পুর। তা হলে চল, আমাকে ষ্টেশনে পৌঁছিয়ে দেবে। চল্লুম রসিক দাদা—তুমি এখানে রইলে, এই শিশুগুলিকে একটু সাম্লে রেখ! (প্রণাম)
রসিক। কিছু ভেবো না দিদি, এরা সকলে আমাকে যে রকম বিপরীত ভয় করে, টুঁ শব্দটি করতে পারবে না।
শৈল। দিদি ভাই, তুমি একটু থাম! আমি এই কাপড়টা ছেড়ে এসে তােমাকে প্রণাম করচি।
পুর। কেন! ছাড়তে মন গেল যে?
শৈল। না ভাই, এ কাপড়ে নিজেকে আর এক জন বলে মনে হয় তােদের গায়ে হাত দিতে ইচ্ছে হয় না। রসিক দাদা এই নাও, আমার গোঁফটা সাবধানে রেখে দাও, হারিয়াে না!
(৬)
শ্রীশ তাহার বাসায় দক্ষিণের বারান্দায় একখানা বড়হাতা ওয়ালা কেদারার দুই হাতার উপর দুই পা তুলিয়া দিয়া শুক্লসন্ধ্যায় চুপচাপ বসিয়া সিগারেট ফুঁকিতেছিল। পাশে টিপায়ের উপর রেকাবীতে একটি গ্লাস বরফ দেওয়া লেমনেড ও স্তূপাকার কুন্দফুলের মালা।
বিপিন পশ্চাৎ হইতে প্রবেশ করিয়া তাহার স্বাভাবিক প্রবল গম্ভীর কণ্ঠে ডাকিয়া উঠিল—কি গাে সন্ন্যাসী ঠাকুর!
শ্রীশ তৎক্ষণাৎ হাতা হইতে পা নামাইয়া উঠিয়া বসিয়া উচ্চৈঃস্বরে হাসিয়া উঠিল—কহিল, এখনো বুঝি ঝগড়া ভুল্তে পার নি?
শ্রীশ কিছুক্ষণ আগেই ভাবিতেছিল, একবার বিপিনের ওখানে যাওয়া যাক্। কিন্তু শরৎ সন্ধ্যার নির্ম্মল জ্যোৎস্নার দ্বারা আবিষ্ট হইয়া নড়িতে পারিতেছিল না। একটি গ্লাস্ বরফশীতল লেমনেড ও কুন্দফুলের