পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।
৩১

 রসিক। আরে ভাই, বদল করতে রাজি আছি! মুখুজ্জে মশায় যদি শ্লোক আওড়াতেন আর আমার উপরেই যদি কোপ পড়ত তা হলে এই পোড়া কপালকে সোনা দিয়ে বাঁধিয়ে রাখ্‌তুম। কি দিদি, ঐ জলখাবারের থালা দুটি ত মান করে নি, বসে গেলে বোধ হয় আপত্তি নেই?

 অক্ষয়। ঠিক ঐ কথাটাই ভাব্‌ছিলুম।

 উভয়ে আহারে উপবেশন করিলেন, শৈলবালা পাখা লইয়া বাতাস করিতে লাগিলেন।


(৪)

 আহারের পর শৈলবালা ডাকিল—মুখুজ্জে মশায়!

 অক্ষয় অত্যন্ত ত্রস্তভাব দেখাইয়া কহিলেন—আবার মুখুজ্জে মশায়! এই বালখিল্য মুনিদের ধ্যানভঙ্গ ব্যাপারের মধ্যে আমি নেই!

 শৈলবালা। ধ্যানভঙ্গ আমরা করব। কেবল মুনিকুমার গুলিকে এই বাড়িতে আনা চাই।

 অক্ষয় চক্ষু বিস্ফারিত করিয়া কহিলেন—সভাসুদ্ধ এইখানে উৎপাটিত করে আন্‌তে হবে? যত দুঃসাধ্য কাজ সবই এই একটিমাত্র মুখুজ্জে মশায়কে দিয়ে?

 শৈলবালা হাসিয়া কহিল, মহাবীর হবার ঐত মুস্কিল! যখন গন্ধমাদনের প্রয়োজন হয়েছিল তখন নল নীল অঙ্গদকে ত কেউ পোছেও নি!

 অক্ষয় গর্জন করিয়া কহিলেন, ওরে পোড়ারমুখী, ত্রেতাযুগের পোড়ারমুখোকে ছাড়া আর কোন উপমাও তোর মনে উদয় হল না? এত প্রেম!

 শৈলবালা কহিল—হাঁ গো এতই প্রেম!