পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।

তোমাদের প্রতিজ্ঞার মধ্যে নয়। কি বল শ্রীশ বাবু বিপিন বাবুর কি মত?

 দুই বন্ধু বলিল —ঠিক কথা। ঘরটা একবার দেখেই আসা যাক্ না।

 পূর্ণ বিমর্ষ হইয়া নিরুত্তর রহিল। পাশের ঘরেও চাবি একবার ঠুন্ করিল, কিন্তু অত্যন্ত অপ্রসন্ন সুরে!

(৫)

 অক্ষয় বলিলেন—স্বামীই স্ত্রীর একমাত্র তীর্থ। মান কি না?

 পুরবালা। আমি কি পণ্ডিত মশায়ের কাছে শাস্ত্রের বিধান নিতে এসেছি? আমি মার সঙ্গে আজ কাশী চলেছি এই খবরটি দিয়ে গেলুম।

 অক্ষয়। খবরটি সুখবর নয়—শোনবামাত্র তোমাকে শাল দোশালা বক্‌শিশ দিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে না।

 পুরবালা। ইস্, হৃদয় বিদীর্ণ হচ্চে! না? সহ্য করতে পারচ না?

 অক্ষয়। আমি কেবল উপস্থিত বিচ্ছেদটার কথা ভাব্‌চি নে— এখন তুমি দুদিন না রইলে, আরো ক’জন রয়েছেন, এক রকম করে এই হতভাগ্যের চলে যাবে। কিন্তু এর পরে কি হবে? দেখ, ধর্ম্ম কর্ম্মে স্বামীকে এগিয়ে যেয়ো না,—স্বর্গে তুমি যখন ডব্‌ল্ প্রোমোশন্ পেতে থাক্‌বে আমি তখন পিছিয়ে থাক্‌ব-তোমাকে বিষ্ণুদূতে রথে চড়িয়ে নিয়ে যাবে, আর আমাকে যমদূতে কানে ধরে হাঁটিয়ে দৌড় করাবে—

(গান)
পরজ

স্বর্গে তোমায় নিয়ে যাবে উড়িয়ে,
পিছে পিছে আমি চলব খুঁড়িয়ে!
ইচ্ছা হবে টিকির ডগা ধরে
বিষ্ণু দূতের মাথাটা দিই গুঁড়িয়ে।