পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।
৬৩

কিছুমাত্র চিন্তা করলুম। যা ছিল তা তেমনিই রয়ে গেছে। মানুষ অগ্রসর হচ্চে অথচ তার জিনিষপত্র পিছিয়ে থাকচে, এ কখনো হতেই পারে না। আমরা পড়েই আছি―ইংরাজ আমাদের কাঁধে করে বহন করছে, তাকে এগোনো বলে না! ছোট খাটো সামান্য গ্রাম্য জীবনযাত্রা পল্লীগ্রামের পঙ্কিল পথের মধ্যে বদ্ধ হয়ে অচল হয়ে আছে, আমাদের সন্ন্যাসী সম্প্রদায়কে সেই গরুর গাড়ির চাকা ঠেল্‌তে হবে—কলের গাড়ির চালক হবার দুরাশা এখন থাক্‌! কটা বাজ্‌ল শ্রীশবাবু?

 শ্রীশ। সাড়ে আটটা বেজে গেছে।

 চন্দ্র। তা হলে আমি যাই। কিন্তু এই কথা রইল, আমাদের এখন অন্য সমস্ত আলোচনা ছেড়ে নিয়মিত শিক্ষাকার্য্যে প্রবৃত্ত হতে হবে এবং―

 পূর্ণ। আপনি যদি একটু বসেন চন্দ্রবাবু তাহলে আমার দুই একটা কথা বলবার আছে―

 চন্দ্র। না আজ আর সময় নেই―

 পূর্ণ। বেশী কিছু নয় আমি বল্‌ছিলুম আমাদের সভা―

 চন্দ্র। সে কথা কাল হবে পূর্ণবাবু―

 পূর্ণ। কিন্তু কালই ত সভা বস্‌চে―

 চন্দ্র। আচ্ছা তা হলে পরশু, আমার সময় নেই―

 পূর্ণ। দেখুন, অক্ষয় বাবু যে―

 চন্দ্র। পূর্ণবাবু আমাকে মাপ করতে হবে, আজ দেরি হয়ে গেছে। কিন্তু দেখ, আমার একটা কথা মনে হচ্ছিল যে, চিরকুমার সভা যদি ক্রমে বিস্তীর্ণ হয়ে পড়ে তাহলে আমাদের সকল সভ্যই কিছু সন্ন্যাসী হয়ে বেরিয়ে যেতে পারবেন না—অতএব ওর মধ্যে দুটি বিভাগ রাখা দরকার হবে―

 পূর্ণ। স্থাবর এবং জঙ্গম।