন থেকে আর একটা কিছু কবিতা আওড়াও। চমৎকার লিখেছে হে।

নিশি না পোহাতে জীবন প্রদীপ
জ্বালাইয়া যাও প্রিয়া!

 আহা! একটি জীবন প্রদীপের শিখাটুকু আরেকটি জীবন প্রদীপের মুখের কাছে কেবল একটু ঠেকিয়ে গেলেই হয়, বাস্, আর কিছুই নয়— দুটি কোমল অঙ্গুলি দিয়ে প্রদীপখানি একটু হেলিয়ে একটু ছুঁইয়ে যাওয়া তার পরেই চকিতের মধ্যে সমস্ত আলোকিত! (আপন মনে) নিশি না পোহাতে (ইত্যাদি)।

 শ্রীশ। পূর্ণ বাবু, যাও কোথায়?

 পূর্ণ। চন্দ্রবাবুর বাসায় একখানা বই ফেলে এসেছি সেইটে খুঁজ্‌তে যাচ্চি।

 বিপিন। খুঁজ্‌লে পাবে ত? চন্দ্রবাবুর বাসা বড় এলোমেলো জায়গা―সেখানে যা হারায় সে আর পাওয়া যায় না।

(পূর্ণের প্রস্থান)

 শ্রীশ। (দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলিয়া) পূর্ণ বেশ আছে ভাই বিপিন!

 বিপিন। ভিতরকার বাষ্পের চাপে ওর মাথাটা সোডাওয়াটারের ছিপির মত একেবারে টপ্‌করে উড়ে না যায়।

 শ্রীশ। যায় ত যাক্ না! কোনমতে লোহার তার এঁটে মাথাটাকে ঠিক জায়গায় ধরে রাখাই কি জীবনের চরম পুরুষার্থ? মাঝে মাঝে মাথার বেঠিক না হলে রাতদিন মুটের বোঝার মত মাথাটাকে বয়ে বেড়াচ্চি কেন? দাও ভাই তার কেটে, একবার উড়ুক!―সেদিন তোমাকে শোনাচ্ছিলুম―