পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।

পর্য্যন্ত সেটা কারো অবিদিত থাকে না কিন্তু বসন্ত নিশীথে যখন


 পুরবালা। আঃ—থাম!

 অক্ষয়। বসন্ত-নিশীথে প্রেয়সী—

 পুরবালা। আঃ—কি বক্‌চ তার ঠিক নেই!

 অক্ষয়। বসন্তনিশীথে যখন প্রেয়সী গর্জ্জন করে বলেন, আমি কালই বাপের বাড়ি চলে যাব, আমার একদণ্ড এখানে থাক্‌তে ইচ্ছে নেই—আমার হাড় কালী হল—আমার—

 পুরবালা। হাঁগো মশায়, কবে তোমার প্রেয়সী বাপেরবাড়ি যাব বলে বসন্তনিশীথে গর্জ্জন করেছে?

 অক্ষয়। ইতিহাসের পরীক্ষা? কেবল ঘটনা রচনা করে নিষ্কৃতি নেই? আবার সন তারিখ সুদ্ধ মুখে মুখে বানিয়ে দিতে হবে? আমি কি এত বড় প্রতিভাশালী?

 রসিক। (পুরবালার প্রতি) বুঝেছ ভাই, সোজা করে ও তোমার কথা বল্‌তে পারে না—ওর এত ক্ষমতাই নেই—তাই উল্টে বলে; আদরে না কুলোলে গাল দিয়ে আদর করতে হয়!

 পুরবালা। আচ্ছা মল্লিনাথজি, তোমার আর ব্যাখ্যা করতে হবে না। মা যে শেষকালে তোমাকেই কাশী নিয়ে যাবেন স্থির করেছেন।

 রসিক। তা বেশ ত, এতে আর ভয়ের কথাটা কি? তীর্থ যাবার ত বয়সই হয়েছে। এখন তোমাদের লোল কটাক্ষে এ বৃদ্ধের কিছুই করতে পারবে না—এখন চিত্ত চন্দ্রচূড়ের চরণে—

মুগ্ধস্নিগ্ধবিদগ্ধমুগ্ধমধুরৈর্লোলৈঃ কটাক্ষৈরলং
চেতশ্চুম্বতি চন্দ্রচূড়চরণধ্যানামৃতে বর্ত্ততে।

 পুরবালা। সে ত খুব ভাল কথা—তোমার উপরে আর কটাক্ষের অপব্যয় কর্‌তে চাই নে—এখন চন্দ্রচূড় চরণে চল—তাহলে মাকে ডাকি!