পাতা:প্রতাপাদিত্য-নিখিল নাথ রায়.djvu/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ృురి ও বন্দুকের অভাব ছিল না। প্রতাপ নিজ রাজধানীর নিকটে যে সমস্ত কামান, বন্দুক ও গোলাগুলির নিৰ্ম্মাণস্থল ও ভাণ্ডার স্থাপন করিয়া ছিলেন, তাহা হইতে উৎকৃষ্ট আগ্নেয় অস্ত্র ও তাহার উপকরণ লইয়া তাহার সৈন্তগণ মোগল সৈন্তের সহিত যুদ্ধার্থে প্রস্তুত হয়। তদ্ভিন্ন তাঙ্গর অনেক অশ্বারোহী ও পদাতিক সৈন্তও ছিল । তাহদের সহিত অসংখ্য রণহস্তী মিলিত হইয় তাহার অপরিসীম বলের পরিচয় প্রদান করিতেছিল। মানসিংহও অনেক প্রধান প্রধান সেনানী ও রণপটু মোগল, রাজপুত ও অন্তান্ত সৈন্ত লইয়াই যশোরে উপস্থিত হইয়াছিলেন । প্রতাপাদিত্যের সহিত র্তাহার যুদ্ধ ঘোরতর আকারই ধারণ করিয়াছিল। ঘটককারিকা, ক্ষিতশবংশাবলীচাবত প্রভৃতিতে এই যুদ্ধের বিস্তৃত বিবরণ দৃষ্ট হয় তাহার অনেকাংশ অতিরঞ্জিত হইলেও উহা হইতে বুঝা যায় যে, প্রতাপের সহিত মানসিংহেব যুদ্ধ প্রবল ভাবেই সংঘটিত হইয়াছিল। ওয়েষ্টগ্যাও সাহেব ইহাকে স্থানীয় বিদ্রোহদমন বলিয়াছেন। কিন্তু বিশেষরূপে আলোচনা করিলে, ইহা সুস্পষ্টরূপেই বুঝিতে পারা যায় যে, উহা কদাচ সামান্ত যুদ্ধ নহে। জয়পুর রাজবংশের বংশাবলী হইতে বাঙ্গলার কুলাচাৰ্য্যগণের গ্রন্থে পৰ্য্যস্ত ইহার যেরূপ উল্লেখ দৃষ্ট হয়, তাহাতে ইহাকে প্রবল যুদ্ধ বলিয়াই বোধ হয়। এই যুদ্ধে বাঙ্গালী সেনাপতি ও সৈন্যগণ যে অদ্ভুত বাচালের পরিচয় প্রদান করিয়াছিল, তাহ বাঙ্গলার ইতিহাসে বিরল। সত্য সত্যই বাঙ্গালী কামান, বন্দুক, হয়, হস্তী, ঢাল, তরবার লইয়। মোগল রাজপুতের সহিত অদ্ভুত রণক্রীড়ায় মত্ত হঠযাছিল। বাঙ্গালীর বাহুবলের নিকট মোগল সৈন্তকে বিচলিত হইতে হইয়াছিল। মোগল আমীরগণ রক্তাক্ত কলেবরে যশোর-প্রাস্তরে গমন করা তাহার সাধ ছিল না । সম্ভবতঃ যুদ্ধের শেষে প্রতাপ দুর্গমধ্যে আশ্রয় লইলে, মণিসিংহ দক্ষিণপশ্চিম ভাগ হইতে তাহ ভেদ করিধার চেষ্টাই করিয়া থাকিবেন।