পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হষচরিত ܘ9ܓ যখন হর্ষ দিবাকর মিশ্রেীর আশ্রমে উপস্থিত হলেন তখন রাজ্যশ্রী চিতায় প্রবেশ করতে উদ্যত হয়েছেন। হর্ষ ও দিবাকর মিশ্র তাঁকে আত্মহত্যা থেকে নিরস্ত করলেন। রাজ্যশ্রী বৌদ্ধভিক্ষণীর ধমে দীক্ষিত হবার জন্য দিবাকর মিশ্রের কাছে প্রার্থনা জানালেন। দিবাকর মিশ্র সে প্রার্থনা মঞ্জর করতে স্বীকৃত হলেন না দর কারণে। প্রথমত রাজ্যশ্রীর বয়স অলপ, দ্বিতীয়ত সে শোকগ্রস্ত। তার পর হর্ষ যখন ভগনীকে কথা দিলেন যে, তিনিও ভ্রাতৃমরণের প্রতিশোধ নিয়ে পরে কাষায়বসন ধারণ করবেন, তখন রাজ্যশ্রী সে কাটা দিন অপেক্ষা করতে স্বীকৃত হলেন। এইখানেই বাণভট্টের হর্ষচরিত শেষ হল। NSO বাণভট্ট যে কেন এইখানেই থামলেন, তা আমাদের অবিদিত, এবং তা জানিবারও কোনো উপায় নেই। এ ক্ষেত্রে আমরা শােধ নানারপ অনমান করতে পারি, কিন্তু সে-সব অনমানের হর্ষচরিতে কোনো অবসরও নেই, সার্থকতাও নেই। তবে যে কারণেই হোক, তিনি যে আট অধ্যায়কে অল্টাদশ করেন নি, এ আমাদের মহা সৌভাগ্য। কারণ, ও-ধরনের লেখা এর বেশি আর পড়া অসাধ্য। ইংরেজিতে বলে life is short ; সতরাং আর্ট যদি অতি লম্বা হয় তো এক জীবনে তার চর্চা ক’রে ९ठेा याञ्च •ा । সে যাই হোক, বাণভট্ট হিস্টরি লেখেন নি, লিখেছেন হষের বায়োগ্রাফি। জীবনচরিত লেখবার আর্ট একরকম portrait paintingএর আর্ট। এ আর্টের বিষয় বাহ্য ঘটনা নয়। এর একমাত্র বিষয় হচ্ছে একটি মানষি। মানষের বাইরের চাইতে অন্তরই জীবনচরিত-লেখকের মনকে বেশি টানে। ফলে এর থেকে সেকালের রাজারাজড়াদের ইতিহাস উদ্ধার করা অসম্ভব। হষ যে দিগ বিজয় করেছিলেন তার প্রমাণ তিনি ‘সকল উত্তরাপথেশবির’ হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর দিগ বিজয়ের বিবরণ হর্ষচরিতে নেই, হিউয়েন সাংএর ভ্ৰমণবাত্তান্তেও নেই। হর্ষচরিত থেকে আমরা এই মাত্র জানতে পাই যে, প্রভাকরবর্ধন লাট সিন্ধ গান্ধার ও মালবদেশের রাজাদের শত্র ছিলেন এবং তাঁর মন্ত্যুর পরেই মালবিরাজ কান্যকুব্জ আক্রমণ ক’রে গ্রহবর্মকে বধ করেন। কিন্তু এ মালবরাজ যে কে, হৰ্ষচরিতে তাঁর নাম নেই। ভন্ডি বলেছেন গপতনাম্পনা, এর বেশি কিছ নয়। রাধাকুমদাবাব, প্রমাণ পেয়েছেন, এ গাতে হচেছ দেবগতে, এবং তিনি ছিলেন হষের সহচরদ্বয় মাধবগপত ও কুমারগাস্তের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা। রাজ্যবর্ধন একে পরাভূত ক'রে ক্যান্যকুব্জরাজ্য উদ্ধার করেন, এবং হয এই ভগনীপতির সিংহাসন অধিকার করেন। SS এখন, এই ভাঁদড নামক ব্যক্তিটি কে ? তিনি যে হর্ষবর্ধনের প্রধান সেনাপতি ও মন্ত্রী ছিলেন, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। রাজ্যবর্ধনের মাতুর পর যখন অপরাপর