শ্রীশ। গলায় ত একটা বোতাম লাগান রয়েছে দেখতে পাচ্ছি― আরো কি প্রয়োজন আছে? যদি বা থাকে, আর ছিদ্র পাবেন কোথা?
চন্দ্রবাবু গলায় হাত দিয়া বলিলেন, তাইত। বলিয়া ঈষৎ লজ্জিত হইয়া হাসিতে লাগিলেন।
চন্দ্র। আমরা সকলেই ত উপস্থিত আছি এখন সেই কথাটার আলোচনা হয়ে যাওয়া ভাল, কি বল পূর্ণবাবু?
হঠাৎ পূর্ণবাবুর উৎসাহ অনেকটা নামিয়া গেল। নির্ম্মলার নাম করিয়া সকলের কাছে আলোচনা উত্থাপন তাহার কাছে রুচিকর বোধ হইল না। সে কিছু কুণ্ঠিতস্বরে কহিল, সে বেশ কথা কিন্তু এদিকে দেরি হয়ে যাচ্চে না?
চন্দ্র। না, এখনো সময় আছে। শ্রীশবাবু তোমরা একটু বস না কথাটা একটু স্থির হয়ে ভেবে দেখবার যোগ্য। আমার একটা ভাগ্নী আছেন, তাঁর নাম নির্ম্মলা,―
পূর্ণ হঠাৎ কাশিয়া লাল হইয়া উঠিল। ভাবিল চন্দ্রবাবুর কাণ্ডজ্ঞান মাত্রই নাই—পৃথিবীর লোকের কাছে নিজের ভাগ্নীর পরিচয় দিবার কি দরকার―অনায়াসে নির্ম্মলাকে বাদ দিয়া কথাটা আলোচনা করা যাইতে পারে। কিন্তু কোন কথার কোন অংশ বাদ দিয়া বলা চন্দ্রবাবুর স্বভাব নহে।
চন্দ্র। আমাদের কুমার সভার সমস্ত উদ্দেশ্যের সঙ্গে তাঁর একান্ত মনের মিল।
এত বড় একটা খরব শ্রীশ এবং বিপিন অবিচলিত নিরুৎসুক ভাবে শুনিয়া যাইতে লাগিল। পূর্ণ কেবলি ভাবিতে লাগিল নির্ম্মলার প্রসঙ্গ সম্বন্ধে যাহারা জড় পাষাণের মত উদাসীন, নির্ম্মলাকে যাহারা পৃথিবীর সাধারণ স্ত্রীলোকের সহিত পৃথক করিয়া দেখে না, তাহাদের কাছে সে নামের উল্লেখ করা কেন?