পাতা:প্রতাপাদিত্য-নিখিল নাথ রায়.djvu/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○bア বনরাজি প্রগাঢ়তম অরণ্যে পরিণত হইয়াছে। নিয়ে এই দুই কারণের যথাসাধ্য আলোচনা করা যাইতেছে। অতলস্পর্শ বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী হওয়ায় সুন্দরবন অনেকবার জলপ্লাবনে বিধৌত হইয়াছে, এবং সঙ্গে সঙ্গে ভূমিকম্প ইহার বক্ষে নানাপ্রকার অত্যাচার করিয়াছে। ঐতিহাসিক কালে যে সমস্ত জলপ্লাবনের উল্লেখ দৃষ্ট হয়, তন্মধ্যে ১৫৮৫ খৃষ্টাব্দের জলপ্লাবনই প্রথম । ইহাতে বাকল বা বরিশাল সলিলগর্ভে নিমগ্ন হইয়াছিল, প্রায় দুই লক্ষ লোক এই জলপ্লাবনে দিগ্বিদিক্‌ ভাসিয়া যায়। আইন আকবরীতে ইহার উল্লেখ আছে। ১৬৮০ খৃষ্টাবে দ্বিতীয় জলপ্লাবন সংঘটিত হয় । সুন্দরবনের পশ্চিম ভাগ বিশেষতঃ সাগরদ্বীপ এই জলপ্লাবনে বিধৌত হইয়া যায়। প্রায় ৬০ হাজার লোক ইহাতে প্রাণত্যাগ করে । * সৰ্ব্বাপেক্ষ ১৭৩৭ খৃষ্টাব্দে এক ভীষণ জলপ্লাবন ও ভূমিকম্প উপস্থিত হইয়া সুন্দরবনকে ছিন্ন ভিন্ন করিয়া ফেলে, কলিকাতা পৰ্য্যন্ত তাঙ্গ ধাবিত হইয়াছিল । এই জলপ্লাবন ও ভূমিকম্পে নবগঠিত কলিকাতা একেবারে শ্ৰীহীন হইয়া পড়ে। তাহার পর বঙ্গভূমিতে অনেকবার জলপ্লাবন ও ভূমিকম্প উপস্থিত হইয়াছিল। ১৭৫০ বা ৬০ খৃষ্টাব্দে একটি ভীষণ ভূমিকম্প উপস্থিত হয়। তাহাতে সুন্দরবনের অনেক পরিবৰ্ত্তন ঘটে। ১৮৪২ ও ৫২ খৃষ্টাব্দের ভূমিকম্প ইহাকে নানাপ্রকারে পরিবৰ্ত্তিত করে। বর্তমান সময় পর্যন্তও জলপ্লাবন ও ভূমিকম্পের বিরাম নাই। এই দুই প্রাকৃতিক বিপ্লবে সুন্দরবনে যে নানাপ্রকার পরিবর্তন সাধিত হইয়াছে, তাহ অনায়াসে বুঝিতে পারা যায় এবং ইহার অধি জলপ্লাবন ও ভূমিকম্প ।

  • কাহারও কাহারও মতে ১৬৮৮ খৃষ্টকে এক জলপ্লাবন হইয়াছিল। ১৬৮• ও ৮৮য় জলপ্লাবন এক কি পৃথক তাহ বলা যায় না।