পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

NGk Vy প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ এবং ইউরোপে বৰ্তমানে আছে শািন্ধ সোশ্যাল কনশাসনেস। আমাদের দেশেব শাস্ত্র মন্তকণ্ঠে এর প্রতিবাদ করছে। যাকে আমরা মোক্ষশাস্ত্র বলি, তা কসমিক কনশাসনেস হতে উদ্ভূত, আর যাকে আমরা ধৰ্মশাস্ত্র বলি, তা সোশ্যাল কনশাসনেস হতে উদ্ভূত। জ্ঞানমােগা ও কম মােগ সেকালে ছিল ঠিক উলটাে উলটাে পথ। ব্রহ্মজিজ্ঞাসার সঙ্গে কমজিজ্ঞাসার যে কি প্রভেদ, তা যিনি বেদান্তের দ্য-পাতা উলটেছেন তিনিই জানেন। এ দই যে বিভিন্ন শােধ, তাই নয়, এ উভয়ের ভিতর পন্ট বিরোধ ছিল। কম যখন ব্রুিয়াকলাপে পরিণত হয় তখন জ্ঞানকান্ড তার প্রতিবাদ করতে বাধ্য, আর ধাম যখন কম হীন জ্ঞানে পরিণত হয় তখন কমকান্ড তার প্রতিবাদ করতে বাধ্য হয়। জ্ঞানকমের সমন্বয় করবার জন্য ভারতবষে যাগে যাগে বহ মহাপরিষের আবিভােব হয়েছে, যাঁদের কাছে। এ সত্য প্রত্যক্ষ ছিল যে, কম হীন জ্ঞান পণ্ডগ এবং জ্ঞানহীন কম অন্ধ। রামমোহন রায় এদেরই বংশধর, এদের পাঁচজনেরই একজন। তিনি যে জ্ঞানকমের সমন্বয় করতে ব্ৰতী হয়েছিলেন তার প্রকৃষ্ণটি প্রমাণ এই, সেকালে তাঁর বিরদ্ধে প্রধান অভিযোগ ছিল যে, তিনি গহী হয়েও ব্ৰহ্মজ্ঞানী হবার ভান করতেন, এক কথায় তিনি ছিলেন একজন ‘ভান্তজ্ঞানী’। এই ‘ভান্ত’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে গৌণ, অপ্রধান ইত্যাদি। এই বিশেষণে বিশেষিত হতে রামমোহন রায় কখনোই আপত্তি করেন নি। তিনি মক্ত কণ্ঠে বলেছেন যে, তিনি যে ব্রহ্মের স্বরপ জানেন, এমন সািপধ তিনি কখনোই, রাখেন নি। তবে গহনীর পক্ষে যে বাহ্যিক ব্রুিয়াকলাপই একমাত্র সেব্য ধৰ্ম এবং গহন্থের পক্ষে যে ব্রহ্মনিষ্ঠ হওয়া অসম্পভব, এ কথা যেমন ন্যায়বিরুদ্ধে, তেমনি অশাস্ত্রীয়। এ কথার উত্তরে ধম সিংস্থাপনাকাঙক্ষীরা যোগব্যাশিঠের একটি বচন তাঁর গায়ে ছাড়ে মেরেছিলেন। সে বচনটি হচ্ছে এই— সংসার বিষয়াসক্তং ব্ৰহ্মজ্ঞোহসমীতিবাদিনমা। কমব্রিহ্মো,ভয়ভ্রস্টং তং ত্যজেদন্ত্যজং যথা ৷ অর্থাৎ যে ব্যক্তি সংসারস্যুখে আসন্ত হইয়া আমি ব্ৰহ্মজ্ঞানী ইহা কহে, সে কম-ব্ৰহ্ম উভয় ভ্ৰহ্মট, অতএব অগত্যজের ন্যায় ত্যাজ্য হয়। L KBBG BDDDD D BDBS যোগবশিষ্ঠে ভান্তজ্ঞানীর বিষয়ে যাহা লিখিয়াছেন, তাহা যথাৰ্থ বটে। এ প্রসঙ্গ উথাপন করবার উদ্দেশ্য হচ্ছে, এই দেখিয়ে দেওয়া যে, কম ও ব্ৰহ্ম -জ্ঞানের একসঙ্গে চৰ্চা করা যেতে পারে কি না, এইটিই ছিল সে যাগের আসল বিবাদস্থল। এ বিবাদ আমরা আজ করি নে, কেননা দেশসদ্ধ লোক এখন গীতাপন্থী; এবং আপনারা সকলেই জানেন যে, লোকের ধারণা যে, গীতায় শােধ জ্ঞানকমের নয়, সেইসঙ্গে ভঙ্কিারও সমন্বয় করা হয়েছে। দেশসদ্ধ লোক আজ যে পথের পথিক হয়েছে, সে পথের প্রদর্শক হচ্ছেন রামমোহন রায়। সতরাং ধৰ্মমত