পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাধভাষা বনাম চলিত ভাষা NRA A ঐরাপ হওয়াতে, ফরাসি সাহিত্যের যা বিশেষ গণ, বঙ্গ সাহিত্যেরও সেই গণ থাকা সম্ভব এবং উচিত। সে গণ পাবোেন্ত লেখকের মতে হচ্ছে এই— French literature is absolutely homogeneous. The genius of the French language, descended from its single stock has triumphed most-in simplicity, in unity, in clarity, and in restraint. সতরাং জোর করে যদি আমরা বাংলা ভাষায় এমন-সব আরবি কিংবা পারসি শব্দ ঢোকাতে চেন্টা করি, যা ইতিপবে আমাদের ভাষার অঙ্গীভূত হয়ে যায় নি, তা হলে ঐরােপ উপায়ে আমরা বঙ্গ ভাষাকে শােধ বিকৃত করে ফেলব। সম্প্রতি বাংলা ভাষার উপর ঐরােপ জবরদস্তি করবার প্রস্তাব হয়েছে বলে এ বিষয়ে আমি বাঙালিমাত্রকেই সতক থাকতে অনরোধ করি। আগন্তুক ঢাকাইউনিভাসিটির রিপোটে দেখতে পাই, একটা ঢাকা-চাপা দিয়ে ঐ প্রস্তাবই করা হয়েছে। স্কুলপাঠ্য গ্রন্থাবলীর উপর আর্য আক্রমণের বিষয়ে আমি অনেকরপে ঠাট্টাবিদ্রপ করেছি; কিন্তু ঐ স্কুলপাঠ্য গ্রন্থাবলীর উপর এই মসলমান আক্রমণের প্রস্তাবটি আরো ভয়ংকর, কেননা বাংলা ভাষার তািজ শব্দকে রূপান্তরিত করে তৎসম করলেও বাংলা ভাষার ধর্ম নষ্ট হয় না, কিন্তু অপরিচিত এবং অগ্রাহ্য বিদেশী শব্দকে আমাদের সাহিত্যে জোর করে ঢাকিয়ে দেওয়াতে তার বিশেষত্ব নন্ট করে তাকে কদৰ্য এবং বিকৃত করে ফেলা হয়। এই উভয়সংকট হতে উদ্ধার পাবার একটি খব সহজ উপায় আছে। বাংলা ভাষা হতে বাংলা শব্দসকল বহিস্কৃত করে দিয়ে অধোক সংস্কৃত এবং অর্ধেক আরবি-পারসি শব্দ দিয়ে ইস্কুলপাঠ্য গ্রন্থ রচনা করলে, দ, কল রক্ষে হয়! চৈত্র ১৩১৯