রসিক। আর একটি হচ্চে—যাবৎ কিঞ্চিন্ন ভাবতে—তা’ আমি বাইরের লোকের কাছে বেশি কথা কইনে—
শৈল। সেইটে বুঝি আমাদের কাছে পুষিয়ে নাও!
রসিক। তোদের কাছে যে ধরা পড়েছি।
শৈল। ধরা যদি পড়ে থাক ত চল—যা বলি তাই করতে হবে।— বলিয়া পরামর্শের জন্য শৈল তাঁহাকে অন্য ঘরে টানিয়া লইয়া চলিল।
অক্ষয় বলিতে লাগিল—অ্যাঁ, শৈল! এই বুঝি! আজ রসিক দা হলেন, রাজমন্ত্রী! আমাকে ফাঁকি!
শৈল যাইতে যাইতে পশ্চাৎ ফিরিয়া হাসিয়া কহিল—তোমার সঙ্গে আমার কি পরামর্শের সম্পর্ক মুখুজ্জে মশায়? পরামর্শ যে বুড়ো না হলে হয় না।
অক্ষয় বলিল—তবে রাজমন্ত্রীপদের জন্যে আমার দরবার উঠিয়ে নিলুম।—বলিয়া শূন্য ঘরের মধ্যে দাঁড়াইয়া হঠাৎ উচ্চৈঃস্বরে খাম্বাজে গান ধরিলেন—
আমি কেবল ফুল জোগাব
তোমার দুটি রাঙা হাতে,
বুদ্ধি আমার খেলেনাক
পাহারা বা মন্ত্রণাতে!
বাড়ির কর্ত্তা যখন বাঁচিয়া ছিলেন তিনি রসিককে খুড়া বলিতেন। রসিক দীর্ঘকাল হইতে তাঁহার আশ্রয়ে থাকিয়া বাড়ির সুখ দুঃখে সম্পূর্ণ জড়িত হইয়াছিলেন। গিন্নি অগোছালো থাকাতে কর্ত্তার অবর্ত্তমানে তাহার কিছু অযত্ন অসুবিধা হইতেছিল এবং জগত্তারিণীর অসঙ্গত ফরমাস্ খাটিয়া তাঁহার অবকাশের অভাব ঘটয়াছিল। কিন্তু তাঁহার এই সমস্ত অভাব অসুবিধা পূরণ করিবার লোক ছিল শৈল। শৈল থাকাতেই মাঝে মাঝে ব্যামোর সময় তাঁহার পথ্য এবং সেবার ত্রুটি হইতে