চুটকি ܬܠܬ তথাস্তু। শাস্ত্ৰীমহাশয়ের বর্ণিত সংস্কৃত চটকির দটি-একটি নমনার সাহায্যেই দেখানো যেতে পারে যে, আৰ্য যাগেও চুটকি কাব্যাচাৰ্যদিগের নিকট অতি উপাদেয়। ও মহাহী কস্তু বলেই প্ৰতিপন্ন হত। ভাতৃ হারির শতক-তিনটি সকলের নিকটই সপরিচিত, এবং গাথাসািপ্তশতীও বাংলাদেশে একেবারে অপরিচিত নয়। ভাতৃ হরি ভবভূতির পবিবতী কবি, কেননা জনরব এই যে তিনি কালিদাসের ভ্রাতা, এবং ইতিহাসের অভাবে কিংবদন্তীই প্রামাণিক। সে যাই হোক, গাথাসািপ্তশতী যে কালিদাসের জন্মের অন্তত দ-তিনশো বছর পর্বে সংগহীত হয়েছিল, তার ঐতিহাসিক প্রমাণ আছে। তা হলে দাঁড়াল এই যে, আগে আসে চটকি তার পর আসে মহাকাব্য এবং মহানাটক। অভিব্যক্তির নৈসৰ্গিক নিয়মই এই যে, এ জগতে সব জিনিসই ছোটো থেকে ক্ৰমে বড়ো হয়। সাহিত্যও ঐ একই নিয়মের অধীন। তার পর পাবোেন্ত শতকত্রেয় এবং পাবোেন্ত সন্তশতী যখনকার তখনকারই নয়, চিরদিনকারই। এ মত আমার নয়, বাণভট্টের। গােথাসপাতশতী শােধ চুটকি নয়, একেবারে প্রাকৃত-চটকি, তথাপি শ্রীহর্ষচরিত্যকারের মতে অবিনাশিনমগ্ৰাম্যমকবোৎসাতবাহনঃ। বিশদ্ধজাতিভিঃ কোশং রসুৈরিব সভাযিতৈঃ। তার পর ভর্তৃহরি যে এক-ন'র পান্না, এক-নীর চুনি এবং এক-নার নীলা, এই তিন-ন'র রত্নমালা সরস্বতীর কন্ঠে পরিয়ে গেছেন, তার প্রতি রত্নটি যে বিশদ্ধজাতীয় এবং অবিনাশী, তার আর সন্দেহ নেই। যাবচন্দ্ৰদিবাকর এই তিন শত বণোক্তজবল শেলাক সরস্বতীর মন্দির অহনিশি আলোকিত করে রাখবে। আসল কথা, চুটকি যদি হেয়া হয়, তা হলে কাব্যের চটকিত্ব তার আকারের উপব। নয়, তার প্রকারের অথবা বিকারের উপর নিভাির করে, নচেৎ সমগ্র সংস্কৃত কাব্যকে চটকি বলতে হয়। কেননা সংস্কৃত ভাষায় চার ছত্রের বেশি কবিতা নেই, কাব্যেও নয়। নাটকেও নয়। শােধ কাব্য কেন, হাতে-বহরে বেদ ও চটকির অন্তর্ভূত হয়ে পড়ে। শাস্ত্ৰীমহাশয় বলেন যে, বাঙালি ব্ৰাহ্মণ বদ্ধিমান বলে বেদাভ্যাস করেন। না। কণীবোধের জন্য যতটকু বেদ দরকার, ততটকুই এ দেশে ব্রাহ্মণসন্তানের করায়ত্ত । অথচ বাঙালি বেদপাঠ না করেও এ কথা জানে যে, ঋক হচেছ ছোটাে কবিতা এবং সাম গান। সতরাং আমরা যখন ছোটাে কবিতা ও “গান রচনা করি, তখন আমরা ভারতবর্ষের কাব্যরচনার সনাতন রীতিই অনসরণ করি। শাস্ত্ৰীমহাশয় মাখে যাই বলন, কাজে তিনি চটকিরই পক্ষপাতী। তিনি আজীবন চুটকিতেই গলা সোধেছেন, চুটকিতেই হাত তৈরি করেছেন, সতরাং কি লেখায়, কি বস্ততায় আমরা তাঁর এই অভ্যস্ত বিদ্যারই পরিচয় পাই। তিনি বাঙালির যে বিংশপর্ব মহাগৌরব রচনা করেছেন তা ঐতিহাসিক চটকি বই আর কছাই নয়, অন্তত সে রচনাকে শ্রীযক্ত যদ্যনাথ সরকার মহাশয় অন্য-কোনো নামে অভিহিত করবেন না। এ কথা নিশ্চিত যে, তিনি সরকার মহাশয়ের প্রদর্শিত পথ অনসরণ করেন নি, সম্পভবত এই বিশ্ববাসে যে, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনসারে আবিস্কৃত সত্য বাঙালির