পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৬
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।

দের বাঁধবে না! নাত্র ব্যাধশরাঃ পতন্তি পরিতো, নৈবাত্র দাবানলঃ―দাবানলের পরিবর্ত্তে ডাবের জল পাবেন!

 শ্রীশ। আমাদের সে দুঃখ নয় রসিকবাবু, আমরা ভাবচি, আমাদের দ্বারা কতটুকু উপকারই বা হচ্চে! ভবিষ্যতের সমস্ত আশঙ্কা ত দূর করতে পার্‌চিনে!

 রসিক। বিলক্ষণ। যা কর্‌চেন তাতে আপনারা দুটি অবলাকে চিরকৃতজ্ঞতাপাশে বদ্ধ কর্‌চেন—অথচ নিজেরা কোন প্রকার পাশেই বদ্ধ হচ্চেন না!

 (নেপথ্যে মৃদুস্বরে জগত্তারিণী) আঃ নেপ, কি ছেলে মানুষী কর্‌চিস্। শীগ্‌গির চকের জল মুচে ঘরের মধ্যে যা! লক্ষ্মী মা আমার―কেঁদে চোক লাল কল্লে কি রকম ছিরি হবে ভেবে দেখো দেখি!― নীরো যা’না! তোদের সঙ্গে আর পারিনে বাপু! ভদ্রলোকদের কতক্ষণ বসিয়ে রাখ্‌বি? কি মনে কর্‌বেন?

 শ্রীশ। ঐ শুন্‌চেন, রসিকবাবু, এ অসহ্য! এর্ চেয়ে রাজপুতদের কন্যাহত্যা ভাল।

 বিপিন। রসিকবাবু এঁদের এই সংকট থেকে সম্পূর্ণ রক্ষা করবার জন্যে আপনি আমাদিগকে যা বল্‌বেন আমরা তাতেই প্রস্তুত আছি।

 রসিক। কিছু না, আপনাদের আর অধিক কষ্ট দেব না! কেবল আজকার দিনটা উত্তীর্ণ করে দিয়ে যান্—তারপরে আপনাদের আর কিছুই ভাব্‌তে হবে না!

 শ্রীশ। ভাবতে হবে না? কি বলেন রসিক বাবু! আমরা কি পাষাণ? আজ থেকেই আমরা বিশেষরূপে এঁদের জন্যে ভাববার অধিকার পাব।

 বিপিন। এমন ঘটনার পর আমরা যদি এঁদের সম্বন্ধে উদাসীন হই তবে আমরা কাপুরুষ।