পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪০
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।

দেখ্‌তে পাচ্ছি কিন্তু দয়ার ভাগটা কিছু যেন কম বোধ হচ্চে― হতভাগ্যকে রুমালটি ফিরিয়ে দিলেই সেই কলঙ্কটুকু একেবারে দূর হয়।

 শৈল। আচ্ছা আমি দয়ার পরিচয় দিচ্ছি—কিন্তু আপনি সভার জন্য যে প্রবন্ধ লিখ্‌তে প্রতিশ্রুত সেটা লিখে দেওয়া চাই।

 শ্রীশ। নিশ্চয় দেব―রুমালটা ফিরে পেলেই কাজে মন দিতে পার্‌ব —তখন অন্য সন্ধান ছেড়ে কেবল সত্যানুসন্ধান কর্‌তে থাক্‌ব।

 (ঘরের অন্যত্র) বিপিন। বুঝেছেন রসিকবাবু আমি তাঁর গানের নির্ব্বাচন চাতুরী দেখে আশ্চর্য্য হয়ে গেছি। গান যে তৈরি করেছে তার কবিত্ব থাক্‌তে পারে কিন্তু এই গানের নির্ব্বাচনে যে কবিত্ব প্রকাশ পেয়েছে তার মধ্যে ভারি একটি সৌকুমার্য্য আছে।

 রসিক। ঠিক বলেছেন—নির্ব্বাচনের ক্ষমতাইত ক্ষমতা! লতায় ফুলত আপনি ফোটে, কিন্তু যে লোক মালা গাঁথে নৈপুণ্য এবং সুরুচিত তারি!

 বিপিন। আপনার ও গানটা মনে আছে?

তরী আমার হঠাৎ ডুবে যায়
কোন্ পাথারে কোন্ পাষাণের দায়!
নবীন তরী নতুন চলে,
দিইনি পাড়ি অগাধ জলে,
বাহি তারে খেলার ছলে কিনার কিনারায়!
তরী আমার হঠাৎ ডুবে যায়!
ভেসে ছিল স্রোতের ভরে
একা ছিলেম কর্ণ ধরে
লেগে ছিল পালের পরে মধুর মৃদু বায়।