বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবন্ধ পুস্তক-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতবর্ষের স্বাধীনতা এবং পরাধীনতা। ১১৯ ভিন্ন জাতীয় রাজার অধীন রাজ্যকেও স্বতন্ত্র ও স্বাধীন বলা যাইতে পারে । ২। স্বতন্ত্রতা ও স্বাধীনতা, পরতন্ত্রত ও পরাধীনতা, ইহার আমরা ভিন্ন ভিন্ন পারিভাষিক অর্থ নির্দেশ করিয়াছি। বিদেশনিবালী রাজাধিকৃত রাজ্য পরতন্ত্র । যেখানে ভিন্ন জাতির প্রাধান্য, সেই রাজ্য পরাধীন। অতএব কোন রাজ্য পরতন্ত্র অথচ পরাধীন নহে। কোন রাজ্য স্বতন্ত্র অথচ স্বাধীন নছে। কোন রাজ্য পরতন্ত্র এবং পরাধীন। ৩। কিন্তু তুলনার উদ্দেশ্য উৎকর্ষপকর্ষ। যে রাজ্যে লোক সুখী তাহাই উৎকৃষ্ট, যে রাজ্যে লোক দুঃখী তাঁহাই অপ. কৃষ্ট। স্বাতন্ত্র্যে ও স্বাধীনতায় প্রাচীন ভারতে প্রজা কি পরিমাণে স্বর্থী এবং পারতন্ত্র্যে ও পরাধীনতায় আধুনিক ভারতে প্রজা কি পরিমাণে দুঃখী তাহাই বিবেচ্য। ৪। প্রথমতঃ স্বাতন্ত্র্য ও পারতন্ত্র্য। ইহার অন্তর্গত দুইটি তত্ত্ব। প্রথম, রাজা বিদেশস্থিত বলিয়া ভারতবর্ষের সুশাসনের বিস্তু হইতেছে কি না? স্বদেশের মঙ্গলার্থ শাসনকর্তৃগণ এদেশের অমঙ্গল ঘটাইয়া থাকেন কি না ? স্বীকার করিতে হইবে যে তত্তৎকারণে সুশাসনের বিঘ্ন ঘটিতেছে বটে এবং ভারতবর্ষে অমঙ্গল ঘটিতেছে বটে। কিন্তু রাজার চরিত্র দোষে যে সকল অনিষ্ট ঘটিত, আধুনিক ভারতবর্ষে তাহ ঘটে না। অতএব প্রাচীন বা আধুনিক ভারতবর্ষে এ সম্বন্ধে বিশেষ তারতম্য লক্ষিত হয় না। ৫। দ্বিতীয়তঃ স্বাধীনতা ও পরাধীনতা। আধুনিক ভারতবর্ষ প্রভৃগণপীড়িত বটে, কিন্তু প্রাচীন ভারতও বড় ব্রাহ্মণপীড়িত ছিল। সে বিষয়ে বড় ইতরবিশেষ নাই। তবে, ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয়ের একটু সুখ ছিল।