পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গভাষা বনাম বাবা-বাংলা ওরফে সাধভাষা RW O একমাত্র সেই ভাষা অবলম্বন করেই আমরা সাহিত্যকে সজীব করে তুলতে পারব। যেমন একটি প্রদীপ থেকে অপর-একটি প্ৰদীপ ধরাতে হলে পরস্পরের সম্পৰ্শ ব্যতিরেকে সে উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয় না, তেমনি লেখার ভাষাতেও প্রাণ সঞ্চার করতে হলে মাখের ভাষার সম্পর্ক ব্যতীত অন্য কোনো উপায়ে সে উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয় না; আমি সংস্কৃত শব্দের ব্যবহারের বিরোধী নই, শািন্ধ নন। অর্থে, অধিক অর্থে কিংবা অনথে বাক্যপ্রয়োগের বিরোধী। আয়বেদ-মতে ওরােপ বাক্যপ্রয়োগ একটা রোগবিশেষ, এবং চরকসংহিতায় ও-রোগের নাম বাক্যদোষ। পাছে কেউ মনে করেন যে, আমি এই কথাটা নিয়ে একটা বাড়াবাড়ি করছি, সেই কারণে এক শত বৎসর পাবে “অভিনব ষািবক সাহেবজাতের শিক্ষাৰ্থে” মহত্যুঞ্জয় বিদ্যালংকার যে উপদেশ লিপিবদ্ধ করে গেছেন, সেটি এখানে উদ্ধত করে দিচ্ছি শাস্ত্রে বাক্যকে গো শব্দে যে কহিয়াছেন তাহার কারণ এই ভাষা যদি সম্যক রাপে প্রয়োগ করা যায়। তবে স্বয়ং কামদঘা ধেন হন, যদি দােন্টরপে প্রয়োগ করা যায়। তবে সেই দািণ্টভাষা সন্নিষ্কণ্ঠগোত্ব ধমকে সর্বপ্রয়োগকতাকে অপণ করিয়া সর্ববক্তাকে গোরাপে পশিডতেরাদের নিকটে বিখ্যাত করেন। . . . আর বাক্য কহা বড় কঠিন, সকলহইতে কহা যায় না কেননা কেহ বাক্যেতে হাতি পায়, কেহ বা বাক্যেতে হাতির পায়। অতএব বাক্যেতে অত্যািলপ দোষও কোনপ্রকারে উপেক্ষণীয় নহে, কেননা যদ্যপি অতিবড় সন্দেরও শরীর হয়। তথাপি যৎকিঞ্চিৎ এক শিবত্র রোগ দোষেতে নিন্দনীয় হয়।।১ বিদ্যালংকার মহাশয়ের মতে “বাক্য কহা বড় কঠিন”। কহার চাইতে লেখা যে অনেক বেশি কঠিন, এ সত্য বোধ হয় ‘অভিনব যবেক' বগুগলেখক ছাড়া আর কেউ অস্বীকার করবেন না। Art এবং artlessness-এর মধ্যে আসমান-জমীন ব্যবধান আছে, লিখিত এবং কথিত ভাষার মধ্যেও সেই ব্যবধান থাকা আবশ্যক। কিন্তু সে পার্থক্য ভাষাগত নয়, সন্টাইলগত। লিখিত ভাষার কথাগলি শািন্ধ, সনির্বাচিত এবং সবিন্যস্ত হওয়া চাই, এবং রচনা সংক্ষিপ্ত ও সংহত হওয়া চাই। লেখায় কথা ওলটানো চলে না, বদলানো চলে না, পািনরক্তি চলে না, এবং এলোমেলো ভাবে সাজানো চলে না। ঢাকা রিভিউ-এর সম্পাদক মহাশয়ের মতে যে ভাষা প্রশস্ত, সে ভাষায় মাখের ভাষার যা-যা দোষ সে-সব পণ্যমাত্রায় দেখা দেয়, কেবলমাত্র আলাপের ভাষার যে-সকল গণ আছে — অর্থাৎ সরলতা, গতি ও প্রাণ— সেই গণগলিই তাতে নেই। কোনো দরিদ্র লোকের যদি কোনো ধনী লোকের সহিত দরসম্পর্কও থাকে, তা হলে প্রায়ই দেখতে পাওয়া যায় যে, সে গরিব বেচারা সেই দরসম্পর্ককে অতি ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তাতে পরিণত করতে চেন্টা করে। কিন্তু সে চেস্টার ফল কিরাপ হয়ে থাকে তা তো সকলেরই নিকট প্রত্যক্ষ। আমরা পাঁচজনে মিলে আমাদের মাতৃভাষার বংশমর্যাদা বাড়াবার জন্যই সংস্কৃত ভাষার আশ্রয় গ্রহণ করতে উৎসক হয়েছি। তার ফলে শািন্ধ আমাদের ভাষায় সম্ববীয় মযাদা রক্ষা হচ্ছে না। সাধভাষার লেখকদের তাই, দেখতে পাওয়া যায় যে, পদে পদে বিপদ ঘটে থাকে। আমার বিশ্ববাস যে, আমরা যদি সংস্কৃত ভাষার দ্বারস্থ না হয়ে ঘরের ভাষার উপরই নিভাির করি, তা হলে আমাদের লেখার চাল স্বচ্ছন্দ হবে, এবং আমাদের ঘরের লোকের se es i sa siiski sps. ১ প্ৰবোধচলিদুকা।