পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪০
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।

এটুকু কি করে ধরতে পারলেন যে তাঁর সম্বন্ধে তুচ্ছ কিছুই নেই। তিনি যদি বলেন, রসিক দা, ঐ কেরোসিনের বাতিটা একটুখানি উস্কে দাও, আমার মনে হয় যেন একটা নতুন কথা শুন্‌লেম—আদি কবির প্রথম অনুষ্টুপ ছন্দের মত। কি বল ব শ্রীশ বাবু, আপনি শুনলে হয় ত হাস্‌বেন, সে দিন ঘরে ঢুকে দেখি নৃপবালা ছুঁচের মুখে সূতো পরাচ্ছেন কোলের উপর বালিশের ওয়াড় পড়ে রয়েছে, আমার মনে হল এক আশ্চর্য্য দৃশ্য। কতবার কত দরজির দোকানের সামনে দিয়ে গেছি, কখনো মুখ তুলে দেখিনি কিন্তু―

 শ্রীশ। আচ্ছা রসিকবাবু, তিনি নিজের হাতে ঘরের সমস্ত কাজ করেন?

শৈলের প্রবেশ।

 শৈল। রসিকদার সঙ্গে কি পরামর্শ করচেন?

 রসিক। কিছুই না, নিতান্ত সামান্য কথা নিয়ে আমাদের আলোচনা চল্‌চে, যত দূর তুচ্ছ হতে পারে।

 চন্দ্র। সভা অধিবেশনের সময় হয়েছে আর বিলম্ব করা উচিত হয় না। পূর্ণবাবু, কৃষিবিদ্যালয় সম্বন্ধে আজ তুমি যে প্রস্তাব উত্থাপন করবে বলেছিলে সেটা আরম্ভ কর।

 পূর্ণ। (দণ্ডায়মান হইয়া ঘড়ির চেন নাড়িতে নাড়িতে) আজ― আজ― (কাশি)

 রসিক। (পার্শ্বে বসিয়া মৃদুস্বরে) আজ এই সভা―

 পূর্ণ। আজ এই সভা―

 রসিক। যে নূতন সৌন্দর্য্য এবং গৌরব লাভ করিয়াছে―

 পূর্ণ। যে নুতন সৌন্দর্য্য এবং গৌরব লাভ করিয়াছে—

 রসিক। প্রথমে তাহারই জন্য অভিনন্দন প্রকাশ না করিয়া থাকিতে পারিতেছি না।