পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ
৪৩

 পুরবালা আচ্ছা, আচ্ছা, থাম!

 অক্ষয়। আমি থামব, কেবল তুমিই চল্‌বে। ঊনবিংশ শতাব্দীর এই বন্দোবস্ত? নিতান্তই চল্‌লে?

 পুরবালা। চল্লুম।

 অক্ষয়। আমাকে কার হাতে সমর্পণ করে গেলে?

 পুরবালা। রসিক দাদার হাতে।

 অক্ষয়। মেয়ে মানুষ, হস্তান্তর করবার আইন কিছুই জান না! সেই জন্যেই ত বিরহাবস্থায় উপযুক্ত হাত নিজেই খুঁজে নিয়ে আত্মসমর্পণ করতে হয়।

 পুরবালা। তোমাকে ত বেশী খোঁজাখুঁজি করতে হবে না!

 অক্ষয়। তা হবে না। (গান)-কাফি।

কার হাতে যে ধরা দেব প্রাণ;
(তাই) ভাবতে বেলা অবসান!
ডান দিকেতে তাকাই যখন, বাঁয়ের লাগি কাঁদেরে মন
বাঁয়ের দিকে ফিরলে তখন দক্ষিণেতে পড়ে টান!

আচ্ছা আমার যেন সান্ত্বনার গুটি দুই তিন সদুপায় আছে কিন্তু তুমি

বিরহ যামিনী কেমনে যাপিবে,
বিচ্ছেদ তাপে যখন তাপিবে
এপাশ ওপাশ বিছানা মাপিবে,
মকর কেতনে কেবলি শাপিবে,

 পুরবালা। রক্ষে কর, ও মিলটা ঐ খানেই শেষ কর!

 অক্ষয়। দুঃখের সময় আমি থাম্‌তে পারিনে—কাব্য আপনি বেরতে থাকে। মিল ভাল না বাস অমিত্রাক্ষর আছে, তুমি যখন বিদেশে থাকবে আমি “আর্তনাদ বদ্ কাব্য” বলে একটা কাব্য লিখ্‌ব—সখি আর আরম্ভটা শোন—(সাড়ম্বরে)