পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৪
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।

দ্রুতবেগে চলে গেলেন তখন তাঁর পিঠভরা কালোচুল আমার দৃষ্টিপথের উপর দিয়ে একটি কালো জ্যোতিষ্কের মত ছুটে নৃত্য করে চলে গেল।

 রসিক। এ ত নৃপবালাই বটে! পা দুখানি লজ্জিত, হাতখানি কুণ্ঠিত, চোখ দুটি ত্রস্ত, চুলগুলি কুঞ্চিত,―দুঃখের বিষয় হৃদয়টি দেখ্‌তে পান নি—সে যেন ফুলের ভিতরকার লুকোনো মধুটুকুর মত মধুর, শিশিরটুকুর মত করুণ।

 শ্রীশ। রসিকবাবু, আপনার মধ্যে এত যে কবিত্বরস সঞ্চিত হয়ে রয়েছে তার উৎস কোথায় এবার টের পেয়েছি।

রসিক। ধরা পড়েছি শ্রীশবাবু―

কবীন্দ্রাণাং চেতঃ কমলবনমালাতপরুচিং
ভজন্তে যে সন্তঃ কতিচিদরুণামেব ভবতীং
বিরিঞ্চিপ্রেয়স্যাস্তরুণতর শৃঙ্গারলহরীং
গভীরাভির্বাগ্‌ভির্বিদধতি সভারঞ্জনময়ীং।

 কবীন্দ্রদের চিত্তকমলবনমালার কিরণ লেখা যে তুমি, তোমাকে যারা লেশমাত্র ভজনা করে তারাই গভীর বাক্যদ্বারা সরস্বতীর সভারঞ্জনময়ী তরুণলীলালহরী প্রকাশ করতে পারে। আমি সেই কবিচিত্ত কমলবনের কিরণ লেখাটির পরিচয় পেয়েছি।

 শ্রীশ। আমিও অল্পদিন হল একটু পরিচয় পেয়েছি তার পর থেকে কবিত্ব আমার পক্ষে সহজ হয়ে এসেছে।

অক্ষয়ের প্রবেশ।

 অক্ষয়। (স্বগত) নাঃ, দুটি নবযুবকে মিলে আমাকে আর ঘরে তিষ্ঠতে দিলে না দেখচি। একটি ত গিয়ে চোরের মত আমার ঘরের মধ্যে হাত্‌ড়ে বেড়াচ্ছিলেন—ধরা পড়ে ভাল রকম জবাবদিহি কর্‌তে পার্‌লে