পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।

 অক্ষয়। কি করব ভাই! রসুনচৌকি বাজাতে শিখিনি, তা হলে ধরতুম। বল কি, শুভকর্ম্ম! দুই শ্যালীর উদ্বাহবন্ধন! কিন্তু এত তাড়াতাড়ি কেন?

 শৈল। বৈশাখ মাসের পর আস্চে বছরে আকাল পড়বে, আর বিয়ের দিন নেই!

 পুরবালা নিজের স্বামিটী লইয়া সুখী, এবং তাহার বিশ্বাস যেমন করিয়া হোক্ স্ত্রীলোকের একটা বিবাহ হইয়া গেলেই সুখের দশা। সে মনে মনে খুসী হইয়া বলিল, তোরা আগে থাক্তে ভাবিস্ কেন শৈল, পাত্র আগে দেখা যাক্ত।

 ঢিলা লোকদের স্বভাব এই যে, হঠাৎ একদা অসময়ে তাহারা মন স্থির করে, তখন ভাল মন্দ বিচার করিবার পরিশ্রম স্বীকার না করিয়া একদমে পূর্ব্বকার সুদীর্ঘ শৈথিল্য সারিয়া লইতে চেষ্টা করে। তখন কিছুতেই তাহাদের আর এক মুহূর্ত্ত সবুর সয় না। কর্ত্রী ঠাকুরাণীর সেইরূপ অবস্থা! তিনি আসিয়া বলিলেন, বাবা অক্ষয়!

 অক্ষয়। কি মা!

 জগৎ। তোমার কথা শুনে আর ত মেয়েদের রাখতে পারিনে!— ইহার মধ্যে এইটুকু আভাস ছিল যে, তাঁহার মেয়েদের সকল প্রকার দুর্ঘটনার জন্য অক্ষয়ই দায়ী।

 শৈল কহিল—মেয়েদের রাখ্তে পার না বলেই কি মেয়েদের ফেলে দেবে মা!

 জগৎ। ঐ ত! তোদের কথা শুনলে গায়ে জ্বর আসে। বাবা অক্ষয়, শৈল বিধবা মেয়ে, ওকে এত পড়িয়ে পাস করিয়ে কি হবে বল দেখি? ওর এত বিদ্যের দরকার কি?

 অক্ষয়। মা, শাস্ত্রে লিখেছে, মেয়ে মানুষের একটা না একটা কিছু উৎপাত থাক চাই—হয় স্বামী, নয় বিদ্যে, নয় হিষ্টিরিয়া। দেখনা,