পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।
১৪৯

 বিপিন। “তরী আমার হঠাৎ ডুবে যায় কোন্ পাথারে কোন্ পাষাণের ঘায়!”

 আচ্ছা রসিক বাবু এখানে তরী বল্‌তে ঠিক কি বোঝাচ্চে?

 রসিক। হৃদয় বোঝাচ্চে তার আর সন্দেহ নেই। তবে ঐ পাথারটা কোথায় আর পাষাণটা কে সেইটেই ভাববার বিষয়!

 পূর্ণ। (নিকটে আসিয়া) বিপিনবাবু, মাপ করবেন―রসিকবাবুর সঙ্গে আমার একটি কথা আছে—যদি―

 বিপিন। বেশ, বলুন, আমি যাচ্চি।

(প্রস্থান)

 পূর্ণ। আমার মত নির্ব্বোধ জগতে নেই রসিকবাবু!

 রসিক। আপনার চেয়ে ঢের নির্ব্বোধ আছে যারা নিজেকে বুদ্ধিমান বলে জানে—যথা আমি।

 পূর্ণ। একটু নিরালা পাই যদি আপনার সঙ্গে অনেক কথা আছে, সভা ভেঙে গেলে আজ রাত্রে একটু অবসর করতে পারেন?

 রসিক। বেশ কথা।

 পূর্ণ। আজ দিব্য জ্যোৎস্না আছে গোলদিঘির ধারে—কি বলেন?

 রসিক। (স্বগত) কি সর্ব্বনাশ!

 শ্রীশ। (নিকটে আসিয়া) ওঃ পূর্ণবাবু কথা কচ্চেন বুঝি। আচ্ছা এখন থাক্। রাত্রে আপনার অবসর হবে রসিকবাবু?

 রসিক। তা হতে পারে।

 শ্রীশ। তা হলে কালকের মত ―কি বলেন? কাল দেখ্‌লেন ত ঘরের চেয়ে পথে জমে ভাল।

 রসিক। জমে বৈ কি! (স্বগত) সর্দ্দি জমে, কাশি জমে, গলার স্বর দইয়ের মত জমে যায় (শ্রীশের প্রস্থান)

 পূর্ণ। আচ্ছা রসিকবাবু আপনি হলে কি বলে কথা আরম্ভ করতেন?